আজকাল ওয়েবডেস্ক: মায়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ঘিরেই বন্ধুত্বের সম্পর্কে ফাটল। তবে এখানেই বিষয়টি শেষ হল না। ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে দুনিয়া থেকে গায়েব করল এক তরুণ। গলা কেটে, মাথা থেঁতলে নৃশংসভাবে খুন করল। যে হত্যাকাণ্ডে শিউরে উঠেছে গোটা শহর।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে এক তরুণকে নৃশংসভাবে খুন করার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বন্ধু বিরুদ্ধে। অভিযুক্তের সন্দেহ ছিল, তার মায়ের সঙ্গেই প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে তরুণের।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, শনিবার সকালে ঘটনাটি প্রকাশ্যে এসেছে। সেই সময় পুলিশের কাছে খবর আসে, শ্যাম নগর মাল্টিতে এক তরুণের ক্ষতবিক্ষত দেহ পাওয়া গেছে। খবর পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। দেহটি উদ্ধারের পর পুলিশ জানিয়েছে, তরুণের গলা কেটে, ভারী পাথর দিয়ে মাথা থেঁতলে খুন করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনায় তিনজন জড়িত ছিল। রঞ্জিত, নিখিল ও বিনয় নামের তিন তরুণ নির্মমভাবে খুন করে বন্ধুকে। রঞ্জিতের সন্দেহ হয়েছিল, তার মায়ের সঙ্গেই বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন আশিস। যা ঘিরে আগেই বচসা হয়েছিল দুই বন্ধুর। এমনকী তার মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ না রাখার জন্যেও হুমকি দিয়েছিল রঞ্জিত। বাড়ির আশেপাশে যাতায়াত করতেও নিষেধ করেছিল।
শুক্রবার রাতে আশিসকে বাড়ির আশেপাশে ঘুরঘুর করতে দেখেছিল রঞ্জিত। রাগের মাথায় সেই রাতেই খুন করে বন্ধুকে। আরও দুই বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে আশিসের উপর হামলা করে সে। প্রথমে ধারালো ছুরি দিয়ে তাঁর গলা কেটে দেয়। মৃত্যু নিশ্চিত করে ভারী পাথর দিয়ে মাথা থেঁতলে দেয় তাঁর। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় আশিসের।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, খুনের মামলা রুজু করে তিন অভিযুক্তকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘিরে জোরকদমে তদন্ত চলছে। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে তারা। ঘটনায় আর কেউ জড়িত ছিল কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই সন্দেহের আগে রঞ্জিত ও আশিস ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল বলেই জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, কয়েক সপ্তাহ আগেই এই রাজ্যেই আরও এক নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল। ঘটনাটি ঘটেছিল মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নন্দিনী নামের এক তরুণী সোশ্যাল মিডিয়ায় জন্মদিনের একটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন। আসলে জন্মদিনটি ছিল ওই তরুণীর এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর। ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সঙ্গে জন্মদিনের উদযাপনে মেতে উঠতে দেখেই রাগে ফুঁসতে থাকে তরুণীর স্বামী।
এই ঘটনার ঠিক চার দিন পরেই ভরা রাস্তায় তরুণীকে লক্ষ্য করে পরপর গুলি চালিয়ে খুন করে অরবিন্দ নামের অভিযুক্ত যুবক। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, ২০২৩ সালে অরবিন্দ ও নন্দিনী বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের কয়েক মাস পরেই নন্দিনী জানতে পারেন, অরবিন্দ এক বিবাহিত মহিলার সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত। সেই মহিলার আবার এক সন্তান রয়েছে।
অরবিন্দের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ঘিরেই অশান্তি শুরু হয়। তখন থেকেই হেনস্থা করত নন্দিনীকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় নন্দিনীর এআই করা নগ্ন ছবি, ভিডিও ফাঁস করেছিল অরবিন্দ। এরপর থানায় অরবিন্দের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন নন্দিনী। সেই সময় কয়েক সপ্তাহের জন্য জেলবন্দি ছিল অরবিন্দ। জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর আবারও নন্দিনীকে নির্যাতন শুরু করে। সেই সময় অরবিন্দ ও তার পরিবারের সদস্যদের দ্বারাও নির্যাতনের শিকার হন তরুণী।
বিষয়টি এখানেই থেমে থাকেনি। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার কয়েক সপ্তাহ পরেই তরুণীকে গাড়িতে পিষে মারতেও চেয়েছিল অরবিন্দ। গুরুতর আহত অবস্থায় তরুণী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এরপর আর শ্বশুরবাড়িতে ফিরে যাননি। দিল্লিতে একাই থাকতেন শুরু করেন। অন্যদিকে অরবিন্দের সন্দেহ হয়, নন্দিনী তাঁর সহকর্মী অঙ্কুশ পাঠকের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। এর জেরে খুন করে সে।
