আজকাল ওয়েবডেস্ক: বইয়ের পাতা থেকে শুরু করে পুরাণের কাহিনী। নাগমনি নিয়ে গল্পের শেষ নেই। হিন্দু পুরাণে বহু জায়গাতে এর বিরাট কথা লেখা রয়েছে। তবে সত্যি কী নাগমনি রয়েছে। এই বিষয়টি নিয়ে অনেকে নানা ধরণের কথা বলে থাকেন।
তবে যারা বিশ্বাস করেন তারা মনে করেন কোবরা সাপের মাথায় থাকে এই নাগমনি। তবে সব কোবরা সাপের মাথায় কিন্তু এই নাগমনি থাকে না। এই নাগমনিতে থাকে প্রচুর শক্তি, ক্ষমতা এবং অলৌকিক শক্তি। নাগমনি নিয়ে প্রচুর সিনেমা, বই, টিভি সিরিয়াল হয়েছে। সেখানে আবার ইচ্ছাধারী নাগ নাগিনীর কথাও তুলে ধরা হয়েছে। তাদের সকলের কাছেই নাকি নাগমনি থাকত।
সংস্কৃত শব্দ নাগা থেকে উঠে এসেছে নাগমনির প্রথম দুটি শব্দ। এর অর্থ সাপ। অন্যদিকে মনি বলতে বোঝায় রত্ন। প্রবাদ অনুসারে নাগমনি বলতে বোঝায় সাপের মাথার মনি। এটি সব সাপের থাকে না। অতি বিষাক্ত সাপের মাথায় থাকে এই মনি। এটি নাকি রাতের অন্ধকারে আলোর মতো জ্বলজ্বল করে। এটি সঙ্গে থাকলে প্রচুর ক্ষমতার অধিকারী হওয়া যায়।

তবে সত্যিই কী কোবরা সাপের মাথায় নাগমনি পাওয়া যায়। বিশেষজ্ঞরা একে হেলায় উড়িয়ে দিয়েছেন। তারা মনে করেন কোবরা সাপ নিজের দেহে এই ধরণের মনি তৈরি করতে পারে না। ফলে এই ধরণের রত্ন তাদের দেহে তৈরির কথাই নয়। যারা এটি বলে থাকেন তারা ভুল বলেন। এটি শুধু প্রবাদেই রয়েছে। আসলে নেই।
হিন্দু মতে নাগমনিযুক্ত সাপ রয়েছে। তাদেরকে পুজো করা হয়ে থাকে। তারা সহজে দেখা দেন না। তবে যারা এই মনিধারী সাপের দেখা পান তারা সকলের থেকে আলাদা হয়ে থাকেন। নাগমনি পাওয়ার অর্থ জীবনে সবকিছু পাওয়া। এর শক্তি দিয়ে দুনিয়াকে পায়ের নিচে নিয়ে আসা যায়।

কোনও মানুষ জীবনে নাগমনির দেখা পেয়েছেন কিনা তা নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা জটিলতা। তবে হিন্দু মতে নাগমনি রয়েছে। তার শক্তি অপরিসীম। তাকে হাতে পেলে আপনি ইচ্ছাধারী নাগের মতো যেকোনও রূপ ধারণ করতে পারেন।
নাগমনি নিয়ে প্রচুর কাহিনী রয়েছে। সেখানে কেউ একে মেনে চলেন, আবার কেউ একে মানেন না। তবে সাপের মাথায় এই ধরণের মনি রয়েছে কিনা তা কেউ জানেন না। সেখানে নাগমনি নিয়ে সঠিক তথ্য কারও হাতেই নেই।
একটা বয়সের পর কিছু প্রজাতির সাপের মাথায় না কি ‘মণি’ তৈরি হয়! যা অমূল্য রত্ন। যদি কারও হাতে আসে তিনি বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়ে যান। চারদিকে তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে।

এনিয়ে বলিউডে বহু নাটক, সিনেমা হয়েছে। কিন্তু ‘নাগমণি’ বলে কি আদৌ কিছু আছে? না কি পুরোটাই কল্পনা? বিজ্ঞান কী বলছে?
অনেকে বিশ্বাস করেন, স্বাতী নক্ষত্র থেকে বৃষ্টির ফোঁটা কিং কোবরার ফণায় পড়লে নাগমণি তৈরি হয়। নাগমণিতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শিবের আশীর্বাদ রয়েছে।
আরও পড়ুন: চলতি মাসেই বন্ধ থাকবে এই দুটি ব্যাঙ্কের অনলাইন পরিষেবা, দিনক্ষণ জেনে নিন এখনই
কিং কোবরা কখনই এটা ফণা থেকে বের করে না। এমনটা বিশ্বাস করা হলেও বিজ্ঞান এটাকে মন গড়া বলেই উড়িয়ে দিয়েছে।
ভূতত্ত্ব বিজ্ঞানীরা বলছে, সাপের মাথায় বা ফণায় নাগমণির অস্তিত্ব কোনও কালেই পাওয়া যায়নি। মাথার ভেতর মণি বা মুক্তা থাকার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তিও নেই। পুরোটাই কল্পনা বলেও দাবি করা হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সম্ভবত লোককথা বা কুসংস্কার থেকেই এমন ধারণার জন্ম হয়েছে। বিজ্ঞানীদের মতে, মানুষের মতো সাপেরও পিত্তথলিতে পাথর থাকতে পারে। বড় পাথর থেকে ছোট ছোট টুকরো পাথরও বের হয়। সাপের পিত্তথলির এই পাথরই ‘নাগমণি’ বলে কেউ ভুল করেছিলেন। পরে সেটাই জনপ্রিয়তা পায়। মানুষ সাধারণ পাথরকে নাগমণি ভেবে বসে।
