আজকাল ওয়েবডেস্ক: জাঙ্ক ডিএনএ হল সেই ডিএনএ অংশ যা প্রোটিন তৈরি করার জন্য কোড করে না এবং যার কার্যকারিতা এখনও সম্পূর্ণরূপে বোঝা যায়নি। এটিকে একসময় "অকেজো" বা "নিষ্প্রয়োজনীয়" বলে মনে করা হত, কিন্তু বিজ্ঞানীরা এখন বুঝতে পারছেন যে এর একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকতে পারে, যেমন জিন এক্সপ্রেশন নিয়ন্ত্রণ করা।
জাঙ্ক ডিএনএ সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
সংজ্ঞা: জাঙ্ক ডিএনএ হল নন-কোডিং ডিএনএ, যার অর্থ হল এটি প্রোটিন তৈরির জন্য নির্দেশাবলী ধারণ করে না।
পরিমাণ: মানব জিনোমের একটি বিশাল অংশ (প্রায় ৯৮%) জাঙ্ক ডিএনএ নিয়ে গঠিত।
কার্যকারিতা: একসময় ধারণা করা হতো যে জাঙ্ক ডিএনএ "অকেজো", কিন্তু এখন বিজ্ঞানীরা মনে করেন এটি জিন নিয়ন্ত্রণ, কোষের গঠন, এবং রোগের বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জাঙ্ক ডিএনএর মধ্যে রয়েছে সিউডোজিন (যেগুলি একসময় জিন ছিল কিন্তু এখন নিষ্ক্রিয়), ট্রান্সপোজন (যেগুলি জিনোম জুড়ে স্থানান্তরিত হতে পারে), এবং ভাইরাল সিকোয়েন্স।
গুরুত্ব: জাঙ্ক ডিএনএ-র ভূমিকা বোঝা মানুষের রোগ এবং বিবর্তন সম্পর্কে আরও ভালভাবে জানতে সাহায্য করতে পারে।

সংক্ষেপে, জাঙ্ক ডিএনএ শব্দটি ডিএনএর সেই অংশগুলিকে বোঝায় যেগুলি প্রোটিন তৈরি করে না, কিন্তু এর মানে এই নয় যে এটি অকেজো। এটি জিন নিয়ন্ত্রণের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে এবং রোগ এবং বিবর্তন অধ্যয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
তবে এই ডিএনএ নিয়ে এবার নতুন তথ্য সামনে উঠে এসেছে। সেখান থেকে দেখা গিয়েছে এই ডিএনএ মানুষের দেহে একটি বিরাট পরিবর্তন আনছে। যদি দেহে হঠাৎ করে কোনও রোগ চলে আসে তাহলে সেখান থেকে তাকে প্রতিরোধ করছে এই জাঙ্ক ডিএনএ। গবেষকরা মনে করছেন এবার তারা এই ডিএনএ নিয়ে পরীক্ষা করা শুরু করবেন। ফলে সেখান থেকে দেহে এর কাজের দিকটি অনেক বেশি স্পষ্ট করা হবে।
এতদিন ধরে মনে করা হত দেহের প্রধান গঠন হয় ডিএনএ দ্বারা। তবে সেখানে এবার নতুন এই জাঙ্ক ডিএনএ যে চুপিসাড়ে নিজের কাজটি করছে সেটিও সকলের সামনে চলে এসেছে।

ডিএনএ হল ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড এর সংক্ষিপ্ত রূপ। এটি একটি অণু যা জীবন্ত প্রাণীর কোষে পাওয়া যায় এবং এতে জেনেটিক তথ্য থাকে। এটি বংশগতির ধারক এবং কোষে প্রোটিন তৈরির জন্য নির্দেশাবলী সরবরাহ করে।
আরও পড়ুন: বাজারে আসছে নতুন সোনার কয়েন, মানতে হবে সরকারি এই নিয়ম, সমস্যায় পড়লেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা...
গঠন: ডিএনএ একটি দ্বিতন্ত্রী কাঠামো (double helix), যা দুটি পলিনিউক্লিওটাইড শৃঙ্খল দ্বারা গঠিত। প্রতিটি শৃঙ্খল নিউক্লিওটাইড নামক ছোট ছোট বিল্ডিং ব্লক দিয়ে তৈরি। প্রতিটি নিউক্লিওটাইড একটি চিনির অণু (deoxyribose), একটি ফসফেট গ্রুপ এবং একটি নাইট্রোজেন বেস (এডেনিন, গুয়ানিন, সাইটোসিন, এবং থাইমিন) দিয়ে গঠিত।
কাজ: ডিএনএ প্রোটিন সংশ্লেষণের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশাবলী ধারণ করে এবং জীবের বৈশিষ্ট্যগুলি নির্ধারণ করে। এটি জীবের বৃদ্ধি, প্রজনন এবং অন্যান্য জৈবিক প্রক্রিয়াগুলির জন্য অত্যাবশ্যক। ডিএনএ-এর গঠন এবং কার্যকারিতা জীববিজ্ঞানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি জীবের বংশগতির ধারা বজায় রাখতে, রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসায়, এবং ফরেনসিক বিজ্ঞানেও (যেমন, ডিএনএ প্রোফাইলিং) ব্যবহৃত হয়।
ডিএনএ টেস্টিং: ডিএনএ পরীক্ষা বিভিন্ন উদ্দেশ্যে করা হয়, যেমন - পিতৃত্ব নির্ধারণ, রোগ নির্ণয়, এবং ফরেনসিক তদন্ত। কিছু রোগের জন্য দায়ী জিনগুলি ডিএনএ-তে থাকে। ডিএনএ সিকোয়েন্সিং এবং টেস্টিংয়ের মাধ্যমে এই রোগগুলি নির্ণয় করা যায় এবং কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসা করাও সম্ভব। ডিএনএ পিতা-মাতা থেকে সন্তানদের মধ্যে স্থানান্তরিত হয়, যা বংশগতির মূল ভিত্তি।
