প্রথমবার বিদেশে যাওয়ার যেমন আনন্দ, উত্তেজনা থাকে তুঙ্গে, তেমনি আন্তর্জাতিক ভ্রমণের সঙ্গে আসে নানা দুশ্চিন্তাও। পাসপোর্ট, ভিসা, অন্য দেশের অর্থব্যবস্থা থেকে শুরু করে স্থানীয় আইনকানুন, সবই ভ্রমণকারীদের জন্য চ্যালেঞ্জ বটে! তবে যতই প্রথমবার বিদেশ ভ্রমণে ভয় লাগুক, সঠিক পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি থাকলে তা হয়ে উঠবে আজীবনের সেরা অভিজ্ঞতা। সেক্ষেত্রে নিশ্চিন্তে বিদেশযাত্রার জন্য কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি।
১. পাসপোর্ট ও ভিসা ভালভাবে যাচাই করুনঃ অনেক দেশের নিয়ম হল পাসপোর্ট কমপক্ষে ছয় মাসের জন্য বৈধ হতে হবে। ভিসার ক্ষেত্রেও সময়মতো ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ অনেক দেশে ভিসা পেতে দেরি হয়। নিরাপত্তার জন্য পাসপোর্ট ও ভিসার একাধিক কপি (ডিজিটাল ও ফিজিক্যাল) রাখুন। প্রয়োজনে ইমেলেও সংরক্ষণ করে রাখুন।
আরও পড়ুনঃ শুধু ক্লান্তি-দুর্বলতা নয়, শরীরে আয়রনের ঘাটতি জানান দেয় ৫ অচেনা লক্ষণও! সতর্ক না হলেই বিপদ
২. অর্থব্যবস্থা সঠিকভাবে সাজানঃ শুধু কার্ডের উপর নির্ভর করা উচিত নয়। আপনি যে বিদেশে যাচ্ছেন তা ব্যাঙ্ককে জানিয়ে রাখুন, নয়তো হঠাৎ করে লেনদেন আটকে যেতে পারে। জরুরি প্রয়োজনে স্থানীয় মুদ্রা হাতে রাখুন। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড অথবা প্রিপেইড ফরেক্স কার্ড সঙ্গে রাখলে ভ্রমণ আরও সহজ হবে।
৩. ট্রাভেল ইনস্যুরেন্স নিনঃ মনে রাখবেন, ট্রাভেল বীমা বিলাসিতা নয়, প্রয়োজন। যাত্রা বাতিল, লাগেজ হারানো, হঠাৎ অসুস্থ হওয়া কিংবা দেরি হওয়া, যে কোনও সমস্যায় ট্রাভেল ইনস্যুরেন্স ভরসা জোগায়। তাই ভ্রমণের আগে উপযুক্ত ইনস্যুরেন্স প্ল্যান বেছে নিন। শুধু সস্তা প্ল্যানের জন্য যাবেন না, বরং কভারেজ ও সুবিধা যাচাই করুন।

৪. স্মার্ট প্যাকিং করুনঃ বিদেশ ভ্রমণে ভারী ব্যাগের জন্য ঝক্কি পোহাতে হতে পারে। প্রয়োজনীয় এবং বহুমুখী ব্যবহারযোগ্য পোশাক নিন। এয়ারলাইন্সের ওজনসীমা সম্পর্কে সচেতন থাকুন। গুরুত্বপূর্ণ জিনিস যেমন- ওষুধ, চার্জার, গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ক্যাবিন ব্যাগে রাখুন, যাতে ব্যাগ হারালেও সমস্যা না হয়।
৫. স্থানীয় আচরণবিধি সম্পর্কে জানুনঃ প্রতিটি দেশের আলাদা সংস্কৃতি ও সামাজিক নিয়ম রয়েছে। মন্দির বা ধর্মীয় স্থানে কীভাবে পোশাক পরবেন, কোথায় ছবি তুলবেন বা কোথায় নয়—এসব আগে জেনে নিন। এমনকী "হ্যালো", "ধন্যবাদ" বা "সাহায্য করুন"-এর মতো কয়েকটি স্থানীয় শব্দ শিখে নিলে যোগাযোগ সহজ হবে।
৬. যোগাযোগে থাকুনঃ ফোনে যোগাযোগদে থাকলেও তবে খরচের বিষয়ে সতর্ক হন। আন্তর্জাতিক রোমিং চার্জ অনেক বেশি। তাই সম্ভব হলে স্থানীয় সিম কার্ড কিনুন অথবা আপনার টেলিকম কোম্পানির বিশেষ রোমিং প্যাক নিন। যাত্রার আগে অফলাইন ম্যাপ ডাউনলোড করে রাখুন, যাতে ইন্টারনেট না থাকলেও রাস্তা খুঁজে নিতে পারেন।
৭. সব ডকুমেন্ট নিরাপদে রাখুনঃ বিমানবন্দর বা হোটেলে যে কোনও সময় ডকুমেন্ট দেখাতে হতে পারে। তাই এগুলো এক জায়গায় গোছানো রাখুন। একটি ট্রাভেল ওয়ালেট ব্যবহার করতে পারেন। ডিজিটাল কপিগুলো ক্লাউডে সংরক্ষণ করুন এবং নিরাপত্তার জন্য পাসওয়ার্ড দিন।
৮. খুব বেশি নিয়মের পরিকল্পনা নয়ঃ ভ্রমণের প্রতিটি মুহূর্তকে সূচি দিয়ে বেঁধে ফেললে আনন্দ কমে যায়। প্রতিদিন কয়েকটি মূল জায়গা নির্ধারণ করুন। বাকিটা সময় স্থানীয় রাস্তার শিল্পী দেখার, ছোট্ট ক্যাফেতে সময় কাটানোর কিংবা নতুন কিছু আবিষ্কার করার জন্য ফাঁকা রাখুন।
