কলা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি ফল। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল ও ফাইবার থাকে, যা শরীরকে শক্তি জোগায় এবং নানা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। তবে অধিকাংশ মানুষই শুধু ফলটি খেয়ে খোসা ফেলে দেন। কিন্তু আপনি কি জানেন, কলার খোসাতেও এমন বহু গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টিগুণ রয়েছে, যা শরীরের জন্য সমানভাবে উপকারী?

কলার খোসায় রয়েছে ফাইবার, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান। এই উপাদানগুলো হজমশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে, অন্ত্র পরিষ্কার রাখে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস ও বদহজমের মতো সমস্যা কমাতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

কলার খোসা হজমতন্ত্রকে মজবুত করতে সহায়ক। এতে দ্রবণীয় এবং অদ্রবণীয়, উভয় ধরনের ফাইবার থাকে, যা অন্ত্র পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। এর ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস ও বদহজমের মতো সমস্যা কমতে পারে। ধীরে ধীরে পেট সংক্রান্ত নানা অসুবিধাও হ্রাস পায়।

হার্টের জন্য উপকারী

কলার খোসা হার্টের জন্যও উপকারী। এতে থাকা পটাশিয়াম শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এর ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রিত থাকে এবং হার্টের ঝুঁকিও কমে যায়।

ত্বক ও চুলের সুরক্ষা

কলার খোসা ত্বক ও চুলের যত্নেও কার্যকর। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে ক্ষতিকর ফ্রি র‍্যাডিক্যাল থেকে রক্ষা করে। নিয়মিত সেবন বা বাহ্যিক ব্যবহারে ত্বকে উজ্জ্বলতা আসে এবং চুল মজবুত হয়।

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী

চিকিৎসক প্রিয়াঙ্কা সিংয়ের মতে, কলার খোসা ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের জন্যও উপকারী হতে পারে। এতে থাকা ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা ধীরে ধীরে বাড়তে সাহায্য করে। পাশাপাশি এটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।

সেবন পদ্ধতি

সব সময় তাজা ও ভালভাবে ধোয়া অর্গানিক কলার খোসাই ব্যবহার করা উচিত। খোসা ছোট টুকরো করে কেটে ১০–১৫ মিনিট জলে ফুটিয়ে নিন। এরপর সেই জল ছেঁকে হালকা চায়ের মতো পান করা যেতে পারে।

সঠিক সেবন ও সতর্কতা

সেদ্ধ করা কলার খোসা শুকিয়ে গুঁড়ো করেও ব্যবহার করা যায়। প্রতিদিন আধা চা-চামচ গুঁড়ো উষ্ণ গরম জল বা স্মুদির সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। প্রথমবার সেবনের সময় অল্প পরিমাণ দিয়ে শুরু করুন। কোনও অসুবিধা দেখা দিলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। আগে থেকে কোনও গুরুতর রোগ থাকলে আয়ুর্বেদ চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করেই এই উপায় গ্রহণ করা উচিত। নাহলে উপকারের বদলে ক্ষতি হতে পারে।