পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্যের জন্য নয়, স্বাস্থ্যরক্ষার ক্ষেত্রেও অত্যন্ত জরুরি-বিশেষ করে ব্যক্তিগত পোশাকের ক্ষেত্রে। অপরিচ্ছন্ন বা দীর্ঘদিনের ব্যবহৃত অন্তর্বাস ব্যবহার করলে বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন, ছত্রাক ও ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। অনেকেই হয়তো ভাবেন অন্তর্বাস তো শরীরের ভেতরের পোশাক, দিন দুয়েক না বদলালেও ক্ষতি নেই। আর এ ধারণাটাই বিপজ্জনক বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
চর্মরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, আমাদের শরীরে প্রতিদিনই ঘাম, তেল ও মৃত কোষ জমে থাকে। ফলে অন্তর্বাসে আর্দ্রতা তৈরি হয়, যা ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাস বৃদ্ধির আদর্শ জায়গা। এই নোংরা পরিবেশেই তৈরি হয় ফাঙ্গাল ইনফেকশন, স্কিন র্যাশ, চুলকানি, এমনকী যৌনাঙ্গে ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন। বিশেষ করে ভারতের মতো উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ায় সমস্যা আরও বাড়ে। তাই প্রতিদিন পরিষ্কার অন্তর্বাস পরা উচিত বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
তবে শুধু নিয়মিত ধোয়া অন্তর্বাস ব্যবহার করলেই হবে না। অন্তর্বাসের কাপড় সময়ের সঙ্গে ঢিলা হয়ে যায়, ইলাস্টিক নষ্ট হয়, ফাইবারে ব্যাকটেরিয়া আটকে থাকতে পারে। তাই অন্তর্বাসের আয়ু অত্যন্ত সীমিত। অনেকেই বছরের পর বছর একই অন্তর্বাস ব্যবহার করেন, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়। চিকিৎসকদের মতে, নিয়মিত ধোওয়ার পরেও অন্তর্বাসকে বেশি দিন ব্যবহার করা ঠিক নয়। গড়ে ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যেই অন্তর্বাস ফেলে দিয়ে নতুন অন্তর্বাস ব্যবহার করা উচিত।
এছাড়া সিনথেটিক বা খুব টাইট অন্তর্বাসও সমস্যা বাড়াতে পারে। এতে ঘাম শুকোয় না, ফলে জ্বালা, চুলকানি বা ছত্রাক দ্রুত বাড়ে। তাই সুতী বা হাওয়া চলাচল করতে পারে এমন কাপড়ের অন্তর্বাস পরার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়াও স্নানের পরই অন্তর্বাস পরা উচিত, ভেজা শরীরে নয়। কারণ ভেজা পরিবেশে ব্যাকটেরিয়া দ্রুত বাড়ে। একইভাবে ব্যায়াম, জিম বা বাইরে ঘোরাঘুরির পরে জমে থাকা ঘামে ভেজা অন্তর্বাস কখনওই দীর্ঘসময় পরা ঠিক নয়।
সব মিলিয়ে বিশেষজ্ঞদের স্পষ্ট পরামর্শ, স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য প্রতিদিন ধোয়া পরিষ্কার অন্তর্বাস ব্যবহার করুন এবং ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে পুরনো অন্তর্বাস বদলে ফেলুন। পরিচ্ছন্ন অভ্যাসই সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে এবং সুস্থ থাকতে সাহায্য করে।
