আজকাল ওয়েবডেস্ক: গুড় ও চিনি দুটোই মিষ্টিজাতীয় খাবার। এখন অনেকেই দৈনন্দিন খাবারদাবারে যতটা সম্ভব চিনি এড়িয়ে চলেন। তবে এর পিছনে কি আদৌ কোনও যুক্তিসম্মত কারণ রয়েছে? নাকি পুরোটাই হুজুগ? বিশেষজ্ঞদের মতে পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্যগত দিকের বিচারে গুড় চিনির তুলনায় কিছুটা বেশি স্বাস্থ্যকর।
গুড়ের পুষ্টিগুণ
গুড়ে পেটের ভিতর হজমে সাহায্যকারী ব্যাক্টেরিয়াগুলি সক্রিয় হয়ে ওঠে। গুড়ে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট শরীর থেকে টক্সিন বা ক্ষতিকর পদার্থ বার করে দেয়। ফলে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ে, সংক্রমণের ঝুঁকি কমে। এছাড়া গুড়ে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, জিঙ্ক এবং সেলেনিয়ামের মতো খনিজ পদার্থ থাকে। ফলে হাড়ের স্বাস্থ্য ভাল হয়। অনেককেই গাঁটে গাঁটে যন্ত্রণায় কষ্ট পান। গুড় এই যন্ত্রণা কিছুটা কমাতে সহায়তা করে। এতে ভিটামিন বি এবং কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও পাওয়া যায়। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে দুপুরে কিংবা রাতে খাবার খাওয়ার ২০ মিনিট পর সামান্য গুড় খেয়ে নিতে পারেন। এছাড়া গুড়ে রয়েছে প্রচুর আয়রন। তাই গুড় অ্যানিমিয়া বা রকতাল্পতা রোগকেও প্রতিরোধ করে। যেই কারণে গুড় খেলে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ার সম্ভবনা থাকে। কেউ কেউ মনে করেন গুড় লিভারকে পরিষ্কার করে ও সতেজ রাখতে সাহায্য করে। তবে এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত গবেষণা প্রয়োজন। গুড়ের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স চিনির তুলনায় কিছুটা কম, তাই এটি রক্তে শর্করার মাত্রা ধীরে ধীরে বাড়ায়।
চিনির পুষ্টিগুণ
চিনিতে মূলত সুক্রোজ থাকে, যা একটি সাধারণ শর্করা। এতে কোনও ভিটামিন বা খনিজ পদার্থ নেই। ফলে শুধুমাত্র ক্যালোরি ছাড়া চিনি থেকে আর কিছুই পাওয়া সম্ভব নয়। তাছাড়া চিনির গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি হওয়ায় এটি রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দেয়। অতিরিক্ত চিনি খেলে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়। সঙ্গে মাথা ধরা, ডায়াবেটিস, ওজন বেড়ে যাওয়া এসব উপসর্গও থাকে। অতিরিক্ত চিনি অন্ত্রে গিয়ে ফ্যাটে পরিণত হয়। অর্থাৎ গ্লাইকোজেন ভেঙে ফ্যাট তৈরি করে। এছাড়াও আরও একটি কারণে চিনি বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। রিফাইন্ড সুগার রক্তে দ্রুত মিশে যাওয়া, এর ফলে তাৎক্ষণিক ভাবে মনকে ভাল হয়ে যায়। যে কারণে মিষ্টি বা চকোলেট খেলে আমাদের মন ভাল লাগে। বিষয়টি কিছুটা নেশার মতো কাজ করে। যে কারণে তখন ওজন বেড়ে চললেও আমরা বুঝতে পারি না।
আরও পড়ুন: নিজে অক্ষম, স্ত্রীকে অন্তঃসত্ত্বা করতে প্রতিবেশীকে ভাড়া করলেন যুবক, ৭২ বার চেষ্টার পর কী হল ফলাফল?
গুড়ের স্বাস্থ্যগত উপকারিতা
১। গুড় হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
২। এটি রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে সহায়ক।
৩। গুড় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
৪। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন: নিজে অক্ষম, স্ত্রীকে অন্তঃসত্ত্বা করতে প্রতিবেশীকে ভাড়া করলেন যুবক, ৭২ বার চেষ্টার পর কী হল ফলাফল?
স্বাস্থ্যগত অপকারিতা
১। গুড় ও চিনি দুটোই অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে ওজন বাড়তে পারে।
২। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য গুড় ও চিনি দুটোই ক্ষতিকর।
৩। একই কথা প্রযোজ্য কিডনির রোগীদের জন্যেও। উপরন্তু গুড়ে পটাশিয়াম এবং ফসফরাস থাকে। দু’টি খনিজ অতিরিক্ত পরিমাণে শরীরে গেলে কিডনির ক্ষতি হয়।
আরও পড়ুন: নিজে অক্ষম, স্ত্রীকে অন্তঃসত্ত্বা করতে প্রতিবেশীকে ভাড়া করলেন যুবক, ৭২ বার চেষ্টার পর কী হল ফলাফল?
সবমিলিয়ে বলা যায়, ১ চা চামচ চিনিতে কমবেশি ৪৫ ক্যালোরি থাকে। সমপরিমাণ গুড়েও ক্যালোরির পরিমাণ এক। কাজেই ক্যালোরির দিক থেকে ভাবলে অন্তত গুড় আর চিনির বিশেষ কোনও ফারাক নেই। গুড় চিনির তুলনায় কিছুটা বেশি স্বাস্থ্যকর হলেও, বিশেষ কোনও পার্থক্য নেই। তাই গুড়ও পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। বিশেষ করে ডায়াবেটিস বা কিডনির রোগের মতো অন্য কোনও শারীরিক সমস্যা থাকলে গুড় চিনির মতোই বিপজ্জনক হতে পারে। তাই খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
