সব বাড়িতেই সবচেয়ে আদুরে সদস্য হয়ে থাকে পোষ্যরা। অনেকেই ভালবেসে নিজের খাবার পোষ্যর সঙ্গে ভাগ করে নেন।কিন্তু জানেন কি কিছু সাধারণ মানুষের খাবার কুকুরের শরীরে এমন ভয়ানক প্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে যা মুহূর্তে প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে? বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন পাঁচটি খাবার কখনও কুকুরকে খেতে দেওয়া উচিত নয়, এমনকী অল্প পরিমাণেও নয়।

১. আইসক্রিমঃ গরমের দিনে অনেকেই কুকুরকে আইসক্রিম খাওয়ান! কিন্তু আইসক্রিমের কৃত্রিম মিষ্টিকারক ‘জাইলিটল' কুকুরের জন্য মারাত্মক বিষ। অল্প পরিমাণেই খেলেও এটি কুকুরের রক্তে শর্করার মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে কমিয়ে দিতে পারে এবং লিভারের সমস্যা হতে পারে। এমনকী জাইলিটল না থাকলেও দুধের ল্যাকটোজ হজম করতে না পেরে কুকুরের বমি, পেট ব্যথা বা ডায়রিয়া হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কুকুরকে আইসক্রিমের বদলে তরমুজ বা কলার মতো ফল দেওয়া নিরাপদ বিকল্প।

২. চিপস ও নোনতা স্ন্যাকসঃ চিপস বা নোনতা খাবারে সোডিয়াম (লবণ) মাত্রাতিরিক্ত থাকে। এই অতিরিক্ত লবণ কুকুরের শরীরে বিষক্রিয়া ঘটাতে পারে, যার ফলে বমি, কাঁপুনি এমনকী মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাছাড়া চিপসের অতিরিক্ত তেল কুকুরের অগ্ন্যাশয়ে প্রদাহ বা ‘প্যানক্রিয়াটাইটিস’-এর কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। কুকুর ভুল করে এসব খেলে প্রচুর জল খেতে দিন এবং দ্রুত পশুচিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

৩. দুধঃ অনেকে ভাবেন, দুধ কুকুরের জন্য পুষ্টিকর। বাস্তবে, প্রাপ্তবয়স্ক কুকুরদের অধিকাংশই ল্যাকটোজ হজম করতে পারে না। ফলে সামান্য দুধও তাদের পেটে গ্যাস, ব্যথা, বমি বা ডায়রিয়ার কারণ হতে পারে। তাই পশুচিকিৎসকরা কুকুরকে দুধ না দেওয়ার পরামর্শ দেন।

৪. চকোলেটঃ চকোলেটের মধ্যে থাকা ‘থিওব্রোমাইন’ নামক উপাদান কুকুরের হৃদযন্ত্র ও স্নায়ুতন্ত্রের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। মাত্র কয়েক গ্রাম চকোলেট খেলেও কুকুরের হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়, শরীর কাঁপতে থাকে এবং গুরুতর ক্ষেত্রে মৃত্যু ঘটতে পারে। বিশেষ করে ডার্ক চকোলেট সবচেয়ে বিপজ্জনক।

৫. কুকিস ও বেকারি খাবারঃ কুকিসে অনেক সময় জাইলিটল বা চকোলেট ব্যবহার করা হয়, যা কুকুরের জন্য প্রাণঘাতী। উপরন্তু, চিনি ও ফ্যাটের পরিমাণ বেশি থাকায় এটি দীর্ঘমেয়াদে কুকুরের স্থূলতা ও প্যানক্রিয়াটাইটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই মানুষের খাওয়ার কুকিস না দিয়ে কুকুরের জন্য বিশেষভাবে তৈরি ডগ-বিস্কুটই দিন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মানুষের খাবার কুকুরকে খাওয়ানোর আগে উপাদান ভালোভাবে দেখে নিন। কোনও খাবার খাওয়ানোর পর কুকুরের আচরণে অস্বাভাবিকতা যেমন বমি, দুর্বলতা বা কাঁপুনি দেখা দিলে এক মুহূর্ত দেরি না করে পশুচিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান।