আজকাল ওয়েবডেস্ক: গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ গেল বাঘের৷ অন্ধ্রপ্রদেশের পালনাড়ু জেলায় ৫৬৫ নম্বর জাতীয় সড়কে ঘটনাটি ঘটেছে। আচমকা গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হল একটি পূর্ণবয়স্ক বাঘের। বন দপ্তর সূত্রের খবর, সিরিগিরিপাড়ু গ্রামের কাছে রাস্তা পার হওয়ার সময় একটি দ্রুত গতির গাড়ি বাঘটিকে পিষে দিয়ে চলে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। ভোরে রাস্তার ওপর বাঘের দেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা বন দপ্তরকে খবর দেন।

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, বিজয়পুরী দক্ষিণ রেঞ্জ এলাকায় মোট চারটি বাঘের বাস ছিল। এই ঘটনার পর অরণ্য সংলগ্ন জাতীয় সড়কগুলিতে বন্যপ্রাণীদের সুরক্ষায় স্পিড ব্রেকার, সতর্কতামূলক বোর্ড এবং পর্যাপ্ত আলোর দাবি তুলেছেন পরিবেশবিদরা।

বাঘের এমন মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারাও। তাঁদের দাবি, অভয়ারণ্য সংলগ্ন রাস্তায় গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে কড়া পদক্ষেপ করুক প্রশাসন। ইতিমধ্যেই পুলিশ ও বন দপ্তর যৌথভাবে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। কোন গাড়িটি ধাক্কা মেরেছে, তা শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।

অপরদিকে, উত্তরপ্রদেশের বিজনোর আফজলগড় এলাকার ভিখ্কাওয়ালা গ্রামে ঘটে আরেকটি ভয়াবহ ঘটনা। ৩৫ বছর বয়সী পুনম নামে এক যুবতী খেতে কাজ করার সময় আচমকা একটি চিতাবাঘ তাঁর ওপর হামলা চালায়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, চিতাবাঘটি পুনমকে হত্যার পর তার কাঁধের কিছু অংশ ছিঁড়ে খেয়ে ফেলে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন বন বিভাগের কর্মকর্তারা। আমানগড় টাইগার রিজার্ভের ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসার অঙ্কিতা কিশোর জানান, নিহত যুবতীর দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পুরো ঘটনার তদন্ত চলছে।

এই দুটি ঘটনার পর থেকেই সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে চরম আতঙ্ক ছড়িয়েছে। বনবিভাগ এলাকাগুলিতে ইতিমধ্যেই কড়া নজরদারি বাড়িয়েছে। পাশাপাশি চিতাবাঘ ধরতে ফাঁদ পাতা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। তবে এই ধরনের প্রাণঘাতী ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে এখনই জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে ভবিষ্যতে আরও বড় বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

মানুষ ও বন্যপ্রাণীর মধ্যে ক্রমবর্ধমান সংঘাত এখন একটি জ্বলন্ত সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বনাঞ্চলের আশেপাশে বসবাসরত সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত চিতাবাঘ, বাঘ, হাতির মতো বন্যপ্রাণীর হামলার মুখে পড়ছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বনভূমি সংকুচিত হওয়া, খাদ্যের অভাব এবং মানুষের অনুপ্রবেশের কারণেই বন্যপ্রাণীরা লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। এ অবস্থায় প্রয়োজন যথাযথ পরিকল্পনা, বন সংরক্ষণ এবং বন্যপ্রাণী ও মানুষের মধ্যে নিরাপদ দূরত্ব নিশ্চিত করার। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশাসনের প্রতি দাবি তুলেছেন, নিয়মিত টহল, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা, ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তিনির্ভর উন্নয়ন না হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে। এ ঘটনায় দুইটি পরিবার শোকাহত, আর সমাজ পেল এক অমূল্য বার্তা-বন্যপ্রাণীদের সঙ্গে সহাবস্থান করতে হলে চাই সুনির্দিষ্ট ও কার্যকর পদক্ষেপ।