যৌনতাও মানুষের একটি স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। কারও কাছে ভালবাসার প্রকাশ, কারওর জন্য শারীরিক পরিতৃপ্তি। নিঃসন্দেহে শারীরিক মিলন দু’টি মানুষের সম্পর্কের রসায়নকে আরও দৃঢ় করে। যতই রাখঢাক থাকুক, সার্বিকভাবে সুস্থ জীবনের জন্যও সুখকর যৌনজীবন জরুরি। কিন্তু জানেন বিশ্বের প্রাপ্তবয়স্কদের একাংশ কখনওই যৌন সম্পর্কে জড়ান না। কেন এমন হয়? সম্প্রতি ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়ার বিশাল সংখ্যক মানুষের ওপর করা এক গবেষণায় উঠে এসেছে নেপথ্যে থাকা  আসল কারণ। 

বিজ্ঞানীরা যুক্তরাজ্যের প্রায় ৪ লক্ষ এবং অস্ট্রেলিয়ার ১৩ হাজার ৫০০ জন মানুষের তথ্য বিশ্লেষণ করেন। এই গবেষণা স্পষ্ট করে দিয়েছে, যৌন সম্পর্কহীনতা কোনও সাধারণ ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নয়। এর পেছনে রয়েছে নানা জটিল সামাজিক, জৈবিক এবং মানসিক বাস্তবতা। গবেষণায় দেখা যায়, যুক্তরাজ্যের প্রায় ১% প্রাপ্তবয়স্ক জানিয়েছেন যে তারা জীবনে কখনও যৌন সম্পর্কে জড়াননি। দেখা গেছে, যাঁরা শারীরিক মিলনে আগ্রহী নন তাঁদের অনেকেই অধিক শিক্ষিত, অন্যদের তুলনায় কম ধূমপান বা মদ্যপান করেন। তবে এদের মধ্যে অবসাদ, একাকীত্ব ও উদ্বেগের প্রবণতা অনেক বেশি।

আরও পড়ুনঃ রাতে নীরবে মৃত্যুঘন্টা বাজায় হৃদরোগ! বিছানায় শুয়ে এই সব মারাত্মক লক্ষণ অবহেলা করলেই হতে পারে হার্ট ফেলিওর

গবেষণায় উঠে এসেছে, পুরুষদের ক্ষেত্রে শরীরের শক্তি, বিশেষ করে বাহুর শক্তি, যৌন সম্পর্কহীনতার সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে। অর্থাৎ শারীরিক সক্ষমতার ঘাটতি অনেক সময় যৌন জীবনে প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়াও রয়েছে সামাজিক ও ভৌগোলিক কারণ। যেখানে মহিলার সংখ্যা কম, সেখানে পুরুষদের মধ্যে যৌন সম্পর্কহীনতার হার বেশি। যেসব এলাকায় অর্থনৈতিক বৈষম্য বেশি, সেখানেও শারীরিক সম্পর্কের অনিচ্ছা বেশি দেখা যায়।

গবেষণায় বলছে, কারও যৌন সম্পর্কে জড়ানোর ইচ্ছা বা প্রবণতার পার্থক্যের ১৪ থেকে ১৭ শতাংশ আসলে জেনেটিক বৈচিত্র্যের কারণে হয়। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যৌন সম্পর্ক কেবল শারীরিক আনন্দ বা প্রজননের বিষয় নয়। এটি মানসিক স্বাস্থ্য, সামাজিক বন্ধন এবং সার্বিকভাবে একজন মানুষের চিন্তাভাবনার সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। তাই যৌন সম্পর্কহীনতা নিয়ে শুধু সামাজিক ট্যাবু বা সমালোচনা না করে, এর পেছনের জটিল কারণগুলো যেমন মানসিক স্বাস্থ্য, সামাজিক পরিস্থিতি ও জেনেটিক প্রভাব বুঝে দেখা প্রয়োজন।