আজকাল ওয়েবডেস্ক: “সব ঠিক হয়ে যাবে,” “পজিটিভ ভাব,” “এত ভেঙে পড়ার কী আছে?” আপাতদৃষ্টিতে এই ধরনের কথা ইতিবাচক মনে হতে পারে । কিন্তু মন যখন মেঘলা থাকে, তখন জোর করে হাসিখুশি থাকার এই পরামর্শই হয়ে উঠতে পারে বিষের মতো। মনোবিজ্ঞানের ভাষায় এর নামই ‘টক্সিক পজিটিভিটি’ বা বিষাক্ত ইতিবাচকতা।
কাকে বলে ‘টক্সিক পজিটিভিটি’?
অনেকেই ভাবেন ইতিবাচক থাকাই মনের স্বাভাবিক অবস্থা। কিন্তু ইতিবাচক থাকা যেমন জরুরি তেমনই জীবনের কঠিন সময়ে দুঃখ, কষ্ট বা রাগের মতো অনুভূতিও অত্যন্ত স্বাভাবিক। এই ধরনের স্বাভাবিক অনুভূতিকে চেপে রেখে শুধুমাত্র ইতিবাচক থাকার জন্য চাপ দিলে হিতে বিপরীত হতে পারে। টক্সিক পজিটিভ ব্যক্তিরা এমন আচরণ করেন, যেন মন খারাপ হওয়াটাই একটা অপরাধ। কখনও কখনও বন্ধু বা পরিজনেরা হয়ত ভাল চান বলেই এমনটা বলেন, কিন্তু এর ফল সবসময় ভাল হয় না। নিজের অনুভূতিকে প্রকাশ করতে না পেরে বা সেগুলোকে 'নেতিবাচক' বলে দাগিয়ে দেওয়ায় একাকিত্ব ও মানসিক চাপ আরও বাড়ে।
আরও পড়ুন: শুক্রাণু দান করে কত টাকা আয় হয়? ভারতে বীর্য দাতা হতে গেলে কোন কোন নিয়ম জানতে হবে?
আরও পড়ুন: ৮৫ বছর বয়সে মাধ্যমিকে বসেও ফের অকৃতকার্য! ইনিই পৃথিবীর সবচেয়ে বয়স্ক স্কুলছাত্র
বিশেষজ্ঞদের মতে, সুস্থ মনের জন্য সব ধরনের অনুভূতিকেই গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। দুঃখ পেলে কাঁদাই স্বাভাবিক, রাগ হলে তার প্রকাশও জরুরি। জোর করে ‘পজিটিভ’ থাকার মুখোশ পরলে সেই চাপা কষ্টগুলিই পরে অবসাদ বা উদ্বেগের চেহারা নেয়। তাই অযাচিত উপদেশের বোঝা না চাপিয়ে, প্রিয়জনের মন খারাপের দিনে তাঁর পাশে চুপ করে বসে থাকা অনেক বেশি জরুরি। সব অনুভূতিকে স্বীকার করার মধ্যেই লুকিয়ে আছে স্থায়ী মানসিক সুস্থতার চাবিকাঠি।
এই পরিস্থিতিতে কী করবেন?
১. কোনও অনুভূতি ফেলনা নয়: হতাশা-রাগ-আতঙ্ক এই সবই স্বাভাবিক অনুভূতি। নিজেকে জোর করে হাসাতে এই অনুভূতিগুলো চেপে রেখে সবসময় ভাল থাকার ভান করতে যাবেন না।
২. সাপোর্টিভ, বাস্তবধর্মী মানুষদের সঙ্গে থাকুন: সবসময় কেবল পজিটিভ কথা বলেন এমন মানুষ নিশ্চয়ই দরকার। কিন্তু বাস্তববাদী মানুষও কখনও কখনও জীবনে দরকার।
৩. নিজেকে সময় দিন: মন খারাপ হলে সেটা মেনে নিয়ে নিজেকে বলুন, “এটাও আমার জীবনের অংশ।” চাপ না নিয়ে নিজেকে সময় দিন সুস্থ হতে।
৪. সোশ্যাল মিডিয়ার ‘ফিল্টারড হ্যাপিনেস’ থেকে দূরে থাকুন: সবসময় হাসি, খুশি, পারফেক্ট জীবনের ছবি দেখে মনে হতে পারে সবাই কত্ত ভাল আছে কেবল আপনার জীবনটাই সমস্যায় ভরা। এই ধারণা মোটেই ঠিক নয়। এর থেকে বেরিয়ে আসুন।
৫. মনোবিদের সাহায্য নিতে দ্বিধা করবেন না: মন খারাপ লুকিয়ে রাখলে বা চেপে রাখলে সেটা পরে আরও বড় মানসিক সমস্যায় রূপ নিতে পারে। মনোবিদের পরামর্শ নেওয়ায় লজ্জার কিছু নেই।
