অনেক দম্পতির জন্য প্রেমে পড়া এবং বিয়ে করা সহজ, কিন্তু সুখে-শান্তিতে সংসার চালানোই আসল চ্যালেঞ্জ। আপনি যদি সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে এমন কিছু বাস্তব ও সৎ পরামর্শ জানতে চান, যা আপনার বিবাহিত জীবনে ভারসাম্য আনতে সাহায্য করবে— তাহলে রইল কিছু টিপস।
রিলেশনসিপ কাউন্সেলর এবং লেখক অজয় কে পান্ডে সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন যার শিরোনাম ‘বিয়ের পর প্রথম পাঁচ বছর শ্বশুরবাড়িতে থাকবেন না। কিন্তু কেন?’
তিনি ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘সবসময় আপনার স্ত্রীর অগ্রাধিকার দিন।’
অজয়ের এই পোস্টে তিনি পরিবার, ভালবাসা এবং ব্যক্তিগত জায়গার মধ্যে সঠিক ভারসাম্য রাখার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।
তিনি সাতটি কারণ উল্লেখ করে তাঁর পরামর্শের ব্যাখ্যা দিয়েছেন
তিনি আপনার স্ত্রী, আপনার মায়ের নয়
অজয়ের কথায়, “তিনি আপনার সঙ্গে বিয়ে করেছে, আপনার বাবা-মায়ের সঙ্গে নয়। তাঁর স্বপ্ন ছিল আপনাকে ঘিরে, সবাইকে ঘিরে নয়। আপনি ডিনারে ব্যস্ত অন্যদের খুশি করতে, আর তিনি চেয়ে থাকেন আপনারর দিকে।” অর্থাৎ সংসারে প্রথম দায়িত্ব হওয়া উচিত সঙ্গীর প্রতি — পরিবারের প্রত্যাশার চেয়ে তার অনুভূতিকে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি।
আত্মবিশ্বাসই সবচেয়ে বড় উপহার
অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ বা সমালোচনা কারও আত্মবিশ্বাস নষ্ট করে দেয়। অজয় লিখেছেন, “বারবার বলা — এটা পরো না, ওটা করো না, ধীরে কথা বলো — এমনকি তার হাসিও যেন বেশি জোরে শোনা যায়! এই সবই ধীরে ধীরে মন ভেঙে দেয়।” সঙ্গীকে নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক পরিবেশ দেওয়া খুবই প্রয়োজন।
ভালবাসা যেন রুটিনে হারিয়ে না যায়
দৈনন্দিন কাজ বা পারিবারিক রীতি যেন রোম্যান্সকে ঢেকে না ফেলে। তাঁর মতে, নিয়মের কড়াকড়ি ভালবাসাকে গ্রাস করে। একসঙ্গে সময় কাটানো ভুলে যাওয়া উচিত নয়।
স্বাধীনতার দরকার
অজয়ের মতে, সম্পর্ক টিকে থাকে তখনই, যখন দু’জনই নিজের মতো বাঁচার জায়গা পায়। ভয় বা চাপ সম্পর্ককে দূরে ঠেলে দেয়।
গোপনীয়তা মানেই ঘনিষ্ঠতা
অজয়ের কথায়, “ঘরের দরজা যখন বন্ধ হয়, তখন মন খুলে যায়। সেখানে থাকে না ভয় বা বিচার, থাকে শুধু ভালবাসা।” অর্থাৎ, একান্ত সময় দম্পতির বন্ধনকে আরও গভীর করে।
একটু দূরত্বও প্রয়োজন
তিনি লিখেছেন, “অতিরিক্ত কাছাকাছি থাকলে দম বন্ধ হয়ে যায়। ভালবাসা বেড়ে ওঠে স্বাধীনতায়। প্রতিদিন যদি ‘ফ্যামিলি ডে’ হয়, তাহলে নিজেদের দিনটাই হারিয়ে যায়।”
স্বাধীনতা থেকেই আসে আসল সংযোগ
শেষে অজয় বলেন, “আলাদা থাকা শেখায় কাছাকাছি আসা। যেমন একদিন ডিনার বাদ দিয়ে পিৎজা অর্ডার, হাসাহাসি করে খাওয়া — কোনও নিয়মের বেড়াজাল নেই, শুধু থাকবেন নিজেরা।।”
অজয়ের বার্তা একটাই— সুখী দাম্পত্য মানে শুধু ভালবাসা নয়, বরং বোঝাপড়া, স্বাধীনতা আর একে অপরকে জায়গা দেওয়া।
