আজকাল ওয়েবডেস্ক: জাপানের অধিবাসীদের কথা উঠলেই মাথায় আসে তাঁদের নিয়মানুবর্তিতার কথা। জাপানিদের দীর্ঘায়ুর নেপথ্যে রয়েছে পরিমিত আহার এবং নিয়ন্ত্রিত জীবনশৈলী। কিন্তু জানেন কি জাপানিদের এমন কিছু অভ্যাস রয়েছে যা ডায়াবেটিস দূরে রাখতেও সহায়ক?

 ১.  সুষম এবং নিয়ন্ত্রিত আহার: জাপানিদের ঐতিহ্যবাহী খাবার ‘ওয়াশোকু’ ডায়াবেটিস প্রতিরোধের জন্য অত্যন্ত উপকারী। ওয়াশোকুতে ভাজাভুজি খাবারের পরিমাণ কম থাকে এবং তাজা, হালকা রান্না করা খাবার বেশি থাকে। পাশাপশি জাপানিরা সাদা ভাতের পরিবর্তে বাদামী চাল, অন্যান্য শস্য, প্রচুর পরিমাণে সবজি, এবং মটরশুঁটি খান, যা রক্তে শর্করার মাত্রাকে ধীরে ধীরে বাড়ায়। সমুদ্রবেষ্টিত জাপানে মাছ প্রোটিনের একটি প্রধান উৎস। জাপানিরা প্রচুর সামুদ্রিক মাছ খান। এতে স্বাস্থ্যকর ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, যা ইনসুলিনির কার্যকারিতা বাড়ায়।

কী খাচ্ছেন, তার পাশাপাশি কতটা খাচ্ছেন তাও জরুরি। জাপানিরা ছোট ছোট পাত্রে খাবার খান। যা অতিরিক্ত খাওয়া এড়াতে সাহায্য করে ফলে রক্তে শর্করার হঠাৎ করে বৃদ্ধি পায় না।

২.  নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ: জাপানিদের দৈনন্দিন জীবনে হাঁটাচলা এবং হালকা শারীরিক কার্যকলাপের গুরুত্বপূর্ণ স্থান রয়েছে। একে উনোদু বলে। গণপরিবহন ব্যবহার, কাছাকাছি দূরত্বে হেঁটে যাওয়া বা সাইকেল চালানোর প্রবণতা জাপানে বেশি। এই অভ্যাসগুলি ক্যালোরি ঝরাতে এবং ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে।
জাপানের একটি ঐতিহ্যবাহী ব্যায়াম করার পদ্ধতি রয়েছে। নাম - তাই চি। এই ব্যায়াম শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।

৩.  মানসিক চাপ কমানো: জাপানি সংস্কৃতিতে মানসিক শান্তির উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে পরোক্ষভাবে সাহায্য করে। একে ‘সেইসিন আনতেই’ বলে। ভারতে যেমন যোগাভ্যাস করার চল রয়েছে, তেমনই জাপানে জেন মেডিটেশন নামক ধ্যানের প্রচলন রয়েছে। এই অভ্যাস মানসিক চাপ কমাতে এবং হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। দেহে হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকলে রক্তে শর্করার মাত্রা আচমকা ওঠা নামা করে না।