প্রাচীনকাল থেকে আয়ুর্বেদিক বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত রসুন। আজও হেঁশেলের এই পরিচিত আনাজকে 'সুপারফুড' হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আমিষ রান্নায় স্বাদ বাড়ানো থেকে স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া— রসুনের ভূমিকা সবেতেই অনবদ্য। রসুনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক, পটাসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়ামের মতো খনিজ। এছাড়াও ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ফোলেট, নিয়াসিন এবং থায়ামিনে ভরপুর রসুন। বহুবিধ পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ রসুন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। নিয়মিত রসুন খেকে কী কী উপকার পাবেন-


*খাদ্যতালিকায় কাঁচা রসুন যোগ করলে খাবার সহজে হজম হয় । বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি অন্ত্রের স্বাস্থ্যও রক্ষা করে।

*রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি কমায় রসুন। তাই উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তিদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই সবজি খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

*রসুন শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে এবং ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে, ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।

আরও পড়ুনঃ হেঁটেই বাড়বে আয়ু! জানেন সারা দিনে কত পা হাঁটলে অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি এড়াতে পারবেন?

*রসুন খেলে স্নায়ুর সমস্যার সামাধান মেলে। অনিদ্রার সমস্যা কাটাতেও কার্যকরী রসুন। 

*পুরুষদের যৌন ক্ষমতা বাড়াতে প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহার করা হয় রসুন। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, প্রতিদিন নিয়ম করে কাঁচা রসুন খেলে মহিলা ও পুরুষ উভয়ের যৌবন দীর্ঘস্থায়ী হয়‌।

*২০১৩ সালের একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, রসুন উচ্চ রক্তচাপ কমাতে এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যা হৃদরোগের প্রধান ঝুঁকি কমায়। এটি রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে, রক্তনালীগুলো শিথিল রাখে এবং হৃদযন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখে।

*২০১৯ সালের একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, দিন শুরু করার সময় খালি পেটে কাঁচা রসুন খেলে হজম ভাল হয়। রসুনে প্রোবায়োটিক ধরনের উপাদান থাকায় এটি ভাল ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি উদ্দীপিত করে, যা পেট ফুলে যাওয়া, হজমে সমস্যা এবং অনিয়মিত পাচনতন্ত্র থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে।

*রসুনের অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যের কারণে এটি ভিতর থেকে পিম্পল ও ব্রণ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। রক্ত সঞ্চালন ভাল হওয়ায় পুষ্টি উপাদান শরীরে আরও কার্যকরভাবে শোষিত হয়, যা ত্বকের স্বাস্থ্যকে উন্নত করে।

*রসুন খিদে নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং মেটাবলিজম বাড়ায়। রসুন চর্বি পোড়ানোর প্রক্রিয়াকে সহায়তা করতে পারে এবং মিষ্টির প্রতি আসক্তি কমাতে সাহায্য করে।

কীভাবে খেলে উপকার পাবেন- 

*সকালে খালি পেটে এক থেকে দুই কোয়া কাঁচা রসুন খান।এতে রক্তে সরাসরি পুষ্টি শোষণ হবে। এটি হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখে এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে। 
*মধুর সঙ্গে মিশিয়ে রসুন খেলে খুব ভাল কাজ হয়। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। 
*গরম জলে এক কোয়া রসুন মিশিয়ে খেতে পারেন। এটি শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে। সঙ্গে ব্লাড প্রেশার ও কোলেস্টেরলও নিয়ন্ত্রণে থাকে। 
*রসুন কখনও বেশি রান্না করে খাবেন না। বরং হালকা ভেজে কিংবা স্যালাডে মিশিয়ে খান।