আজকাল বয়সের কাঁটা ৪০ ছুঁতে না ছুঁতেই হানা দিচ্ছে একাধিক জটিল রোগ। আধুনিক জীবনযাপনের জাঁতাকলে পড়ে রোগভোগে নাজেহাল হচ্ছেন কমবয়সিরাও। যার জন্য মুঠো মুঠো ওষুধের ওপর ভরসা করলে আবার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বরং কিছু ঘরোয়া টোটকা প্রয়োগ করতে দেখতে পারেন। আমাদের হাতের কাছে এমন অনেক উপাদান রয়েছে যা শরীর সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তেমনই একটি মশলা হল লবঙ্গ। যে কোনও খাবারের স্বাদ মেলাতে লবঙ্গের জুড়ি মেলা ভার। কিন্তু জানেন কি লবঙ্গের একাধিক স্বাস্থ্যগত উপকারিতাও রয়েছে। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, ভিটামিন এবং খনিজে ভরপুর লবঙ্গ স্বাস্থ্যের যত্ন নেয়। বিশেষ করে লবঙ্গ ভেজানো জল খাওয়ার উপকারিতা প্রচুর।
রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস জলে দুটো লবঙ্গ ভিজিয়ে রেখে দিন। সকালে খালি পেটে লবঙ্গ দুটো চিবিয়ে খেয়ে নিন। এরপর ওই জলে এক চামচ লেবুর রস ও এক চামচ মধু মিশিয়ে খেয়ে নিলেই শরীরের বহু উপকার পাবেন। গ্যাস, অ্যাসিডিটি, পেট ব্যথার সমস্যা দ্রুত ঠিক হয়ে যায়। লবঙ্গের জল পান করলে পেটের গ্যাস, হজমজনিত সমস্যা, অ্যাসিডিটি এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। লবঙ্গে থাকা যৌগগুলি হজম প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করে এবং খাবার দ্রুত হজমে সাহায্য করে।
লবঙ্গের জল মেটাবলিজম বাড়ায়। ফলে ফ্যাট বার্ন হয় বলে শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে। লবঙ্গের জল লিভারকে ডিটক্স করতে সাহায্য করে। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও ডিটক্সিফাইং গুণ লিভারে জমে থাকা ময়লা ও টক্সিন দূর করতে সহায়ক। এই কারণেই এটিকে প্রাকৃতিক লিভার ক্লিনজার বলা হয়।শরীরকে টক্সিনমুক্ত রাখতে লবঙ্গ দারুণ কার্যকরী।
লবঙ্গে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ থাকে যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। নিয়মিত লবঙ্গের জল পান করলে সর্দি-কাশি এবং সংক্রমণের ঝুঁকি কমে। লবঙ্গের জল ঘুমের মান উন্নত করে এবং মানসিক চাপ কমায়। এতে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান নার্ভাস সিস্টেমকে শান্ত রাখে, যার ফলে মস্তিষ্ক শিথিল অনুভব করে এবং অনিদ্রার সমস্যা কমে। এছাড়াও, এটির অ্যান্টিঅ্যাংজাইটি প্রভাব মনকে শান্ত রাখে, ফলে চাপ কমে এবং গভীর ঘুম আসে।
লবঙ্গ দাঁত ও মাড়ির জন্য একটি প্রাকৃতিক এবং কার্যকর ঘরোয়া টোটকা হিসেবে বিবেচিত। লবঙ্গের জল পান করলে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয় এবং দাঁতে ব্যাকটেরিয়া বেড়ে ওঠে না। এছাড়াও এটি মাড়িকে সুস্থ ও শক্তিশালী রাখে। দাঁতের ব্যথা ও মুখের দুর্গন্ধ কমাতেও সহায়ক লবঙ্গের জল।
এছাড়াও ঋতুস্রাব নিয়মিত করতেও সাহায্য করে লবঙ্গের জল। লবঙ্গে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ফ্রি-র্যা ডিক্যালের সঙ্গে লড়াই করে এবং আপনার ত্বককে বয়সের প্রভাব থেকে রক্ষা করে। প্রতিদিন লবঙ্গের জল পান করলে মুখে বলিরেখা দেরিতে আসে এবং ত্বক দেখায় তরুণ ও উজ্জ্বল।
