আলো ও সমৃদ্ধির উৎসব দীপাবলি। হিন্দু ধর্মে বিশ্বাস করা হয়, এই দিনেই দেবী লক্ষ্মী পৃথিবীতে আগমন করেন এবং ভক্তদের ঘরে আশীর্বাদ বর্ষণ করেন। তাই দীপাবলির রাতকে ধনসম্পদ আহরণের বিশেষ শুভক্ষণ বলা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রাতে কিছু নির্দিষ্ট আধ্যাত্মিক উপায় বা ‘উপচার’ পালন করলে জীবনের আর্থিক বাধা, ঋণের জাল ও ব্যবসার মন্দাভাব দূর হতে পারে। জ্যোতিষীরা বলেন, এই উপচারগুলো কেবল নিয়ম নয়, এটি বিশ্বাস ও মানসিক ইতিবাচকতার প্রতীক। যিনি সত্যি মন থেকে দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা করেন, তাঁর জীবনে সমৃদ্ধি আসবেই। তেমনই কার্যকর উপচার দীপাবলির রাতে পালন করলে অর্থনৈতিক উন্নতি ও শান্তি আসবে বলে বিশ্বাস করা হয়।যেমন-

১. শুভ সময়ে শুরু করুন উপচারঃ দীপাবলির রাতে রাত ১১টা ৩০ থেকে ১২টা ৩০-এর মধ্যে এই টোটকা পালন করাই সবচেয়ে শুভ। এই সময়কে ‘মহালক্ষ্মীর প্রিয় মুহূর্ত’ বলা হয়।

২. ঘি-এর তিনটি প্রদীপ জ্বালানঃ ঘি দিয়ে তৈরি তিনটি প্রদীপ প্রস্তুত করুন। প্রতিটি প্রদীপে পদ্মবীজ দিন। বিশ্বাস করা হয়, পদ্ম দেবী লক্ষ্মীর প্রিয় ফুল, তাই এতে তাঁর আশীর্বাদ দ্রুত পাওয়া যায়।

৩. প্রদীপ রাখুন পবিত্র গাছের নিচেঃ আলাদা আলাদা তিনটি গাছের নিচে প্রদীপ তিনটি রাখুন। যা হল পিপল গাছ, আমলকি গাছ, বেল গাছ। এই তিনটি গাছ হিন্দু শাস্ত্রে অত্যন্ত পবিত্র বলে মানা হয়। এগুলির নিচে প্রদীপ জ্বালালে নেতিবাচক শক্তি দূর হয়ে ইতিবাচক শক্তির প্রবাহ শুরু হয়।

৪. প্রদীপ উৎসর্গ করুন দেবতাদের নামেঃ প্রথম প্রদীপ উৎসর্গ করুন ভগবান গণেশের নামে যিনি বাধা দূর করেন। দ্বিতীয় প্রদীপ দিন লক্ষ্মী দেবীর উদ্দেশ্যে যিনি অর্থ ও সৌভাগ্যের অধিষ্ঠাত্রী। তৃতীয় প্রদীপ দিন সরস্বতী দেবীর নামে যিনি জ্ঞান ও প্রজ্ঞার দেবী। একটি প্রদীপে গোল ফিতে রাখুন আর বাকি দু’টিতে লম্বা ফিতে। এতে শুভশক্তির ভারসাম্য বজায় থাকবে।

৫. পুজোর সময় বিশেষ আহ্বানঃ প্রদীপ জ্বালানোর সময় মনোযোগ দিন দেবী লক্ষ্মী, ভগবান কুবের ও পূর্বপুরুষদের স্মরণে। প্রার্থনা করুন যেন ঘরে সমৃদ্ধি ও ধনের প্রবাহ অব্যাহত থাকে। বিশ্বাস করা হয়, এই আহ্বান জীবনে স্থায়ী আর্থিক শান্তি আনে।

৬. বাড়িতে লক্ষ্মী পূজা করুনঃ গাছের নিচে প্রদীপ রাখার পর বাড়িতে ফিরে করুন লক্ষ্মীপূজা। পুজোর সময় একটি রূপার মুদ্রা দেবীর সামনে রাখুন এবং পরে সেটি বাড়ির সোনার বাক্স বা লকারে সংরক্ষণ করুন। এটি বছরের পর বছর অর্থের সঞ্চয় ও সৌভাগ্য ধরে রাখবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই উপচারের ফলে পুরনো ঋণ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, ব্যবসায় লাভ বৃদ্ধি হয়, আর্থিক স্থিতিশীলতা বাড়ে, ঘরে অর্থের প্রবাহ বাড়ে, জীবনে ইতিবাচক শক্তির আগমন হয়।