আজকাল ওয়েবডেস্ক: শেষ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর জন্য দিল্লিকে চিঠি দিল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। যা ঢাকার কূটনৈতিক পদক্ষেপ বলেই মনে করা হচ্ছে। এই চিঠি পাঠানোর বিষয়টি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, "আমরা শেখ হাসিনা ঢাকায় ফেরৎ পাঠানোর জন্য জানিয়েছি ভারতকে। বিচার প্রক্রিয়ার মুখোমুখি করানোর জন্যই আমরা তাঁকে (শেখ হাসিনা) ফেরত চাইছি বলে জানিয়েছি। কূটনৈতিক পত্রের মাধ্যমে ভারত সরকারকে সবটা জানানো হয়েছে।"
এর আগে, সোমবার সকালে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, "বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ অগাস্ট ভারতে পালিয়ে যাওয়া পদচ্যূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতের বিদেশমন্ত্রকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।" জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর দাবি, ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে একটি প্রত্যর্পণ চুক্তি রয়েছে। সেই সূত্রেই শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা যেতে পারে।
উল্লেখ্য, প্রবল ছাত্র আন্দোল ও দেশব্যাপী ক্ষোভের কারণে ৭৭বছর বয়সী আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা গত ৫ অগাস্ট বাংলাদেশে ছাড়েন। ঢাকা থেকে তিনি ভারতে আসেন। ব্যাপক আন্দলের ফলে হাসিনার দীর্ঘ একটানা ১৬ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। ঢাকা ভিত্তিক আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) শেখ হাসিনা এবং তাঁর মন্ত্রী, উপদেষ্টা এবং তৎকালীন সামরিক ও প্রশাসনিক আধিকারিকদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। এদের বিরুদ্ধে "মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যা"র অভিযোগ রয়েছে।
চলতি মাসেই ঢাকায় গিয়েছিলেন ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রি। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা তথা নোবেলজয়ী ডঃ মহম্মদ ইউনূসের সঙ্গে কথা বলে সেদেশে সংখ্যালঘুদের নির্যাতন ও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন বিদেশ সচিব। সেই সফরে ঢাকায় উভয় তরফের আলোচনা অত্যন্ত খোলামেলা, অকপট এবং গঠনমূলক ছিল বলে জানিয়েছিলেন বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রি। তার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তনের জন্য ঢাকার কূটনৈতিক বার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যবাহী।
বিদেশ সচিবের সফরকালে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান নিয়েও আলোচনা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা তখন বলেছিলেন, "আমাদের লোকেরা উদ্বিগ্ন কারণ তিনি (শেখ হাসিনা) সেখান থেকে অনেক বিবৃতি দিচ্ছেন। এতে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।" বিদেশ সচিবের সফরের আগে, হাসিনা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে টার্গেট করে মহম্মদ ইউনূসকে "ফ্যাসিবাদী শাসন" চালানোর জন্য অভিযুক্ত করেছিলেন।
