আজকাল ওয়েবডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ এক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্টে বলেছেন, “মনে হচ্ছে আমরা ভারত ও রাশিয়াকে গভীরতম, অন্ধকারতম চীনের কাছে হারিয়েছি,” এর পরই তিনি কটাক্ষ করে তিন দেশকেই একটি “সমৃদ্ধশালী” ভবিষ্যতের শুভেচ্ছা জানান।


চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এই সপ্তাহের শুরুতে তিয়ানজিনে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে আতিথ্য দেন।


“মনে হচ্ছে আমরা ভারত ও রাশিয়াকে গভীরতম, অন্ধকারতম চীনের কাছে হারিয়েছি। আশা করি তাদের দীর্ঘ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ হোক!” — ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন।

 


এই মন্তব্যকে এখন পর্যন্ত নিউ দিল্লি, মস্কো এবং বেইজিংয়ের ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নিয়ে ট্রাম্পের সবচেয়ে কড়া প্রকাশ্য স্বীকৃতি হিসেবে দেখা হচ্ছে। তিন নেতা প্রকাশ্যে শক্তি থেকে নিরাপত্তা পর্যন্ত নানা ক্ষেত্রে সহযোগিতার আলোচনা করেছেন। একই সঙ্গে তারা—বিভিন্ন মাত্রায়—ইউক্রেন যুদ্ধ ও বিশ্বের বাণিজ্য নীতির মতো ইস্যুতে ওয়াশিংটনের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে আছেন।


দশক ধরে ওয়াশিংটন ভারতকে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখে এসেছে। রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয় প্রশাসনই নয়াদিল্লিকে কৌশলগত অংশীদার হিসেবে গড়ে তুলতে বিনিয়োগ করেছে। ট্রাম্প নিজেও তার প্রথম মেয়াদে ভারতকে কাছে টানতে উদ্যোগী ছিলেন—২০১৯ সালে হিউস্টনে প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে “হাউডি মোদি” সমাবেশে অংশ নিয়েছিলেন এবং জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে কোয়াড নিরাপত্তা সংলাপ পুনরুজ্জীবিত করেছিলেন।


তবুও সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ এক ধরনের শীতলতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করছেন, ট্রাম্পের শুল্কনীতি এবং ভারতের রাশিয়ার সঙ্গে জ্বালানি বাণিজ্য নিয়ে তার সমালোচনা, ওয়াশিংটনের প্রভাবশক্তি দুর্বল করেছে।


তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিত এসসিও সম্মেলন ছিল সাত বছর পর প্রধানমন্ত্রীর প্রথম চীন সফর, যা দীর্ঘস্থায়ী উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা—বিশেষ করে ২০২০ সালের গালওয়ান উপত্যকায় প্রাণঘাতী সীমান্ত সংঘর্ষের পর। শি ও পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করে মোদি ইঙ্গিত দিলেন যে কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনকে তিনি যে কোনও একক জোটের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার ওপরে প্রাধান্য দিচ্ছেন।


প্রসঙ্গত,মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার রাতে হোয়াইট হাউসে টেক দুনিয়ার শীর্ষ ব্যক্তিত্বদের নিয়ে এক বিশেষ নৈশভোজের আয়োজন করেন। হোয়াইট হাউসের তথ্য অনুযায়ী, অতিথি তালিকায় ছিলেন মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস, অ্যাপলের সিইও টিম কুক, মেটা প্রধান মার্ক জাকারবার্গ-সহ এক ডজনেরও বেশি শীর্ষ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও টেক সংস্থার সিইও।


লম্বা টেবিলের মাঝখানে ট্রাম্পকে বসতে দেখা যায়, তাঁর দুই পাশে ছিলেন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প ও মেটা সিইও জাকারবার্গ। বিকেলে মেলানিয়া হোয়াইট হাউসের নতুন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এডুকেশন টাস্ক ফোর্সের বৈঠক পরিচালনা করেন, যেখানে কিছু টেক নেতা অংশ নেন।
চাঁদের হাটেও লক্ষ্য করা গেল, অতিথি তালিকায় সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অনুপস্থিতি। দেখা গেল না ইলন মাস্ককে। একসময় ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র হলেও চলতি বছরে তাঁদের প্রকাশ্য বিচ্ছেদ ঘটে। ট্রাম্প তাঁকে ‘ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট ইফিশিয়েন্সি’র দায়িত্ব দিয়েছিলেন, কিন্তু সম্পর্ক ভাঙনের পর থেকেই দু’জনের মধ্যে দূরত্ব বাড়ে।