আজকাল ওয়েবডেস্ক: পারকিনসন রোগ মূলত মস্তিষ্কের একটি স্নায়ুরোগ, যা মস্তিষ্কের কার্যকারিতা এবং স্নায়ু কোষের উপর প্রভাব ফেলে। এর ফলে শরীরের নড়াচড়া এবং অন্যান্য কার্যাবলী প্রভাবিত হয়।
মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট অঞ্চলের ক্ষতি: পারকিনসন রোগ মস্তিষ্কের "সাবস্ট্যান্টিয়া নিগ্রা" নামক অংশে স্নায়ু কোষের ক্ষতি করে, যা ডোপামিন নামক একটি রাসায়নিক পদার্থ তৈরি করে। ডোপামিন শরীরের নড়াচড়া নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ডোপামিন ঘাটতি: স্নায়ু কোষের ক্ষতির কারণে ডোপামিনের উৎপাদন কমে যায়, যা নড়াচড়া, পেশী নিয়ন্ত্রণ এবং অন্যান্য কার্যাবলী ব্যাহত করে।
অন্যান্য নিউরোট্রান্সমিটারের প্রভাব: ডোপামিনের পাশাপাশি, পারকিনসন রোগে অন্যান্য নিউরোট্রান্সমিটার যেমন অ্যাসিটাইলকোলিন, সেরোটোনিন এবং নরপাইনফ্রিনের মাত্রারও পরিবর্তন হতে পারে, যা রোগের উপসর্গগুলিকে আরও জটিল করে তোলে।
মস্তিষ্কের অন্যান্য অংশে প্রভাব: পারকিনসন রোগ শুধুমাত্র সাবস্ট্যান্টিয়া নিগ্রাতেই সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং মস্তিষ্কের অন্যান্য অংশ যেমন সেরেব্রাল কর্টেক্স, বেসাল গ্যাংলিয়া এবং অন্যান্য স্নায়ু পথের উপরও প্রভাব ফেলতে পারে, যা জ্ঞানীয়, আবেগিক এবং আচরণগত সমস্যাগুলির দিকে পরিচালিত করে।
অস্বাভাবিক প্রোটিন জমা: পারকিনসন রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মস্তিষ্কে আলফা-সিনুক্লিন নামক প্রোটিনের অস্বাভাবিক জমা দেখা যায়, যা "লুই বডি" নামে পরিচিত। এই প্রোটিন জমার কারণে স্নায়ু কোষের কার্যকারিতা আরও কমে যায়।
জ্ঞানীয় ও মানসিক পরিবর্তন: রোগের পরবর্তী পর্যায়ে, পারকিনসন রোগ জ্ঞানীয় দুর্বলতা, স্মৃতিশক্তি হ্রাস, বিষণ্ণতা, উদ্বেগ এবং হ্যালুসিনেশনের মতো মানসিক সমস্যার কারণ হতে পারে।
সংক্ষেপে, পারকিনসন রোগ মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশে প্রভাব ফেলে, যার ফলে নড়াচড়া, জ্ঞানীয় এবং মানসিক কার্যাবলী সহ শরীরের বিভিন্ন কার্যক্রম ব্যাহত হয়।
