শীতের সময় শরীরকে সুস্থ রাখতে যেসব প্রাকৃতিক খাবার সবচেয়ে কার্যকর, তার মধ্যে রসুন অন্যতম। রসুন শুধু রান্নার স্বাদ বাড়ানোর উপাদান নয়, শীতের সময়ে এটি এক প্রাকৃতিক ওষুধ, যা শরীরকে ভিতর থেকে শক্তিশালী করে। নিয়মিত ব্যবহার করলে শীতের নানা রোগ থেকে দূরে থাকা সম্ভব। 

রসুনকে নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখলে তা শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো থেকে শুরু করে হৃদযন্ত্র পর্যন্ত সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে। শীতের ঠান্ডা লাগা, ইনফেকশন ও দুর্বলতার বিরুদ্ধে রসুন যেন এক প্রাকৃতিক ঢাল।

সম্প্রতি আচার্য বালকৃষ্ণ জানিয়েছেন, রসুনে থাকা অ্যালিসিন নামের বিশেষ যৌগ শরীরে অ্যান্টিবায়োটিকের মতো কাজ করে। এটি ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও ফাঙ্গাসের আক্রমণ কমায়। তাই শীতে যাদের ঠান্ডা, কাশি বা সাইনাসের সমস্যা বেশি হয়, তাদের জন্য রসুন খুবই উপকারী। শুধু রান্নায় নয়, খালি পেটে কাঁচা রসুন খেলে ফল আরও দ্রুত পাওয়া যায়।

তিনি জানান, রসুন রক্ত পরিষ্কার করে এবং রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। এর ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। শীতকালে যাদের ব্লাড প্রেসার ওঠা–নামা করে, তাঁদের জন্য রসুন এক অসাধারণ প্রাকৃতিক ওষুধের মতো। নিয়মিত দুই থেকে তিন কোয়া রসুন খেলে হৃদযন্ত্র শক্তিশালী হয়।

রসুন শরীরের বিপাকক্রিয়া বাড়ায়। ফলে ওজন কমাতে আগ্রহীদের জন্যও এটি দারুণ কার্যকর। আচার্য বালকৃষ্ণের মতে,  রসুন হজমশক্তি বাড়ায় এবং শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেয়। এতে পেট পরিষ্কার থাকে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এবং গ্যাস-অম্লতার সমস্যা কমে যায়। শীতে যখন ডায়েট ব্যালান্স রাখতে অনেকেই সমস্যায় পড়েন, তখন রসুন হতে পারে সহজ সমাধান।

এছাড়াও রসুনে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরের কোষগুলোকে সুরক্ষা দেয়। ফলে বার্ধক্যজনিত নানা অসুখের ঝুঁকি কমে, ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে এবং চুল–নখ আরও স্বাস্থ্যকর থাকে। শীতকালে যাদের জয়েন্টে ব্যথা বা বাতের সমস্যা বাড়ে, তাদের ক্ষেত্রেও রসুন গরম প্রভাব ছড়িয়ে আরাম দেয়।

আচার্য বালকৃষ্ণ পরামর্শ দেন, প্রতিদিন রসুনকে যে কোনও একটি উপায়ে খাদ্যতালিকায় রাখার জন্য। কাঁচা রসুন খাওয়া সম্ভব না হলে, স্যুপ, সবজি, ডাল বা মাংসের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে একই উপকার পাওয়া যায়। তবে যাদের পেটের আলসার বা অতিরিক্ত অ্যাসিডিটির সমস্যা আছে, তাদের চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রসুন খাওয়া উচিত।