আজকাল ওয়েবডেস্ক: ক্রমাগত বৃষ্টিতেও যেন কিছুতেই কমছে না ভ্যাপসা গরম। আর এমন আবহাওয়াতে অনেকেই হালকা খাবার বেশি খেতে পছন্দ করেন। বিশেষ করে সকালেই যদি তেল মশলা সমৃদ্ধ খাবার খেয়ে ফেলেন, তবে দিনভর শরীরে অস্বস্তি হতে পারে। যাঁরা এই সময় হালকা কিছু খেতে চান যা দীর্ঘক্ষণ পেটেও থাকবে আবার শরীরেও অস্বস্তি হবে না, তাঁদের জন্য আদর্শ হতে পারে ছাতুর শরবত। এমন দুর্দান্ত প্রাকৃতিক হেলথ ড্রিঙ্ক টেক্কা দিতে পারে বাজার থেকে কেনা যে কোনও প্রোটিন পাউডারকে।
১. ছাতু শরীরকে শীতল ও হাইড্রেটেড রাখে। গরমকালে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং ঘামের মাধ্যমে প্রচুর জল ও খনিজ লবণ বেরিয়ে যায়। ছাতুর শরবত একটি প্রাকৃতিক শীতল পানীয় হিসেবে কাজ করে। সকালে এটি পান করলে তা ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধ করে এবং শরীরের জলীয় ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। ফলে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়।
আরও পড়ুন: ২৬৪৫ লিটার স্তন্য উৎপন্ন হয় বধূর শরীরে! 'রোজ রাতে ৩ ঘণ্টা..' বিপুল দুগ্ধ উৎপাদনের রহস্য ফাঁস করলেন নিজেই
আরও পড়ুন: ১২ জন স্ত্রী! বাচ্চা করাই নেশা! ১০২ সন্তানের বাবা হয়ে অবশেষে থামলেন ৬৮-র মুসা, কেন ক্ষান্ত দিলেন? কী বললেন এ যুগের ধৃতরাষ্ট্র?
২. তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘস্থায়ী শক্তি সরবরাহ করে। ছাতু কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট (জটিল শর্করা) এবং উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের একটি চমৎকার উৎস। সকালে এক গ্লাস ছাতুর শরবত খেলে শরীর দ্রুত শক্তি পায়। এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় এটি রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ করে বাড়িয়ে দেয় না, বরং ধীরে ধীরে শক্তি নিঃসরণ করে। ফলে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরাট থাকে এবং শরীর সহজে ক্লান্ত হয় না।
৩. হজমতন্ত্রকে সুস্থ রাখে ও ডিটক্সিফিকেশনে সাহায্য করে। ছাতুতে প্রচুর পরিমাণে অদ্রবণীয় ফাইবার থাকে, যা অন্ত্রের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে এবং মলত্যাগকে সহজ করে। কাজেই ছাতু কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকরী। এছাড়াও, ফাইবার অন্ত্রে থাকা উপকারী ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ (টক্সিন) বের করে দিতে সহায়তা করে, যা ডিটক্সিফিকেশনের একটি প্রাকৃতিক উপায়।
৪. পুষ্টি উপাদানে ভরপুর এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক এই পানীয়। ছাতু আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, এবং ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের মতো গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ও ভিটামিনের একটি সমৃদ্ধ উৎস। আয়রন রক্তাল্পতা প্রতিরোধে সাহায্য করে, ক্যালসিয়াম হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষা করে এবং ম্যাগনেসিয়াম পেশী ও স্নায়ুতন্ত্রের সঠিক কার্যকারিতা বজায় রাখে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ছাতুতে থাকা ফাইবার এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে, যা সার্বিকভাবে হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী।
৫. ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য প্রতিদিনের খাবার বাছাই করা খুবই জরুরি। ছাতুর শরবত এমন একটি পানীয়, যা ডায়াবেটিস রোগীরা নিরাপদভাবে খেতে পারেন। তবে সেক্ষেত্রে শরবতে চিনি জাতীয় উপাদান মেশানো যাবে না। ভাজা ছোলার গুঁড়ো থেকে তৈরি ছাতুর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খুবই কম। এর অর্থ এটি ধীরে ধীরে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়ায়, ফলে হঠাৎ শর্করা বৃদ্ধির আশঙ্কা কম থাকে। এছাড়া ছাতুতে প্রচুর পরিমাণে দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় ফাইবার থাকে, যা ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং হজম প্রক্রিয়া মন্থর করে। ছাতুর আরও একটি বড় সুবিধা হল, ছাতুতে প্রাকৃতিকভাবে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট থাকে, যা প্যানক্রিয়াসের কার্যকারিতা ভাল রাখতে সাহায্য করে।
তবে মাথায় রাখবেন যে কোনও খাবার নিয়মিত খাওয়ার আগে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে নেওয়া জরুরি।
