আজকাল ওয়েবডেস্ক: আধুনিক জীবনযাত্রার দৌড়ে গ্যাস, অম্বল, বদহজম যেন নিত্যদিনের সঙ্গী। রাতে ভরপেট খাওয়ার পর অস্বস্তি আরও বাড়ে। সকালে উঠেও মুখশুদ্ধির অভাব, গলার খুসখুস ভাব- এই সব ছোটখাটো সমস্যাকে অবহেলা করতে করতে তা বড় আকার ধারণ করে। কিন্তু এর সমাধান মিলতে পারে আপনার হেঁশেলেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিন রাতে খাবার খাওয়ার পর ঈষদুষ্ণ জলে ভেজানো কয়েকটি লবঙ্গ হতে পারে হাজারো সমস্যার সহজ সমাধান। এই মশলা কেবল রান্নার স্বাদ বাড়ায় না, এর ভেষজ গুণ শরীরকে ভিতর থেকে সারিয়ে তুলতে পারে।

আরও পড়ুন: অন্য জাতের সঙ্গে সঙ্গম, তাতে জন্মানো সন্তানরাই বদলে দিচ্ছে বংশের স্বভাব-চরিত্র! এ কী দেখলেন গবেষকরা?

হজমশক্তি বাড়াতে অব্যর্থ

রাতে খাওয়ার পর অনেকেরই পেট ভার হয়ে থাকা বা গ্যাস-অম্বলের সমস্যা দেখা দেয়। লবঙ্গের মধ্যে থাকা ‘ইউজেনল’ নামক যৌগটি হজমে সহায়ক উৎসেচকগুলির ক্ষরণ বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে, খাবার দ্রুত হজম হয় এবং পেট ফাঁপা, গ্যাস বা বুকজ্বালার মতো সমস্যা থেকে রেহাই মেলে। রাতে শোয়ার আগে লবঙ্গ ভেজানো জল খেলে তা পাচনতন্ত্রকে শান্ত রাখে এবং মেটাবলিজম বা বিপাকক্রিয়াকেও উন্নত করে। যাঁরা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভোগেন, তাঁরাও এই ঘরোয়া টোটকায় বিশেষ উপকার পেতে পারেন।

আরও পড়ুন: ৭ কোটি শুক্রাণু চাই! চাহিদা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ৫০ সঙ্গীর সঙ্গে একটানা সঙ্গম রানিমার! কোথায় থাকে এই রানি?

মুখগহ্বরের প্রহরী

রাতে আমরা যখন ঘুমিয়ে থাকি, তখন মুখে জীবাণুর প্রকোপ বাড়ে। এর ফলে সকালে মুখে দুর্গন্ধ বা দাঁতের সমস্যা দেখা দিতে পারে। লবঙ্গ এক শক্তিশালী জীবাণুনাশক (অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল) হিসেবে কাজ করে। রাতে খাবার পর লবঙ্গ জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিলে বা সেই জল পান করলে মুখের ভিতরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াগুলি ধ্বংস হয়। এটি দাঁতের ব্যথা, মাড়ির সমস্যা এবং পাইরিয়ার মতো রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি, গলা ব্যথা বা খুসখুসে কাশির উপশমেও এর জুড়ি মেলা ভার।

 

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও মানসিক স্বস্তি

লবঙ্গ অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভান্ডার। এর মধ্যে থাকা বিভিন্ন উপাদান শরীরের দূষিত পদার্থ বা টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে এবং কোষকে সজীব রাখে। রাতে ঘুমোনোর সময় আমাদের শরীর মেরামতির কাজ করে। এই সময়ে লবঙ্গ জল পান করলে তা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে কয়েক গুণ বাড়িয়ে তোলে। এর ফলে ঘন ঘন ঠান্ডা লাগা বা অন্যান্য সংক্রমণের আশঙ্কা কমে। শুধু তাই নয়, লবঙ্গের সুগন্ধ ও এর মধ্যে থাকা যৌগ স্নায়ুকে শান্ত করে। ফলে মানসিক চাপ কমে এবং রাতে গভীর ও স্বস্তিদায়ক ঘুম হয়।

কী ভাবে বানাবেন এই পানীয়?

এই পানীয় প্রস্তুত করা অত্যন্ত সহজ। এক গ্লাস ঈষদুষ্ণ জলে ২-৩টি লবঙ্গ ফেলে দিয়ে ১০-১৫ মিনিট ঢেকে রাখুন। লবঙ্গের সমস্ত পুষ্টিগুণ জলে মিশে গেলে সেই জল ছেঁকে নিয়ে রাতে শুতে যাওয়ার আগে পান করুন। স্বাদের জন্য এর সঙ্গে এক চামচ মধুও মেশানো যেতে পারে, তবে ডায়াবেটিসের সমস্যা থাকলে মধু এড়িয়ে চলাই ভাল।

সুতরাং, বহুমূল্য টনিক বা ওষুধের পিছনে না ছুটে, রান্নাঘরের এই সহজলভ্য মশলাকেই কাজে লাগান। তবে, কোনও গুরুতর শারীরিক সমস্যা থাকলে বা অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই এই পানীয় পান করা উচিত।