আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রেমিক-প্রেমিকা মুখোমুখি বসে হাসিমুখে গ্লাস তুলে টোস্ট করছেন, কিন্তু বাস্তবে তাঁরা আলাদা দুটি দেশে। এমন বিরল অভিজ্ঞতা ভিডিও করে ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেছেন এক দম্পতি ট্রাভেল ভ্লগার। ভিডিওতে দেখা যায়, একটি টেবিলের মাঝ বরাবর সাদা রেখা আঁকা। রেখার একদিকে বেলজিয়ামের ভূখণ্ড, অন্যদিকে নেদারল্যান্ডস। দম্পতির একজন বসে আছেন বেলজিয়ামে, অপরজন নেদারল্যান্ডসে, আর তাতেই তৈরি হয়েছে এক অভিনব মুহূর্ত। ভ্লগার হাসতে হাসতে বলেন, “আপনারা ভাবছেন আমি স্বাভাবিক টেবিলে বিয়ার খাচ্ছি, কিন্তু না, এই ছোট্ট রেখাটাই আমাকে আলাদা করেছে।”

ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা ছিল—“তাঁরা আসলেই দুই দেশে বসে আছে।” স্থানটির নাম বার্লে-হারতগ ও বার্লে-নাসাউ। এই দুই শহরই বিশ্বের অন্যতম অদ্ভুত সীমান্ত বিন্যাসের উদাহরণ। বার্লে-হারতগ বেলজিয়ামের ছোট একটি শহর হলেও চারিদিক ঘিরে রয়েছে নেদারল্যান্ডসের উত্তর ব্রাবান্ত প্রদেশ। প্রতিবেশী বার্লে-নাসাউ ডাচ ভূখণ্ডে অবস্থিত। সীমান্তরেখা এখানে সোজা নয়, বরং আঁকাবাঁকা, যা রাস্তা, ফুটপাত, এমনকি বাড়িঘর ও সরকারি ভবনের মধ্য দিয়েও চলে গেছে। এমনকি কারও বাড়ি একসঙ্গে দুই দেশের অংশ হিসেবেও রয়েছে। সীমান্তে প্রাচীর বা কাঁটাতারের বেড়া নেই, কেবল মাটিতে আঁকা সাদা ক্রস চিহ্নে দেশভাগ বোঝানো হয়।

আরও পড়ুন: এও সম্ভব? জিলিপি-চিকেন জুটি! ফুড ভ্লগারের নতুন আবিষ্কারে নেটপাড়ায় হৈ হৈ 

এই বিরল দৃশ্য দেখে নেটিজেনরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। একজন লিখেছেন, “এক দেশে এক গ্লাস কেন, দুই দেশে দুই গ্লাস বিয়ার খাওয়াই ভালো।” আরেকজন মন্তব্য করেছেন, “এটাই বুঝি লং-ডিস্ট্যান্স রিলেশনশিপ—একসঙ্গে থেকেও আলাদা।” কেউ আবার মজা করে বলেছেন, “দুই পা যদি দুই দেশে রাখা যায়, তবে একইসঙ্গে দুই জায়গায় দাঁড়িয়ে বিয়ার খাওয়া যাবে—সিনেমার মতো রোমান্টিক!”

বার্লে-হারতগ ও বার্লে-নাসাউ মিলে জনসংখ্যা মাত্র ১০ হাজারেরও কম। সরু গলি, শান্ত রাস্তা, স্থানীয় ক্যাফে আর ছোট দোকানগুলো শহরটিকে দিয়েছে আলাদা আবহ। সীমান্তের এই অদ্ভুত বিন্যাস আজ পর্যটকদের কাছে বড় আকর্ষণ। যেখানে অন্যত্র সীমান্ত মানেই কড়া প্রহরা ও বিভাজন, সেখানে এই শহরে সীমান্ত হয়ে উঠেছে রসিকতা, অভিজ্ঞতা আর রোমাঞ্চের অংশ। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে সীমান্ত যে বিভেদের প্রতীক, সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এই শহর প্রমাণ করছে—হাসি, ভালোবাসা আর এক গ্লাস বিয়ারের সামনে সীমান্তরেখাও অর্থহীন হয়ে যায়।