আজকাল ওয়েবডেস্ক: জন স্টোনহাউস। ব্রিটেনের সাংসদের প্রাক্তন সাংসদ। যাঁর ব্যক্তিগত জীবন থেকে রাজনৈতিক জীবনের বর্ণময় যাত্রা বিশ্বের ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে। একজীবনে দু'বার মৃত্যুর কারণে স্টোনহাউসকে আজও স্মরণ করেন ব্রিটেনের মানুষ। যদিও প্রথমটি স্রেফ গা-ঢাকা দেওয়ার জন্যেই। 

প্রথম ঘটনাটি ঘটে ১৯৭৪ সালে। ব্যবসায়িক কাজে মিয়ামি গিয়েছিলেন স্টোনহাউস। সেখানে সাঁতার কাটতে কাটতে আচমকা নিখোঁজ হন তিনি। সমুদ্র সৈকতে পড়েছিল তাঁর জামাকাপড়। বহু খোঁজাখুঁজির পরেও স্টোনহাউসের খোঁজ পাওয়া যায়নি। স্ত্রী, এমনকী তদন্তকারীরাও ভেবেছিলেন, তিনি জলে ডুবে মারা গিয়েছেন। এদিকে মৃত্যুর গল্প ফেঁদে অস্ট্রেলিয়াগামী বিমানে চড়েন তিনি। সেই বছরেই ক্রিসমাসের দিন অস্ট্রেলিয়ায় তাঁর হদিশ মেলে জীবিত এবং একেবারে সুস্থ অবস্থায়।

রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অস্থিরতা, ব্যবসায় চরম ক্ষতি, ব্যক্তিগত জীবনের সমস্যা নিয়েও জর্জরিত ছিলেন স্টোনহাউস। নিজের পার্সোনাল সেক্রেটারির সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। একসময় তাঁকে কমিউনিস্ট গুপ্তচর বলেও অভিযুক্ত করা হয়েছিল। এরপরই ফ্রেডরিক ফরসিথের উপন্যাস ‘দ্য ডে অফ জ্যাকাল’-এর গল্প অনুকরণ করে নিজেকে মৃত প্রমাণ করে গা-ঢাকা দেন। 

 ১৯৬০ সালে আচমকা পোস্টমাস্টার জেনারেল হিসেবে নামডাক ছড়িয়ে পড়ে তাঁর। পরিস্থিতি আবারও বদলে যায় ১৯৬৯ সালে। কমিউনিস্ট চেকোস্লোভাকিয়ার গুপ্তচর হিসেবে তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়। তখন থেকেই স্টোনহাউসের রাজনৈতিক জীবনে আরও সমস্যার সৃষ্টি হয়। ব্যবসায় ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হন। 

১৯৭৫ সালের জানুয়ারি মাসে বিবিসির এর সাক্ষাৎকারে স্টোনহাউস বলেন, নতুন পরিচয় নিতে তিনি বাধ্য হয়েছিলেন। পুরনো স্টোনহাউসের উপর মারাত্মক মানসিক চাপ ছিল। চাপ থেকে মুক্তির কারণেই গা-ঢাকা দিয়েছিলেন। ১৯৭৬ সালে প্রতারণার অপরাধে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় তাঁকে। তিনবার হার্ট অ্যাটাকের পর তাঁর শাস্তির মেয়াদ কমে। ১৯৭৮ সালে স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়ে সেক্রেটারি শীলা বাকলেকে বিয়ে করেছিলেন জন স্টোনহাউস। ১৯৮৮ সালে ‘দ্বিতীয়বার’ এবং সত্যিকারের তার মৃত্যু হয়।