আজকাল ওয়েবডেস্ক: ফের কাজের মাঝে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন রাজ্যের এক বিএলও। এবার খাস কলকাতায়। প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য, রাসবিহারীর ৯৩নম্বর ওয়ার্ডের ২৫৬ নম্বর পার্টের BLO প্রদীপ ভুক্তার, কাজ করার মাঝেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে যাদবপুরের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
প্রদীপ ভুক্তারের আগেই, রাজ্যে অসুস্থ হয়েছেন একাধিক বিএলও। অনেকেই অসুস্থ হয়েও, কাজ চালিয়ে গিয়েছেন হাসপাতালে বসে। প্রতিটি ক্ষেতেই পরিবারের অভিযোগের তির এসআইআর-এর অতিরিক্ত কাজের চাপের দিকে। বিএলও দের হয়রানি নিয়ে সরব হয়েছে রাজ্যের শাসক দলও।
এর আগেই, গতকাল বনগাঁ গোপালনগরের বিএলও সুশান্ত টিকাদার অসুস্থ হয়ে পড়েন কাজের মাঝেই। জানা যায়, বাড়িতে বসে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের কাজ করছিলেন তিনি৷ আচমকা তাঁর বাড়ির লোকজন দেখেন কাগজপত্র সমেত মাটিতে লুটিয়ে পড়েছেন তিনি। আচমকা তাঁকে অসুস্থ হয়ে পড়তে দেখে আতঙ্কিত হয়ে, চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন পরিবারের সদস্যরা। অচেতন অবস্থায় বিএলও কে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে দেখে অন্য হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। পরিবারের সদস্যেরা জানিয়েছেন, এসআইআরের কাজ করতে করতে হৃদরোগে আক্রান্ত হন উত্তর চব্বিশ পরগনার গোপালনগরের বিএলও সুশান্ত টিকাদার।
জানা গিয়েছে, সুশান্ত সোমবার দুপুরে বাড়িতে বসে এনুমারেশন ফর্ম আপডেটের কাজ করছিলেন। বনগাঁর গোপালনগর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১০৬ নম্বর পার্টের বিএলও ছিলেন সুশান্ত টিকাদার। কাজ করতে করতে আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এরপর বাড়ির লোকজন তাঁকে বনগাঁ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে নদিয়ায় কল্যাণী গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন।
৪ নভেম্বর থেকে এসআইআর চলছে। গত কয়েকদিনে, বারে বারে উঠে এসেছে, নানা ধরনের ঘটনা। তার মধ্যে অন্যতম, অতিরিক্ত কাজের চাপ বিএলও'দের উপর। রাজ্যের একাধিক জায়গায় কাজের চাপ সহ্য করতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়ার অভিযোগ সামনে এসেছে।
এর আগে, আধারমানিক এপিসি কলোনি (জে.এস.এফ.পি) স্কুলের শিক্ষক এবং মসলন্দাপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বুথ নং-২০৩ এর বিএলও সুমন কুমার দাস (৪৭ বছর) রবিবার সকাল সাড়ে এগারটা নাগাদ, এনুমারেশন ফর্ম জমা নেওয়ার সময় আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে ১২.৫৫ মিনিটে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।
রবিবার সকালেই জানা যায়, চোপড়া ব্লকে এসআইআর সংক্রান্ত অতিরিক্ত কাজের চাপে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেন এক বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও)। অসুস্থ অবস্থাতেই হাসপাতালের বেডে বসে এনুমারেশন ফর্ম আপলোড করতে দেখা যায় তাঁকে। ঘটনাটি সামনে আসতেই প্রশাসনিক মহলে চাঞ্চল্য তৈরি হয়।
চোপড়া ব্লকের জাগিরবস্তি এলাকার ১৮৮ নম্বর বুথের বিএলও মুস্তফা কামাল জানান, গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই তিনি টানা পরিশ্রম করছেন। মোট ৯১৮টি ফর্ম বিলি করতে হয়েছে তাঁকে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফর্ম সংগ্রহ, তার পর রাতে জেগে সেই ফর্ম আপলোড দুইয়ের চাপেই ক্লান্ত হয়ে পড়েন তিনি। ইতিমধ্যেই অর্ধেকের বেশি ফর্ম আপলোড করা হয়ে গেছে। তবে দৌড়ঝাঁপ, মানসিক চাপ ও বিশ্রামের অভাবে শরীর ভেঙে পড়ে তাঁর।
