ঘুম থেকে উঠে চা না খেলে ঠিক কাজের এনার্জি পাওয়া যায় না। শুধু কি তাই! দিনের মধ্যে নানা ছুঁতোয় চয়ে চুমুক চাই। শরীরের কথা ভেবে আজকাল অবশ্য অনেকে চিরাচরিত দুধ চা-এর বদলে গ্রিন টি, বিভিন্ন হার্বাল টি-তে চুমুক দেন। তবে জানেন কি এক্ষেত্রে একটি ফুলের চা-এ খেলে পেতে পারেন একাধিক স্বাস্থ্যের উপকারিকা। শুনতে যতই অদ্ভুত লাগুক, গাঁদা ফুলের চা-তেই মিলবে সেই অবিশ্বাস্য ফল।
শুধুই পুজো বা বাগানের সাজসজ্জার জন্য নয়, গাঁদা বা মেরিগোল্ড ফুল বহু বছর ধরে ভেষজ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আর আজকাল গাঁদার পাপড়ি দিয়ে তৈরি করা মেরিগোল্ড টি অনেকের জন্য হয়ে উঠেছে প্রাকৃতিক সুস্থতার উপায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত এক কাপ গাঁদা ফুলের চা পান করলে শরীরে নানা ইতিবাচক পরিবর্তন হতে পারে।
*গবেষণায় দেখা গেছে, গাঁদা চায়ের মধ্যে থাকা জীবাণুনাশক ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান যা পেটে প্রদাহ কমাতে সক্ষম। ফলে বদহজম, ফোলাভাব, অ্যাসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিক অস্বস্তি অনেকটা কমে যেতে পারে। আবার গাঁদা চা অন্ত্রের কাজকে খানিকটা দ্রুত এবং স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। ফলে নিয়মিত পেট সমস্যায় সুরাহা মেলে।
*চুলকানি, র্যা শ বা ফোলা-লাল চামড়ার জন্য দীর্ঘকাল ধরে গাঁদা ফুল ব্যবহৃত হয়েছে। গাঁদার অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ ত্বকে প্রদাহ কমাতে, ক্ষত সারাতে বা কোষ মেরামতে সহায়ক হতে পারে। যদিও চা হিসেবে খেলে এর প্রভাব ততটা দৃঢ় নয়, তবুও নিয়মিত পান করলে ত্বক সামগ্রিকভাবে স্বস্তি পেতে পারে।
*গাঁদা চা-এর মধ্যে অ্যান্টি-মাইক্রোবায়াল এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট উপাদান রয়েছে যা শরীরকে রোগ সংক্রমণ, সর্দি–জ্বর বা মরশুমি সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারে। নিয়মিত পান করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হতে পারে।
*গাঁদা চা পিরিয়ডের ব্যথা বা অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। গাঁদায় এমন গুণ রয়েছে যা পেশি শিথিলতা বা মাংসপেশির খিঁচুনি কমায়। তবে গর্ভবতী মহিলাদের জন্য এটি উপযুক্ত নাও হতে পারে।
*গাঁদা চা উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা বা স্ট্রেস কমাতে সহায়ক হতে পারে। রাতে ঘুমানোর আগে এক কাপ গরম গাঁদা চা পান করলে শরীর ও মন দুটোই শান্ত থাকে।
যদিও গাঁদা চা বেশিরভাগ সময়ই নিরাপদ, কিন্তু খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। বিশেষ করে অ্যালার্জির মতো কোনও নির্দিষ্ট শারীরিক সমস্যা থাকলে অবশ্যই সচেতন হওয়া প্রয়োজন। অতিরিক্ত পরিমানে এই চা পান করা এবং গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে গাঁদা চায়ের ব্যবহার এড়িয়ে যাওয়াই শ্রেয়।
