ঋতুস্রাবের সময় যখন পেটে টান, কোমরে ব্যথা আর মেজাজ ওঠানামা হয়, তখন সঠিক খাদ্যবিধি মানলে উপশম অনেকাংশে সম্ভব বলে মনে করছেন গাইনোকোলজি বিশেষজ্ঞরা।
হেলথলাইনের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, সঠিক পরিমাণে জল পান করলে ডিহাইড্রেশনজনিত মাথা ব্যাথা কমে। তরমুজ ও শসার মতো জল-সমৃদ্ধ ফল হাইড্রেশনে সাহায্য করে এবং ব্লোটিংও কমায়।
ওয়েবএমডি অনুসারে, পিরিয়ডের সময়ে কম ফ্যাটযুক্ত নিরামিষ এবং বি ওয়ান ভিটামিন (থায়ামিন) এবং ক্যালসিয়ামে সমৃদ্ধ ডায়েট ক্র্যাম্প কমাতে কার্যকর।
তাহলে কী খাওয়া উচিত?
তরমুজ, শসা: হাইড্রেশন ও বেলোটিং কমাতে সহায়তা করে
পালং, কেল (পাতাওয়ালা শাক): আয়রন ও ম্যাগনেশিয়ামে ভরপুর, ক্লান্তি ও ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে
গ্রিন টি বা আদা চা: পেটে টান ও অস্বস্তি কমাতে সহায়ক
বাদাম, ফ্ল্যাক্সসিড, স্যামন বা অন্যান্য ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার প্রদাহ কমায় ও ব্যথা লাঘব করে। দীর্ঘ গবেষণায় পাওয়া গিয়েছিল, ওমেগা-৩ ব্যথা তীব্রতা অনেকটাই কমিয়ে দিচ্ছে।
কী এড়িয়ে চলবেন?
রেড মিট: এতে থাকা প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিনস ক্র্যাম্প আরও বাড়াতে পারে
খা অতিরিক্ত চিনি, প্রক্রিয়াজাত খাবার, সোডা, ফ্রাইড ফুড: এগুলো প্রদাহ বাড়িয়ে দিতে পারে এবং জী-বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
অতিরিক্ত ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল: ডিহাইড্রেশন, ফোলাভাব ও মাথা ব্যথা প্রকট করে
যে সব খাবার শরীরকে শক্তি দেয় এবং ব্যথা সামলাতে সহায়তা করে এমন সব খাবার খাওয়া উচিত
যোগব্যায়াম এবং প্রাণায়াম (শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম) মাসিকের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশ্রাম অপরিহার্য হলেও, ধনুরাসন এবং ভুজঙ্গাসন-এর মতো মৃদু যোগব্যায়াম রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতে পারে এবং এন্ডোরফিন নিঃসরণ করতে পারে, যা প্রাকৃতিক ব্যথা উপশম করে। একইভাবে, পেটে হালকা ম্যাসাজ করার জন্য উষ্ণ তিলের তেল প্রয়োগ করা বা হিটিং প্যাড ব্যবহার করা উল্লেখযোগ্যভাবে ক্র্যাম্প প্রশমিত করতে পারে এবং পেশী শিথিল করতে পারে।
হরমোনের ভারসাম্য এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য খাদ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। স্যামন বা তিসির মতো ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ প্রদাহ কমাতে এবং খিঁচুনি কমাতে সাহায্য করতে পারে। শাকসবজি, বাদাম এবং গোটা শস্যের মতো ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার পেশী শিথিল করতে এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। অতিরিক্ত নুন, ক্যাফেইন এবং অ্যালকোহল এড়িয়ে চললে পেট ফাঁপা এবং অস্বস্তি কমানো যায়। অনেক মহিলা বিশ্বাস করেন যে পিরিয়ড স্বাভাবিক, এবং পিরিয়ডের ব্যথাও স্বাভাবিক। তবপিরিয়ডের আপনার দৈনন্দিন জীবনযাপন ব্যাহত করার প্রয়োজন নেই এবং এই ব্যাঘাত রোধ করার জন্য সক্রিয় পদক্ষেপ করা উচিত। স্বাস্থ্যকর জীবনধারা গ্রহণ করে এবং এই প্রতিকারগুলি অবলম্বন করে, ব্যথা, পেট ফোলা এবং মেজাজের পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণ এবং কমাতে পারেন। প্রতিটি মহিলার একটি আলাদা পদ্ধতি থাকে যা তার জন্য সবচেয়ে কার্যকর, তাই পরীক্ষা করা এবং আপনার জন্য কোনটি সবচেয়ে ভাল কাজ করে তা আবিষ্কার করা গুরুত্বপূর্ণ।
