আজকাল ওয়েবডেস্ক: মশার মতো গণশত্রু পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি আছে কিনা সন্দেহ। ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গি, চিকুনগুনিয়া অজস্র রোগের বাহক মশা মানুষের চিরশত্রু। তাই মানিকতলা থেকে মিয়ামি- পৃথিবীর প্রায় সর্বত্রই সব পুরসভা মশা দমনে সদা সক্রিয়। কিন্তু যদি বলা হয় পৃথিবীতে এমন একটি জায়গা রয়েছে যেখানে মানুষ স্বেচ্ছায় কোটি কোটি মশা ছাড়ছে, তাহলে কি বিশ্বাস করবেন? বাস্তবিকই বিশ্বাস করা শক্ত বটে, কিন্তু রয়েছে, পৃথিবীতে এমন জায়গাও রয়েছে।
আরও পড়ুন: পুরুষের ওই বিশেষ লোমে কুকুরের থেকেও বেশি জীবাণু থাকে! ঠিকভাবে পরিষ্কার করবেন কীভাবে? জেনে নিন ৬ টিপস

প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ হাওয়াইতে ড্রোনে করে ব্যাগ ভর্তি মশা ছাড়া হচ্ছে জঙ্গলে। না এ কোন পাগল বৈজ্ঞানিকের কুকীর্তি নয় বরং ভেবেচিন্তে নেওয়া এক সিদ্ধান্ত। ল্যাবরেটরীতে নির্বিষকৃত এই মশাই বিলুপ্তির থেকে রক্ষা করতে পারে বহু বিরল প্রজাতির পাখিকে। হাওয়াইয়ান হানিক্রিপার নামের এক বিশেষ গান গাওয়া পাখি পাওয়া যায় হাওয়াইতে। সারা পৃথিবীতে এই একটিমাত্র অঞ্চলেই পাখিটির দেখা মেলে। বিশেষ প্রজাতির এই পাখির বেঁচে থাকার জন্য নিরক্ষীয় শীতল অরণ্য প্রয়োজন। কিন্তু পৃথিবীতে এমন অরণ্য এতই বিরল যে এই পাখি প্রায় বিলুপ্তির পথে। ইতিমধ্যেই প্রায় ৩০ টি প্রজাতি হারিয়ে গিয়েছে চিরতরে। বাকি রয়েছে আর মাত্র ১৭ টি প্রজাতি। কিন্তু সেগুলিও চরম বিপদের মুখে।
আরও পড়ুন: পুরুষের ওই বিশেষ লোমে কুকুরের থেকেও বেশি জীবাণু থাকে! ঠিকভাবে পরিষ্কার করবেন কীভাবে? জেনে নিন ৬ টিপস

বিপদের মূল কারণ মশা। মানুষের মতো এই পাখিগুলিও ম্যালেরিয়াতে আক্রান্ত হয়। জীব বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন এই বিশেষ ধরনের অ্যাভিয়ান ম্যালেরিয়া ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ছে মশার মাধ্যমে। হাওয়াই এর পর্বতসঙ্কুল নিরক্ষীয় জঙ্গলে শীতল তাপমাত্রার কারণে মশা বিশেষ ছিল না। কিন্তু বিশ্ব উষ্ণায়নের সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে সেই জঙ্গলেও মশার প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে ক্রমশ। আর সেই মশার আক্রমণ এই প্রাণ হারাচ্ছে অজস্র পাখি। তীব্র বিপদের মুখে রয়েছে এই অঞ্চলের বিখ্যাত পাখি কিউইকিউ এবং আকিকি। দ্রুত কোন পদক্ষেপ না করলে অচিরেই চিরকালের মতো পৃথিবী থেকে হারিয়ে যেতে পারে এই বিরল প্রাণীগুলি।-এভাবেই ছাড়া হচ্ছে মশা। ছবি-সংগৃহীত।

এই সমস্যা সমাধানের জন্য এক অত্যাধুনিক উপায় খুঁজে বার করেছেন বিজ্ঞানীরা। গবেষণাগারে লক্ষ লক্ষ পুরুষ মশার ভিতরে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে ব্যাকটেরিয়াম উলব্যাকিয়া নামের এক জীবাণু। পুরুষ মশার দেহে এই জীবাণু থাকলে ডিম ফুটে নতুন মশার জন্ম হয় না। বলতো ক্রমশ কমতে থাকে মশার সংখ্যা। এই তথ্য কি কাজে লাগিয়েই এখন নিয়মিত বিশেষ ধরনের ব্যাগে করে লক্ষ লক্ষ পুরুষ মশা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে হাওয়াই-এর জঙ্গলে। জুনের মাধ্যমে জঙ্গলে ফেলা এই ব্যাগগুলি বায়ো-ডিগ্রেডেবল অর্থাৎ সহজেই পরিবেশে মিশে যেতে পারে। ফলে জঙ্গলের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দেওয়া যায় পুরুষ মশাগুলিকে। বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ১০ লক্ষ পুরুষ মশা ছাড়া হচ্ছে জঙ্গলে।

আরও পড়ুন: পুরুষের ওই বিশেষ লোমে কুকুরের থেকেও বেশি জীবাণু থাকে! ঠিকভাবে পরিষ্কার করবেন কীভাবে? জেনে নিন ৬ টিপস

 বিজ্ঞানীদের আশা এই পদ্ধতি কাজ করলে খুব শীঘ্রই কমে আসবে প্রাণঘাতী মশার সংখ্যা।