আজকাল ওয়েবডেস্ক: এইচবিও-র জনপ্রিয় সিরিজ গেম অফ থ্রোনসের কথা মনে আছে সকলের নিশ্চয়। নেড স্টার্কের সন্তানরা জঙ্গলের মধ্যে কয়েকটি নেকড়ের বাচ্চা খুঁজে পেয়েছিল। স্টার্কের মানা সত্ত্বেও সেগুলিকে লালনপালন করেছিল তারা। বিশেষ প্রজাতির সেই নেকড়েগুলি 'ডায়ার উলফ' নামে পরিচিত। হিংস্র প্রকৃতির এই প্রাণীগুলি আজ থেকে সাড়ে ১২ হাজার বছর আগে পৃথিবীর বুক থেকে হারিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আর নয়। বিজ্ঞানের দৌলতে ফের সেই নেকড়েগুলিকে বাঁচিয়ে তুলেছেন বিজ্ঞানীরা। তারা জানিয়েছেন, 'ডায়ার উলফ' বিশ্বের প্রথম প্রাণী যাকে বিলুপ্তি পথ থেকে ফিরিয়ে আনা হল।

টেক্সাসের একটি সংস্থা কলোসাল বায়োসায়েন্সেস এই অভাবনীয় কীর্তিটি করেছে। প্রাণীর জিনগত পরিবর্তন নিয়ে কাজ করে থাকে সংস্থাটি। একটি প্রেস বিবৃতির মাধ্যমে সংস্থার তরফ থেকে জানানো হয়ে, তিনটি নেকড়ের বাচ্চা জন্ম নিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থার তরফ থেকে বলা হয়েছে, "এটি বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির একটি মাইলফলক> বিলুপ্ত হওয়া প্রাণীদের ফিরিয়ে আনার প্রযুক্তির অগ্রগতিতে আরও এক পদক্ষেপ। অন্যান্য বিশেষ প্রজাতির প্রাণীকে বিলুপ্তির হাত থেকে ফেরানোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।" 

?ref_src=twsrc%5Etfw">April 7, 2025

'নন-ইনভেসিভ ব্লাড ক্লোনিং' কৌশল ব্যবহার করে কলোসাল বায়োসায়েন্সেস বিশ্বের সবচেয়ে বিপন্ন নেকড়ে প্রজাতি, রেড উলফের দু'টি ছানার সফলভাবে ক্লোন তৈরি করেছে। সংস্থার তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ডায়ার উলফের তিনি ছানার জন্ম দেওয়া হয়েছে। রমিউলাস এবং রেমুস পুরুষ এবং খালিসি মহিলা। সংস্থার তরফ থেকে এক্স হ্যান্ডলে একটি ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে ১০ হাজার বছরেরও বেশি সময় পর পৃথিবীর বুকে ডাকছে ডায়ার উলফ। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "আপনারা ১০ হাজারেরও বেশি সময় পর বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া নেকড়ের ডাক শুনছেন। রমিউলাস এবং রেমুস বিশ্বের প্রথম বিলুপ্তির পথ থেকে ফিরে আসা প্রাণী। জন্ম ২০২৪ সালের ১ অক্টোবর।"

?ref_src=twsrc%5Etfw">April 7, 2025

কলসাল বায়োসায়েন্সেসের গবেষকরা বরফ যুগের একটি অংশ পুনরুজ্জীবিত করেছেন। তারা তিনটি নেকড়ে ছানা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন যাদের দীর্ঘ-হারিয়ে যাওয়া ভয়ঙ্কর নেকড়েদের সাথে এক অদ্ভুত সাদৃশ্য রয়েছে। ১০ হাজার বছরেরও বেশি সময় আগে উত্তর আমেরিকায় আধিপত্য বিস্তারকারী পৌরাণিক শিকারী ছিল ডায়ার উলফ।

বিজ্ঞানীরা জীবাশ্মের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়া প্রাচীন ডিএনএ নিয়ে গবেষণা করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে ওহায়োতে আবিষ্কৃত ১৩ হাজার বছরের পুরনো একটি দাঁত এবং আইডাহোতে আবিষ্কৃত ৭২ হাজার বছরের পুরনো একটি খুলির টুকরো। জাদুঘরে সংরক্ষিত এই নমুনাগুলি গবেষকদের জিনগত বৈশিষ্ট্যগুলি চিহ্নিত করতে সাহায্য করেছে। বিজ্ঞানীরা বিশেষ প্রযুক্তির ব্যবহার করে ধূসর নেকড়ের জিনে ২০টি পরিবর্তন করেন। এরপর সেই জিনটিকে কুকুরের ডিম্বাণুর সঙ্গে মিলিয়ে একটি কুকুরের গর্ভে রাখা হয়। এরপরেই জন্ম হয় ডায়ার উলফের মতো দেখতে কুকুর ছানাগুলির। তাদের চেহারার মিল থাকা সত্ত্বেও কলোসালের প্রধান প্রাণী যত্ন বিশেষজ্ঞ, ম্যাট জেমস উল্লেখ করেছেন, ছানাগুলির সত্যিকারের ভয়ঙ্কর নেকড়েদের মতো আচরণ করার সম্ভাবনা কম।