আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভরদুপুরে ভরা রাস্তায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ। তাও আবার পাক সেনার সদর দপ্তরের অদূরেই। ভয়াবহ বিস্ফোরণের জেরে মৃত্যুমিছিল পাকিস্তানে। এখনও পর্যন্ত ১৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। 

 

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে পাকিস্তানের বালুচিস্তান প্রদেশের কোয়েটায়। মঙ্গলবার দুপুরে ভরা রাস্তায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের জেরে অন্ততপক্ষে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও ৩২ জন। 

 

সূত্রের খবর, এদিন দুপুরে কোয়েটায় জ়ারগুন রোডে পাক সেনার ফ্রন্টিয়ার কোর (এফসি)-এর সদর দপ্তরের অদূরেই বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটেছে। জোরালো বিস্ফোরণের জেরে রাস্তায় ছিটকে পড়েন পথচলতি বহু মানুষ। আশেপাশের একাধিক বাড়িতেও ফাটল ধরে যায়। 

 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের আগে ওই এলাকাতেই গুলির আওয়াজ পাওয়া গিয়েছিল। কয়েক মিনিট পরেই বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটেছে। আত্মঘাতী বিস্ফোরণ কিনা তাও খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই ওই এলাকা বিশাল পুলিশ বাহিনী ও সেনাবাহিনী ঘিরে ফেলেছে। জোরকদমে চলছে তদন্ত। 

 

বিস্ফোরণের জেরে ঘটনাস্থলেই ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন পাক সেনা কর্মী। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারার আশঙ্কা রয়েছে। অনেকেই গুরুতর আহত হয়েছেন। এই হামলার নেপথ্যে কোনও জঙ্গি সংগঠন জড়িত কিনা তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। গোটা বালুচিস্তান রাজ্যে এমারজেন্সি অ্যালার্ট জারি হয়েছে। 

 

আরও পড়ুন: মহাষ্টমীতে তীব্র গরম থেকে রেহাই, প্রবল বৃষ্টিতে ফের জলমগ্ন দিল্লি, বিমান চলাচল ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা

 

প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগেই খাইবার পাখতুনখোয়া গ্রামে হামলা চালিয়েছিল পাক বিমান বাহিনী। অন্তত আটটি বোমা ফেলেছিল পাক বাহিনী। তাতে প্রাণ গিয়েছে অন্তত ৩০ জনের। 

 

তথ্য, সোমবার খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে পাকিস্তানি বিমান বাহিনীর বিমান হামলায় নারী ও শিশু-সহ কমপক্ষে ৩০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতরা সকলেই বেসামরিক নাগরিক বলে তথ্য। জানা গিয়েছে, হামলা এবং বোমা বর্ষণের ঘটনা ঘটেছে রাতের অন্ধকারে। ২২ সেপ্টেম্বর রাত ২টোর দিকে পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান তিরাহ উপত্যকার মাতরে দারা গ্রামে আটটি এলএস-৬ বোমা ফেলেছে বলে তথ্য। 

 

স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, হামলায় আহত হয়েছেন আরও বহু বাসিন্দা। তাঁদের সকলের খোঁজ এখনও মেলেনি। জানা যায়নি মোট আহতের সংখ্যাও। ইতিমধ্যে বেশকিছু ভিডিও ভাইরাল হয়েছে ঘটনার। যদিও সেগুলির সত্যতা যাচাই করেনি আজকাল ডট ইন।

 

 তবে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে, ওই ভিডিওগুলি পাক হামলার। যেখানে দেখা গিয়েছে, ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে মৃতদেহ। উদ্ধারকারী দল ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও দেহ উদ্ধারের কাজ চালাচ্ছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা।

 

খাইবার পাখতুনখোয়ায় অতীতে অনেক সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান হয়েছে, যেখানে ওই একই অঞ্চল থেকে বহু বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (PICSS) নামে একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক কর্তৃক প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে পাকিস্তানের সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা বেড়েছে। যা আগের মাসের তুলনায় ৪২ শতাংশ বেশি। 

 

তথ্য, দেশব্যাপী কমপক্ষে ৭৪টি সন্ত্রাসী হামলা রেকর্ড করা হয়েছে, যার ফলে ৯০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে খাইবার পাখতুনখোয়া সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তালিকায় খাইবার পাখতুনখোয়ার পরেই রয়েছে বালুচিস্তান।