আজকাল ওয়েবডেস্ক: নিত্যকার দৌড়ঝাঁপ, অগোছালো জীবনযাপন, উদ্বেগ আর মোবাইলের অতিরিক্ত ব্যবহারে আজকাল ঘুম যেন বিলুপ্তপ্রায় অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। ঘুমোতে গেলেই এপাশ-ওপাশ, মনের মধ্যে তোলপাড়—ভাবনার পাহাড়ে চেপে বসে জেগে থাকা। ঠিক এই সময়েই আশার আলো দেখাল সাম্প্রতিক এক গবেষণা। গবেষকরা বলছেন, দিনে মাত্র ছ’মিনিট পাখির ডাক শুনলেই কমতে পারে উদ্বেগ, বাড়তে পারে ঘুমের গুণমানও। আজও প্রকৃতির বুকে লুকিয়ে আছে মনের শান্তির ওষুধ। হয়তো আপনি জানতেও পারছেন না—আপনার গভীর ঘুম আসছে ঠিক ওই পাখির ডাকের সুরেই।
কী বলছে গবেষণা?
সম্প্রতি জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক মানব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের গবেষকরা ২৯৫ জন অংশগ্রহণকারীর উপর এক পরীক্ষা চালান। তাঁদের মধ্যে একাংশকে দিনে মাত্র ছ’মিনিট পাখির ডাক শোনানো হয়, অপর অংশকে ট্র্যাফিকের কোলাহল। দেখা যায়, পাখির ডাক যাঁরা শুনেছেন, তাঁদের মানসিক অস্থিরতা অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে, মন হয়েছে শান্ত। ফলে ঘুমও হয়েছে আরও ভাল ও দীর্ঘস্থায়ী।
কেন পাখির ডাক?
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রকৃতির ধ্বনি—বিশেষত পাখির সুর—মনকে প্রশান্ত করে। এটি আমাদের মস্তিষ্কে এমন কিছু রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটায়, যার ফলে মানসিক চাপ কমে, মন হালকা হয়। পাখির ডাক আমাদের স্নায়ুতন্ত্রে এক ধরনের শিথিলতা আনে। এতে কর্টিসল হরমোনের মাত্রা কমে যায়ডোপামিন এবং সেরেটোনিন নামের দুইটি ফিলগুড হরমোন ক্ষরিত হয় মস্তিষ্কে। এই অবস্থায় সহজে ঘুম আসে, আর ঘুমও হয় গভীর।
কী ভাবে শোনা যেতে পারে?
রাতের দিকে, শোবার আগে কিছু সময় ধরে পাখির ডাক শুনুন। প্রকৃতির কোলে, যেমন কোনও পার্কে বা জানলার ধারে বসে মনোযোগ দিয়ে শুনলে উপকার বেশি। দিনে নির্দিষ্ট সময় ধরে নিয়মিত শোনা আরও কার্যকর। তবে চাইলে মোবাইলে রেকর্ড করা পাখির ডাকও শুনতে পারেন।
সতর্কবার্তা
তবে, দীর্ঘদিন ঘুমের সমস্যা থাকলে শুধু পাখির ডাকেই নির্ভর না করে উপযুক্ত চিকিৎসা নেওয়াই শ্রেয়। কারণ, ঘুমের সমস্যা অনেক সময় মানসিক বা শারীরিক অসুস্থতার লক্ষণও হতে পারে।
