আজকাল ওয়েবডেস্ক: দ্রুতগতির শহুরে জীবনে বাইরের কোলাহল, গাড়ির হর্ন, নির্মাণকাজের শব্দ এত বেড়ে গিয়েছে যে ঘরের শান্ত পরিবেশ বজায় রাখা একপ্রকার চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকেই সাউন্ডপ্রুফিংয়ের কথা ভাবলেও, তার বিপুল খরচ দেখে পিছিয়ে আসেন। কিন্তু জানেন কি, সামান্য কিছু ঘরোয়া কৌশলেই বাইরের অবাঞ্ছিত আওয়াজ অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব? রইল এমনই পাঁচটি সহজ টোটকা, যা ঘরকে কিছুটা হলেও করে তুলবে শব্দরোধী।

১. ভারী পর্দার ব্যবহার: ঘরের দরজা-জানলায় মোটা ও ভারী পর্দা ব্যবহার করা শব্দ নিয়ন্ত্রণের অন্যতম সহজ উপায়। এই ধরনের পর্দা যেমন আলো আটকাতে সাহায্য করে, তেমনই বাইরে থেকে আসা শব্দও শোষণ করে নেয়। বিশেষত মখমল বা পুরু ক্যানভাস কাপড়ের পর্দা এক্ষেত্রে বেশ কার্যকরী। সম্ভব হলে ডবল লেয়ারের পর্দা ব্যবহার করতে পারেন, তাতে আরও ভাল ফল মিলবে।
২. আসবাবপত্রের সঠিক বিন্যাস: ঘরের আসবাবপত্রও শব্দ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। দেওয়াল ঘেঁষে বড় বুকশেলফ বা আলমারি রাখলে তা বাইরের শব্দ প্রতিরোধ করতে পারে। একইভাবে, নরম সোফা, কার্পেট, রাগস ইত্যাদিও ঘরের মধ্যে শব্দের প্রতিধ্বনি কমাতে সাহায্য করে। ফাঁকা দেওয়ালের তুলনায় আসবাবপত্রে ভরা ঘরে বাইরের আওয়াজ কম প্রবেশ করে।
৩. ফাঁক-ফোকর বন্ধ করা: অনেকসময় দরজা বা জানলার কোনায় থাকা ছোট ছোট ফাঁক দিয়েও বাইরের শব্দ ঘরে প্রবেশ করে। এই ধরনের ফাঁক-ফোকর খুঁজে বার করে তা বন্ধ করার ব্যবস্থা নিন। পুরনো কাপড়, স্পঞ্জ বা রাবার স্ট্রিপ ব্যবহার করে এই ছিদ্রগুলি সহজেই বন্ধ করা যায়। দরজার তলার ফাঁক দিয়ে শব্দ এলে সেখানে ‘ডোর সুইপ’ বা পাতলা কার্পেটের টুকরো ব্যবহার করতে পারেন। মানে মোটামুটি এসির জন্য যেমন ভাবে ঘর বদ্ধ করা হয় কিছুটা তেমনই।
৪. দেওয়াল সজ্জায় পরিবর্তন: ফাঁকা দেওয়াল শব্দ প্রতিফলিত করে ঘরের ভিতরের আওয়াজ বাড়িয়ে তোলে। আর্থিক সম্মতি থাকলে ওয়াল হ্যাংগিং, ফেব্রিক আর্ট বা অ্যাকোস্টিক ফোম প্যানেল ব্যবহার করতে পারেন। অ্যাকোস্টিক ফোম প্যানেল আজকাল অনলাইনেও পাওয়া যায়।
৫. গাছপালার সংযোজন: অবাক হচ্ছেন? কিন্তু এটাও সত্যি যে ঘরের ভিতরে বা বারান্দায় গাছপালা রাখলে তা প্রাকৃতিক সাউন্ড ব্যারিয়ার হিসেবে কাজ করে। বিশেষত ঘন পাতাযুক্ত গাছ বাইরের কোলাহল রোধ করে ঘরের পরিবেশ শান্ত রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া, ঘরের সৌন্দর্যবৃদ্ধি তো আছেই।
এই টোটকাগুলি হয়তো পেশাদার সাউন্ডপ্রুফিংয়ের সমতুল্য নয়, তবে অল্প খরচে এবং ঘরোয়া পদ্ধতিতে বাইরের অবাঞ্ছিত শব্দ অনেকটাই কমিয়ে আনতে এগুলি বেশ কার্যকর।