আজকাল ওয়েবডেস্ক: মঙ্গলের মহামিছিল, সেখান থেকে কেন্দ্রকে তীব্র কটাক্ষ, তুলোধনা। সুর চড়িয়ে, তীব্র হুঁশিয়ারি দিয়ে কেন্দ্রকে সাফ বার্তা দিয়েছেন মমতা-অভিষেক, একজন বৈধ ভোটারের নাম বাদ গেলে, মেনে নেবে না তৃণমূল কংগ্রেস। একই সঙ্গে যে প্রশ্ন তৃণমূল কংগ্রেস বারেবারে করছে, তা হল, কেন এই তাড়াহুড়ো? বিহার হোক কিংবা পশ্চিমবঙ্গ, কেন ঠিক ভোটের প্রাক্কালে, এসআইআর অর্থাৎ ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন? এই অল্প সময়কালে কতটা নির্ভুল হবে প্রক্রিয়া প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও। মঙ্গলে এসআইআর ছাড়াও, কেন্দ্রের আরও একাধিক পদক্ষেপ, যা নানা সময়ে, নানা ভাবে মানুষ কে হয়রানিতে ফেলেছে বলে দাবি বাংলার শাসক দলের, তা নিয়ে তীব্র সুর চড়িয়েছেন দলের সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি। তালিকায় নোটবন্দি থেকে আধার কার্ড লিঙ্ক।
ঠিক তার পরের দিন, বুধবার সকালে তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির বাড়িতে পৌঁছে গেলেন নির্দিষ্ট বুথের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিএলও। পৌঁছে গেল এনুমারেশন ফর্ম। সূত্রের খবর তেমনটাই।
মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন ভবানীপুর বিধানসভার অন্তর্গত। হরিশ মুখার্জি রোডে বাড়ি হওয়ার দরুণ প্রতিবার তিনি নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন মিত্র ইনস্টিটিউশনে গিয়ে। নির্দিষ্ট বুথের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিএলও বুধবার সকালে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে গিয়ে, তাঁর এবং বাড়ির আরও ১৬ জনের জন্য এনুমারেশন ফর্ম দিয়ে এসেছেন, সূত্রের খবর তেমনটাই। একইসঙ্গে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী ওই ফর্ম গ্রহণ করেছেন। জানিয়েছেন, ফর্ম পূরণের কাজ সম্পন্ন হলে, খবর দেওয়া হবে। তখনই আবার দায়িত্বপ্রাপ্ত বিএলও তা নিয়ে যাবেন বলে জানা গিয়েছেন সূত্র মারফত।
তবে, এসআইআর প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, মমতার মঙ্গলের মহামিছিল শেষের বক্তব্য। গোটা বক্তব্য জুড়ে মমতা অভিযোগ করলেন গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে। বোঝালেন, কেবল এসআইআর নয়, নানা ভাবে, নানা সময়ে, কীভাবে এক একটি নিয়ম করে, সাধারণ মানুষকে অপদস্থ করছে কেন্দ্র। আর তাতে ফলাফল হয়েছে কী। তালিকায় যেমন এনআরসি, তেমনই নোটবন্দী, আধারর কার্ড লিঙ্ক। সাম্প্রতিককালে দেশের নানা জায়গায় বাংলায় কথা বলা নিয়ে, বহু বাঙালিকে বাংলাদেশি সন্দেহে ব্যাপক অত্যাচারের মুখোমুখি হতে হয়েছে। প্রাণ গিয়েছে একাধিক। এদিন মমতা বলেন, 'মনে রাখবেন বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশি হয় না। উর্দু বললেই সে পাকিস্তানি না। যে যেখানে কাজ করতে যাচ্ছে সবাইকে বাংলাদেশি বলা হচ্ছে। এই মূর্খ, অর্ধশিক্ষিতদের মাথায় কিছু ছিল না…স্বাধীনতার ইতিহাস এরা জানে না। স্বাধীনতার সময় এরা কোথায় ছিল? আগে তো বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত কিন্তু একই ছিল।'
মঙ্গলবার, জনগনকে চাপে ফেলে কেন্দ্রের নানা নিয়ম নিয়ে তোপ দাগেন মমতা। বলেন 'নোটবন্দির পরে, এবার জনবন্দি।' মমতার বক্তব্য, বিজেপি একমাত্র চক্রান্ত করে, সাধারণের ভোটাধিকার কেড়েই তারা ভোট জিততে পারে। তিনি বলেন, 'জোটে জিতবে, ঘোঁটে জিতবে কিন্তু ওরা ভোটে জিতবে না। ওদের কত বাবু, বড় বাবু, ছোটো বাবু…আমি চেয়ারকে সম্মান করি। কিন্তু দালালিরও একটা সীমা থাকে।'
আধার কার্ড প্রসঙ্গেও গতকাল কেন্দ্রকে চরম তুলোধনা করেন মমতা। আধার কার্ড এসআইআর এর এগারোটি নথির সঙ্গেই পরে ১২ নম্বর নথি হিসেবে যুক্ত হলেও, তা নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে ধরা হবে না বলেই জানানো হয়েছে, এদিন মমতার প্রশ্ন, 'হাজার টাকা দিয়ে আধার কার্ড তৈরি করিয়েছ, কিন্তু বলছ নাগরিকত্বের প্রতীক নয়।' তাহলে চলবে কীভাবে? কেনই বা এত প্রক্রিয়া চলছে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
