আজকাল ওয়েবডেস্ক: পণের দাবিতে ভয়ঙ্কর কাণ্ড! স্করপিও গাড়িই চাই। সেই গাড়ির লোভে নববধূকে খুনের অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে। খুনের পর তরুণীর দেহটি ঝুলিয়ে দিয়ে পালিয়েও যায় তারা! তরুণীর বাবার অভিযোগ শুনেই জোরকদমে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শ্বশুরবাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে ২৬ বছর বয়সি এক তরুণীর ঝুলন্ত দেহ। তাঁর রহস্যমৃত্যু ঘিরে পরিবারের তরফে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গৃহবধূর মৃত্যুর জন্য শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে তরুণীর পরিবার।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, বাড়ির মধ্যেই সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল। সেটি এই ঘটনার পর গায়েব। গৃহবধূর রহস্যমৃত্যুর পর পলাতক শ্বশুরবাড়ির সদস্যরাও। পরিবারের অভিযোগ, পণের দাবিতে ২৬ বছরের তরুণীকে চরম নির্যাতন করত শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। সেই পণের দাবিতেই তরুণীকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি তাঁদের।
রামপুর মণীহরন এলাকায় দীপাংশী নামের তরুণীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মৃত তরুণীর পরিবার পুলিশকে আরও জানিয়েছে, চলতি বছরে মার্চ মাসে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। তরণীর স্বামী পেশায় আইনজীবী, তাঁর শ্বশুর পুলিশ আধিকারিক ছিলেন। বিয়েতে মারুতি গাড়ি, সোনার গয়না, নগদ টাকা পণ হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতেও তারা সন্তুষ্ট ছিল না। বিয়ের পর স্করপিও গাড়ি পণ হিসেবে চেয়েছিল। যা ঘিরে দিনের পর দিন নির্যাতন চলত।
গত রবিবার দীপাংশীর মৃত্যুর খবর পায় পরিবার। খবর পেয়েই তাঁর শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছন সকলে। সেখানে পৌঁছেই দেখেন, বাড়িতে শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা নেই। শুধু ঝুলছিল তরুণীর দেহ। দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ। স্বামী, শ্বশুর ও আরও একাধিক সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত আগস্ট মাসে পণের দাবিতে আরও এক ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল। পণের জন্য সদ্য বিবাহিত তরুণীর গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছিল শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থল বিহার। এবারেও পণ হিসেবে সোনার গয়নার দাবি করেছিল শ্বশুরবাড়ি। কিন্তু খানিকটা সময় চেয়েছিলেন তরুণীর বাবা। অধৈর্য হয়ে তরুণীকে খুন করার অভিযোগ উঠেছিল তাদের বিরুদ্ধে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছিল বিহারের খাগাড়িয়া জেলার বরখান্দি তোলা গ্রামে। জানা গেছে, তরুণীর সঙ্গে বিভীষণ যাদবের বিয়ে হয়েছিল এক বছর আগে। তরুণীর বাবা জাদো যাদব জানিয়েছেন, বিয়ের পর থেকেই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা পণের জন্য হেনস্থা করতেন তরুণীকে। আরও সোনার গয়নার দাবি করতেন তাঁরা। এদিকে তরুণীর বাবা আশ্বাস দেন, আর দুই মাস পরেই তিনি সব দাবি পূরণ করবেন।
কাঁদতে কাঁদতেই জাদো যাদব জানান, 'আমি শুধুমাত্র দুই মাস সময় চেয়েছিলাম!' আরেক আত্মীয় জানান, সোনার গয়না না পেলে তরুণীকে খুনের হুমকিও দিয়েছিল তারা। তাঁদের আরও অভিযোগ, আগে বিভীষণ চাষবাসের কাজ করতেন। কিন্তু গত মাস ধরেই বিহারেই গাঁজা ও বিষমদ বিক্রি করতেন। তরুণীর ভাইয়ের অভিযোগ, প্রথমে তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। এরপর তাঁর দেহটি ঝুলিয়ে দেন। তরুণীর শরীরেও আঘাতের চিহ্ন ছিল।
তরুণীর বাবা জানিয়েছিলেন, 'আমার যা সার্মথ্য ছিল, সবকিছুই দিয়েছিলাম। তাও সোনার হার আর গাড়ির দাবি করছিল মেয়ের শ্বশুরবাড়ি। সদ্য ছেলের বিয়ে দিয়েছি। ছেলের বিয়ের সময় থেকেই সোনার হারের দাবিদাওয়া শুরু হয়। দুই মাস সময় চেয়েছিলাম। তার মধ্যেই মেয়েকে খুন করে দিল।' তরুণীর দেহ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছিল পুলিশ। অভিযুক্তরা সকলেই পলাতক।
