আজকাল ওয়েবডেস্ক: খাস কলকাতায় ফের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। এবার ঘটনাস্থল বানতলা। শনিবার সন্ধ্যায় চর্মনগরীতে এক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। অগ্নিকাণ্ডে কারখানার একাধিক শ্রমিক আহত হয়েছেন। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন সকলে।
সূত্রের খবর, চর্মনগরীর ৯ নম্বর জোনের ৬৫ নম্বর প্লটের একটি কারখানায় দাউদাউ করে আগুন জ্বলতে দেখেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকলের একাধিক ইঞ্জিন। দ্রুত গতিতে আগুন নেভানোর কাজ চলছে। কীভাবে আগুন লাগল, তা এখনও জানা যায়নি। তবে দমকলের প্রাথমিক অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লেগেছে কারখানায়।
আরও জানা গেছে, কারখানার যে ঘরটি থেকে আগুন ছড়িয়েছে, সেখানে মজুত করা ছিল চামড়ার জিনিস। যার জেরে আগুন দ্রুত গতিতে গোটা কারখানায় ছড়িয়ে পড়ে। সেই সময় কয়েকজন শ্রমিক কারখানায় কাজ করছিলেন। আগুন দেখেই তাড়াহুড়ো করে পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু দগ্ধ হন কয়েকজন শ্রমিক। আহত কয়েকজনের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে হাজির রয়েছে পুলিশ বাহিনী।
গত সপ্তাহে এজরা স্ট্রিটে ভয়ঙ্কর অগ্নিকাণ্ড। দমকল সূত্রে জানা গেছে, শনিবার ভোর পাঁচটা নাগাদ লালবাজারের কাছে এজরা স্ট্রিটের একটি ইলেকট্রিক দোকানে আগুন লাগে। ওই দোকানের দ্বিতীয় তলায় আগুন লাগার পরে তা ছড়িয়ে পড়ে। বৈদ্যুতিন সামগ্রী থাকায় ওই আগুন আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন দমকল কর্মীরা।
ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিল দমকলের অন্তত ২০টি ইঞ্জিন। ল্যাডারের সাহায্য নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলে। ঘিঞ্জি এলাকা হওয়ায় বিপুল ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, শনিবার ভোর ৫টা নাগাদ গুদামে আগুন লেগে যায়। বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি এবং প্রচুর বৈদ্যুতিক তার ছিল গুদামে। মজুত করা ছিল অনেক দাহ্য পদার্থ। ফলে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ভাল করে কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই আগুনের লেলিহান শিখা গ্রাস করে আকাশ। চারদিক ঢেকে যায় কালো ধোঁয়ায়।
কীভাবে এই আগুল লাগল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে বৈদ্যুতিন সামগ্রী থেকেই আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। কেউ কেউ শর্ট সার্কিটের সম্ভাবনার কথা বলছেন। দমকল এখনও কিছু নিশ্চিত করতে পারেনি।
এর আগে গত ১১ নভেম্বর বারুইপুর থানার অন্তর্গত বংশী বটতলা বাইপাস সংলগ্ন এলাকায় মঙ্গলবার ভোররাতে বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল তিনটি কাঠের দোকান। সোমবার ভোর প্রায় সাড়ে তিনটে নাগাদ আগুন লাগে বলে জানা গিয়েছে।
ঘিঞ্জি এলাকা হওয়ায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। তড়িঘড়ি খবর দেওয়া হয় বারুইপুর দমকল বিভাগে। স্থানীয়রাও আগুন নেভানোর কাজে প্রাথমিক ভাবে হাত লাগান।
জানা গিয়েছে, দমকলের একটি ইঞ্জিন দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ শুরু করে। আদি গঙ্গা থেকে জল তুলে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে দমকল সূত্রে।
আগুনের তীব্রতায় একটি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে, যার জোরালো শব্দে ঘুম ভেঙে যায় আশপাশের বাসিন্দাদের। আতঙ্কে এলাকার মানুষজন রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আসেন শিখরবালি পঞ্চায়েতের প্রধান সুজয় সাফুই। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বারুইপুর থানার পুলিশও। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, পুড়ে যাওয়া তিনটি দোকানের মালিক আফতাব আনসারী, মোজাফ্ফর আনসারী ও ইয়াসিন আনসারী। তাঁদের বাড়ি কলকাতার পার্ক সার্কাসে।
দোকানগুলিতে কর্মরত শ্রমিকরা বিহারের বাসিন্দা এবং তাঁরা বর্তমানে ভোট দিতে গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে স্থানীয় সূত্রে। আগুন লাগার সঠিক কারণ এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগে থাকতে পারে।
আগুনের তীব্রতায় দোকানের সামনে থাকা কাঁঠাল গাছের ডাল ও পাতা পর্যন্ত পুড়ে গেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও।
