আজকাল ওয়েবডেস্ক: বাঙালির সরস্বতী পুজোর সঙ্গে কুলের এক অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক। একদিকে কুল ছাড়া পুজো অসম্ভব আবার অন্যদিকে পুজোর আগে কুল খাওয়াও নিষেধ। তবে ছেলেবেলায় লোভে পড়ে পুজোর আগেই সুস্বাদু কুল মুখে দেয়নি এমন বাঙালিও খুঁজে পাওয়া কঠিন। কুল নিয়ে এমন বিধিনিষেধের কারণ কী? নেপথ্যে কি কোনও ধর্মীয় কারণ? নাকি বিষয়টি নিতান্তই লোকাচার?
শাস্ত্রমতে, দেবী সরস্বতীকে তুষ্ট করার জন্য মহামুনি ব্যাসদেব বদ্রিকাশ্রমে তপস্যা শুরু করেছিলেন। কিন্তু তপস্যা শুরুর আগেই দেবী মুনিকে একটি শর্ত দেন। ব্যাসদেবের তপস্যাস্থলের সামনে থাকা একটি কুলের বীজের দিকে নির্দেশ করে জানান, যেদিন ওই কুলবীজ অঙ্কুরিত হয়ে গাছ হবে এবং সেই গাছের কুল পেকে ব্যাসদেবের মাথায় পড়বে, সেই দিন তাঁর তপস্যা পূর্ণ হবে এবং দেবী তুষ্ট হবেন। ব্যাসদেবও সেই শর্ত মেনে নিয়ে তপস্যা শুরু করেন। দীর্ঘ তপস্যার পর একদিন সেই গাছের কুল ব্যাসদেবের পড়ে এবং মুনি উপলব্ধি করেন যে, দেবী তাঁর প্রতি তুষ্ট হয়েছেন।
শাস্ত্রমতে যে দিন এই ঘটনা ঘটে সে দিনটি ছিল পঞ্চমী। সে দিনই ব্যাস দেবী সরস্বতীকে কুল নিবেদন করে পুজো দেন এবং ব্রহ্মসূত্র রচনা শুরু করেন। এই ঘটনার কথা মাথায় রেখেই সরস্বতী পুজোর আগে কুল খেতে নিষেধ করা হয়।
এ তো গেল ধর্মীয় কারণ। অনেকেই মনে করেন স্বাস্থ্যগত দিক থেকেও সরস্বতী পূজার আগে কুল খাওয়া ঠিক নয়। কারণ মাঘ মাসের মাঝামাঝি সময়ের আগে কুল কাঁচা থাকে এবং কশযুক্ত হয়। ফলে কাঁচা বা কশযুক্ত কুল খেলে নানা রকমের শারীরিক সমস্যা হতে পারে। এ ছাড়া কুল খেলে ইয়োসিনোফিল বেড়ে যেতে পারে, ফলে যাঁদের সর্দি কাশির সমস্যা রয়েছে তাঁদের কুল খাওয়া ঠিক নয়।
