আজকাল ওয়েবডেস্ক: পুজোর মরসুম মানেই দেদার খাওয়াদাওয়া। মিষ্টি থেকে ভাজাভুজি, বাদ যায় না কিছুই। কিন্তু উৎসবের এই আবহেও শরীরকে অবহেলা করলে চলবে না। আর শরীরকে ভিতর থেকে শক্তিশালী রাখতে প্রকৃতিতে এমন অনেক উপাদান রয়েছে, যা আমাদের রোজের পাতে থাকা প্রয়োজন। তেমনই এক আশ্চর্য ফল হল আখরোট। দেখতে অবিকল মস্তিষ্কের মতো এই বাদামটি যে কেবল মস্তিষ্কের জন্যই উপকারী, তা কিন্তু নয়। এর পুষ্টিগুণ জানলে যে কেউ অবাক হতে বাধ্য।

হৃদয়ের যত্ন নেয়

আধুনিক জীবনযাত্রায় হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, আখরোটে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা এক প্রকার ‘ভাল ফ্যাট’। এই উপাদানটি রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে এবং ভাল কোলেস্টেরল বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে ধমনীর ভিতরে চর্বি জমার আশঙ্কা কমে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। নিয়মিত আখরোট খেলে তাই হৃদযন্ত্র থাকে সতেজ ও সুরক্ষিত।

মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়

ছোটবেলা থেকেই বড়রা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে আখরোট খাওয়ার পরামর্শ দেন। এর কারণ, এতে থাকা প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিষ্কের কোষকে সজীব রাখে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নিয়মিত আখরোট খেলে স্মৃতিশক্তি উন্নত হয় এবং বয়সজনিত মস্তিষ্কের ক্ষয় বা ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমে। পড়ুয়া থেকে শুরু করে বয়স্ক মানুষ, সকলের জন্যই আখরোট অত্যন্ত উপকারী।

প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে

শরীরের অভ্যন্তরে নানা কারণে প্রদাহ বা ‘ইনফ্ল্যামেশন’ হতে পারে, যা থেকে ডায়াবিটিস, আর্থারাইটিস বা ক্যানসারের মতো রোগের আশঙ্কা বাড়ে। আখরোটে থাকা পলিফেনল নামক যৌগ এই প্রদাহ কমাতে অত্যন্ত কার্যকরী। তাই রোজ ডায়েটে কয়েকটি আখরোট রাখলে দীর্ঘমেয়াদী রোগের ঝুঁকি অনেকটাই এড়ানো সম্ভব।

ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক

অনেকেই ভাবেন, বাদাম খেলে ওজন বাড়ে। এই ধারণা কিন্তু সম্পূর্ণ ঠিক নয়। আখরোটে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকায় অল্প কয়েকটি খেলেই পেট ভরে যায়। ফলে বারে বারে খাওয়ার প্রবণতা কমে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।

এছাড়াও, হজমশক্তি উন্নত করতে, হাড়ের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে এবং ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়াতেও আখরোটের জুড়ি মেলা ভার। তাই আর দেরি কেন? প্রতিদিন সকালে খালি পেটে বা বিকালের জলখাবারে দু-তিনটি ভেজানো আখরোট যোগ করুন আপনার খাদ্যতালিকায়। শরীর আর মন, দুই-ই থাকবে চনমনে। তবে শুধু একটি কথা মাথায় রাখবেন, কোনও কিছুই অতিরিক্ত ভাল নয়, তাই পরিমিত পরিমাণে খাওয়াই শ্রেয়।