আজকাল ওয়েবডেস্ক: মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর থেকেই মহিলাদের উন্নতিকল্পে নিয়েছেন একের পর এক পদক্ষেপ। কখনও তাঁদের আর্থিক উন্নতির জন্য, আবার কখনও শিক্ষার উন্নতির জন্য। মমতা ব্যানার্জির এই দীর্ঘ প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দিয়ে বুধবার জাপানের ওকায়ামা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে প্রদান করল 'সাম্মানিক ডি. লিট' উপাধি। এবিষয়ে ওকায়ামা'কে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটি (এসএনইউ)।

বুধবার ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহে ওকায়ামা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ড. ইয়াসুতোমো নাসু এবং এসএনইউ'র আচার্য সত্যম রায়চৌধুরী যৌথভাবে এই মানপত্র তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির হাতে। সাম্মানিক এই উপাধি নেওয়ার পর মমতা জানান, পড়ুয়া-সহ সকল সাধারণ মানুষকে তিনি এই সম্মান উৎসর্গ করছেন। উল্লেখ্য, ওকায়ামা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই প্রথম এশিয়াতে কোনও মহিলাকে এই উপাধিতে সম্মানিত করা হল।

 রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ছাড়াও এদিনের অনুষ্ঠানে ছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, ডিজি রাজীব কুমার, শিক্ষাসচিব বিনোদ কুমার, কলকাতা পুলিশের কমিশনার মনোজ ভার্মা, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আশুতোষ ঘোষ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য এবং রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী ব্যানার্জি। ছিলেন ওকায়ামা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য প্রতিনিধিরা। সম্মান প্রদানের আগে, এদিন আয়োজিত হয়েছিল মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও। 

এসএনইউ'র আচার্য সত্যম রায়চৌধুরীকে বিশেষ ধন্যবাদ জানিয়ে এদিন মমতা বলেন, 'আমি খুবই খুশি এসএনইউ এবং ওকায়ামা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার জন্য একসঙ্গে কাজ করছে। আমাকে যখন এটার বিষয়ে ওকায়ামা জানায় তখন আমি তাঁদের জানিয়েছিলাম সময়ের অভাবে আমি যেতে পারব না। কিন্তু তাঁরা চিঠি লিখে জানায় যে তাঁরাই আসবেন। এতজন সম্মানিত ব্যক্তি এখানে এসেছেন। আমি কথা দিচ্ছি সামনের বছর আমি জাপান যাব।'

ভারত ও জাপানের মধ্যে সম্পর্কের গভীরতা বোঝাতে গিয়ে এদিন মমতা বলেন, 'রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, স্বামী বিবেকানন্দ, রাসবিহারী বসুরা সকলেই জাপানে গিয়েছেন। অবশ্যই নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর কথা ভুললে চলবে না। যাঁকে জাপান সরকার ব্রিটিশ বিরোধী লড়াইয়ে সহযোগিতা করেছিল। জাপানের অনেক সংস্থা এখানে কাজ করছে। ভারতের সঙ্গে জাপানের সম্পর্ক ১০০ বছরের বেশি পুরনো। খুবই সুন্দর একটি দেশ।' মমতার কথায়, 'দুটো দেশ আলাদা হতে পারে কিন্তু আমাদের রক্ত এক।'

মুখ্যমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে এদিন এসএনইউ'র আচার্য সত্যম রায়চৌধুরী বলেন, 'আজ একটি ঐতিহাসিক দিন। যা স্মরণ করে একজনের পরিশ্রম, অবদান এবং অদম্য মানসিকতা। বাংলা আজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির দুরন্ত নেতৃত্বে এগিয়ে চলেছে। একইসঙ্গে ওকায়ামা বিশ্ববিদ্যালয়কে ধন্যবাদ জানাই এই সম্মান দেওয়ার জন্য।'

এদিন ওকায়ামা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ড. ইয়াসুতোমো নাসু বলেন, 'মমতা ব্যানার্জিকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন। তিনি মহিলা ও শিশুদের সঙ্গে দারিদ্র দূরীকরণের জন্য প্রচুর উদ্যোগ নিয়েছেন। বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় মহিলা ও শিশুদের উন্নতিতে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। তাঁর এই অসাধারণ কাজের জন্য ওকায়ামা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে এই ডি.লিট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। আজকের এই অনুষ্ঠান হল ইন্দো-জাপান বন্ধুত্বের একটি উদাহরণ। একইসঙ্গে বাংলা ও ওকায়ামা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বন্ধুত্বের উদাহরণ।'