আজকাল ওয়েবডেস্ক: পরকীয়া মানেই কি অন্য নারী? এই চিরাচরিত ধারণাকে একেবারে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিল মালয়েশিয়ার এক যুবকের স্বীকারোক্তি। স্ত্রী বা প্রেমিকা নয়, তিনি নাকি সম্পর্কে জড়িয়েছেন নিজের শ্বশুরের সঙ্গে! সোশ্যাল মিডিয়ায় এক বেনামি পোস্টে ওই যুবকের বিস্ফোরক বয়ান ঘিরে এখন তোলপাড় নেটদুনিয়া। একদিকে অপরাধবোধ, অন্যদিকে এক নিষিদ্ধ আনন্দ- এই দুইয়ের যাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে মুক্তির পথ খুঁজছেন তিনি।

 

সম্প্রতি মালয়েশিয়ার জনপ্রিয় ফেসবুক পেজ ‘কিসাহ রুমাহ টাঙ্গা’-তে এক ব্যক্তির বেনামি পোস্ট ভাইরাল হয়েছে। সেখানে তিনি নিজের জীবনের এক গোপন অধ্যায়ের কথা তুলে ধরেছেন, যা পড়ে স্তম্ভিত নেটিজেনরা। ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, তাঁর স্ত্রী সদ্য তাঁদের প্রথম সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। সন্তান জন্মের পর বিশ্রামের জন্য তিনি বাপের বাড়িতে ছিলেন। এই সময়েই ঘটে যায় অঘটন।

যেদিন ঘটনার সূত্রপাত, সেদিন তাঁর শ্বশুরমশাই তাঁকে একটি বাড়ি পরিষ্কার করতে সাহায্য করার জন্য ডেকে পাঠান। নতুন ভাড়াটে আসার আগে বাড়িটি পরিষ্কার করার প্রয়োজন ছিল। কাজ করতে করতে গরমে ও ঘামে ওই ব্যক্তি নিজের শার্ট খুলে ফেলেন। তাঁর খালি গা দেখে শ্বশুরমশাই আকৃষ্ট হন। পোস্টটিতে ওই ব্যক্তি লেখেন, “উনি আমার শরীরে হাত দিতে শুরু করেন। আর তার পরেই সেই গোপন কাজের সূচনা হয়।”

তিনি আরও জানান যে প্রথমে তিনি শ্বশুরকে আটকানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাঁর কথায়, “স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা থাকায় আমি প্রায় পাঁচ মাস শারীরিক সম্পর্ক থেকে দূরে ছিলাম, আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন আমি কী বলতে চাইছি।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই যুবকের বক্তব্য, সাময়িক দুর্বলতার কাছে হার মানেন তিনি। কিন্তু তিনিই নিজে স্বীকার করেছেন, এই ঘটনার পর তাঁদের মধ্যে আরও দু’বার, অর্থাৎ মোট তিনবার একই ঘটনা ঘটে। যুবকের দাবি, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রবীণ ওই ব্যক্তিই তাঁকে পথ দেখিয়েছেন।

এই ঘটনায় তীব্র অপরাধবোধ এবং লজ্জায় কুঁকড়ে গিয়েছিলেন তিনি। নিজের শ্বশুরকে তিনি প্রশ্নও করেন, এই ধরনের সম্পর্ক কি স্বাভাবিক? উত্তরে শ্বশুরমশাই তাঁকে আশ্বস্ত করে বলেন, “অপরাধবোধে ভোগার কিছু নেই। এটা খুবই স্বাভাবিক!”

শ্বশুরের কথায় সাময়িক স্বস্তি মিললেও যুবকের মনে ভয় ও সংশয় কাটেনি। তিনি স্বীকার করেছেন যে, ভয় এবং বিবেকের দংশনের পাশাপাশি তিনি এই সম্পর্ক উপভোগও করছেন। কিন্তু তাঁর সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা, এই ঘটনার জেরে তাঁকে সমাজের চোখে ‘এলজিবিটিকিউ’ সম্প্রদায়ের অংশ হিসেবে চিহ্নিত হতে হবে। এই উভয়সঙ্কট এবং নিষিদ্ধ সম্পর্কের চক্র থেকে কী করে বেরিয়ে আসা যায়, সেই পথ খুঁজতেই তিনি নিজের কাহিনি সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন। তাঁর এই পোস্ট ঘিরে নেটদুনিয়ায় আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এই ঘটনা একদিকে যেমন সম্পর্কের জটিলতা এবং নৈতিকতার প্রশ্ন তুলে ধরেছে, তেমনই অন্যদিকে তুলে ধরেছে আধুনিক সমাজে মানুষের মানসিক টানাপোড়েনের এক ভিন্ন চিত্র।