আজকাল ওয়েবডেস্ক: শিয়ালদহ বিভাগ, পূর্ব রেলওয়ের টিকিট চেকিং ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যে যে “ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন ব্যাজ” চালু করেছে, তার ফলে জাল ট্রাভেলিং টিকিট এক্সামিনার (টিটিই) প্রতারণা রোধে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে। নতুন এই ব্যাজ ব্যবস্থা চালুর পর থেকেই ভুয়ো টিটিই সেজে যাত্রীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে অর্থ আদায়ের বহু ঘটনা কার্যত বন্ধ হয়েছে। রেল কর্মকর্তাদের মতে, এই উদ্যোগ বিভাগীয় নিরাপত্তা এবং যাত্রী সুরক্ষায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
ডিআরএম শিয়ালদহ রাজীব সাক্সেনার নির্দেশনায় এবং সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার (এসডিসিএম) জশরাম মীনার নেতৃত্বে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়। এই প্রক্রিয়ায় শিয়ালদহ বিভাগের আওতাধীন সকল কর্তব্যরত টিটিই-দের একটি বিশেষ নকশার ও উচ্চমানের আইডেন্টিফিকেশন ব্যাজ পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ব্যাজটিতে টিটিই-র নাম, পদবি, কর্মচারী নম্বর এবং বিভাগের স্বীকৃত চিহ্ন স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকে, যার ফলে যাত্রীদের পক্ষে প্রকৃত রেল কর্মীদের শনাক্ত করা আগের তুলনায় অনেক সহজ হয়েছে।
রেল সূত্রে জানা গেছে, এই ব্যাজ ব্যবস্থার ফলে গত কয়েক দিনে অন্তত বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে ভুয়ো টিটিই চক্রের সদস্যদের ধরতে সক্ষম হয়েছেন রেল কর্মী ও সতর্ক যাত্রীরা। একাধিক ঘটনায় যাত্রীরা সন্দেহজনক ব্যক্তিদের ব্যাজ না দেখাতে পারায় সঙ্গে সঙ্গে রেল পুলিশকে খবর দেন। তাদের তৎপরতায় কয়েকজন প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়। রেল কর্মকর্তারা মনে করছেন, এই ধরনের পদক্ষেপ প্রতারণা রোধে যাত্রীদের ভূমিকা ও সচেতনতার গুরুত্বও তুলে ধরে।
শিয়ালদহ বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই উদ্যোগ কেবল ভুয়ো টিটিই রোধই নয়, বরং সামগ্রিকভাবে রেল প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বাড়ানোর লক্ষ্যেই নেওয়া হয়েছে। ব্যাজ প্রণালী চালুর ফলে কর্মী শৃঙ্খলা এবং পরিষেবার মান উন্নত করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। যাত্রীরা এখন নির্ভয়ে টিটিই-র পরিচয় নিশ্চিত করে তবেই প্রয়োজনীয় নথি দেখাতে পারছেন, যা যাত্রী–রেলকর্মী সম্পর্কের বিশ্বাস আরও মজবুত করছে।
ভবিষ্যতে এই ব্যাজ ব্যবস্থার আরও উন্নয়ন এবং প্রযুক্তিগত সমর্থন যোগ করার পরিকল্পনাও রয়েছে বলে সূত্রের খবর। রেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে যাত্রীদের অনুরোধ করা হয়েছে, কোনও সন্দেহজনক ব্যক্তিকে টিটিই পরিচয়ে দেখতে পেলে তার ব্যাজ পরীক্ষা করে দেখতে এবং প্রয়োজনে রেল পুলিশ বা স্টেশন কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে জানানোর।
শিয়ালদহ বিভাগের দাবি, ইউনিক ব্যাজ প্রকল্পটি টিকিট চেকিং ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা, দুর্নীতি দমন এবং নিরাপদ ভ্রমণে নিশ্চিতভাবেই নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে।
