আইসক্রিম খেতে ভালবাসেন না, এমন মানুষ বোধ হয় খুঁজলেও পাওয়া যাবে না। কিন্তু ডায়াবেটিসের কারণে অনেক সময়ই এই প্রিয় জিনিসকে খাওয়ার তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দিতে হয়। এটি এমন একটি রোগ, যেখানে খাওয়া-দাওয়ার বিশেষ যত্ন নেওয়া জরুরি। বিশেষ করে মিষ্টি খাবার সম্পর্কে ডায়াবেটিস রোগীদের অত্যন্ত সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়, কারণ এগুলি রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি করতে পারে।
প্রায়ই প্রশ্ন ওঠে যে, ডায়াবেটিস রোগীরা কি আইসক্রিম খেতে পারেন? এটি কি রক্তের শর্করার মাত্রা বাড়াবে, নাকি কোনও নিরাপদ উপায় আছে? অনেকেরই ভুল ধারণা যে, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আইসক্রিম একদমই নিরাপদ নয়, কিন্তু এটি সত্য নয়। জেনে নেওয়া যাক, ডায়াবেটিস রোগীরা কতটুকু এবং কীভাবে আইসক্রিম খেতে পারেন।

হেলথলাইন-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, আইসক্রিমে শর্করা এবং কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বেশি থাকে। এর ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে টাইপ ১ এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীরা কম পরিমাণে আইসক্রিম খেতে পারেন। পরিমাণ যদি সীমিত রাখা হয়, তাহলে এটি শর্করার মাত্রার উপর খুব বেশি প্রভাব ফেলে না এবং স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ থাকে।

এছাড়াও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ডায়াবেটিস রোগীদের আইসক্রিম খাওয়া উচিত স্বাস্থ্যকর খাবারের সঙ্গে। যাতে রক্তের শর্করার মাত্রায় কম প্রভাব পড়ে। আইসক্রিম শুধুমাত্র তখনই খাওয়া উচিত যখন শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। যদি শর্করা নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকে, তাহলে আইসক্রিম খাওয়া উচিত নয়।

ডায়াবেটিস রোগীরা কখনও কখনও আইসক্রিম খেতেই পারেন। কিন্তু প্রতিদিন আইসক্রিম খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। আইসক্রিমে শর্করা এবং কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বেশি থাকে। আমরা যখন কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করি, এগুলি হজমের সময় গ্লুকোজে রূপান্তরিত হয়। বেশি কার্বোহাইড্রেট মানে হল রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পায়।

ফলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ যে, তাঁরা আইসক্রিমে থাকা কার্বোহাইড্রেট এবং শর্করার পরিমাণ খেয়াল রাখবেন। এবং সেই অনুযায়ী ইনসুলিন বা অন্যান্য ওষুধ গ্রহণ করবে।

আজকাল বাজারে শর্করা-মুক্ত বা কম কার্বযুক্ত আইসক্রিম পাওয়া যায়। এগুলো রক্তে শর্করার মাত্রা কম বাড়ায় এবং ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভালো হতে পারে।
তবে কিছু আইসক্রিমে থাকা কৃত্রিম সুইটনার কিছু মানুষের গ্যাস বা পেট ফোলার মতো সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই এগুলো সাবধানতার সঙ্গে বেছে নেওয়া উচিত।

আইসক্রিমের সঙ্গে স্বাস্থ্যকর টপিংস ব্যবহার করুন, যেমন: বাদাম, বীজ, গ্রিক ইয়োগার্ট, পিনাট বাটার বা হাই-প্রোটিন ওয়াফল কন। আইসক্রিম একা না খেয়ে ফাইবার বা প্রোটিনযুক্ত খাবারের সঙ্গে খেলে রক্তের শর্করা ধীরে বাড়ে।