গোপাল সাহা: কলকাতায় ফের সামনে এল সরকারি চাকরির নামে বড়সড় প্রতারণার ঘটনা। ভুয়ো পুলিশের পরিচয় দিয়ে সিভিক ভলান্টিয়ার পদে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভনে এক যুবকের কাছ থেকে ৩ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে দুই অভিযুক্তকে। তাঁদের নাম চণ্ডীচরণ শিকারী ও অমিত সর্দার। ঘটনাটি এন্টালি থানার চাটুবাবু লেন এলাকার। অভিযোগ প্রায় দশ মাস ধরে চলেছিল এই প্রতারণার নাটক।
অভিযোগকারী সচিন কুমার সাউ জানান, ২০২৪ সালের ২৮ জানুয়ারি থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে অভিযুক্ত চণ্ডীচরণ ও অমিত সর্দার। দু’জনই দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের বাসিন্দা। অভিযোগ, চণ্ডীচরণ নিজেকে কলকাতা পুলিশের অফিসার বলে পরিচয় দিতেন এবং দাবি করতেন পুলিশে তাঁর প্রভাব রয়েছে। তিনি নাকি সহজেই সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরি পাইয়ে দিতে পারবেন।
প্রথমে সন্দেহ না করলেও ধীরে ধীরে বিশ্বাস অর্জন করে অভিযুক্তরা। তারপর সচিনের ওপর চাপ সৃষ্টি করে মোট ৩ লক্ষ টাকা আদায় করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রতারণা চক্রটি অত্যন্ত সুনিয়ন্ত্রিত ও পরিকল্পিত ছিল। টাকা নেওয়ার পর অভিযুক্তরা চাকরি দেয়নি, বরং কিছুদিন পর যোগাযোগ বন্ধ করে উধাও হয়ে যায়। এরপর পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগে আদালতে যান প্রতারিত ব্যক্তি। আদালতের নির্দেশে ২৫ নভেম্বর এন্টালি থানায় আনুষ্ঠানিকভাবে মামলা রুজু হয়।
পুলিশের তদন্তে দেখা গেছে, দুই অভিযুক্তের ঠিকানা দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর থানার ধোসা এলাকার গাব্বেরিয়া গ্রাম। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই তাঁরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। লালবাজারের সূত্রে জানা গেছে, এটি একটি সুপরিকল্পিত প্রতারণা চক্র, যারা সরকারি চাকরির নামে আরও বহু মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া চক্রটির সঙ্গে অন্য কেউ যুক্ত আছে কি না, তাও তদন্তে পর্যবেক্ষণে রয়েছে।
সরকারি চাকরির লোভ দেখিয়ে প্রতারণার ঘটনা নতুন নয়, তবে এই ঘটনায় ভুয়ো পরিচয়, নকল সরকারি সিল ও জাল নিয়োগপত্রের ব্যবহার পুলিশের কাছে অত্যন্ত উদ্বেগজনক। তদন্তে আরও বিপজ্জনক তথ্য উঠে আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
