আজকাল ওয়েবডেস্ক: খেলতে খেলতে বল আনতে গিয়েছিলেন। ঘরে ঢুকে যা দেখলেন পাড়ার ছেলে, চক্ষু চড়কগাছ। হতবাক এলাকার লোকজন। পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে, হতবাক।
ঘটনাস্থল হায়দরাবাদ। সোমবার হায়দরাবাদের একটি পরিত্যক্ত বাড়ির ভিতর থেকে আচমকা স্থানীয় এক যুবক কঙ্কাল, দেহাবশেষ দেখেন। তিনি তৎক্ষণাৎ ঘরের ভিতরের ওই অংশের ভিডিও করেন এবং তা ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
তৎক্ষণাৎ খবর দেওয়া হয় পুলিশে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পোঁছে তদন্ত শুরু করে। প্রাথমিকভাবে বেশকিছু তথ্যও উঠে এসেছে, তাতে মনে করা হচ্ছে ঘরের মধ্যে উদ্ধার হওয়া ওই দেহাবশেষ আমির খান বলে এক ব্যক্তির। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, প্রায় দশ বছর আগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: কাকদ্বীপের ৩৪জন মৎস্যজীবীকে ধরে নিয়ে গেল বাংলাদেশের নৌবাহিনী, শিউরে ওঠা সত্যি এল সামনে
স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, নামপল্লী বাজারের কাছে অবস্থিত ওই ঘর বহু বছর ধরেই তালাবন্ধ। স্থানীয়রা অনেক বছর ওই ঘরে কাউকে যেতে আসতে দেখেননি। কবে কেউ এসেছেন, বা ওই ঘর থেকে বেরিয়েছেন, মনে করতে পারেন না তাও। সোমবার পাড়ারই একজন বল খুঁজে গিয়ে ওই ঘরে ঢুকে পড়ে। তার পরেই সামনে আসে ঘরের ভিতরের ঘটনা। ভিডিওতে দেখা গিয়েছে ঘরের রান্নাঘরের সামনের অংশে পড়ে রয়েছে এক ব্যক্তির দেহাবশেষ। রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য CLUES টিম বাড়িটি পরিদর্শন করে এবং আরও পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে, যখন মৃত ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য মানব দেহাবশেষ মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ (চন্দ্রমোহন)-সহ হাবীব নগর পুলিশের একটি দল বাড়িটি পরিদর্শন করে, দরজা ভেঙে মানুষের দেহাবশেষ উদ্ধার করে।
জানা গিয়েছে ওই বাড়িটি ছিল মুনীর খান নামে এক ব্যক্তির। তাঁর দশ সন্তান ছিল। আমির মুনিরের চতুর্থ সন্তান। একটা সময় পড়ে ওই বাড়িতে আমির ছাড়া আর কেউ থাকতেন না। আমির অববাহিত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে, এবং তিনি প্রায় কারও সঙ্গে কথাবার্তা বলতেন না। একা একাই জীবন কাটাতেন বলে খবর।

পুলিশের প্রাথমিক অনুমান প্রায় ১০ বছর আগে মৃত্যু হয়েছে আমিরের। দেহে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই বলেই প্রাথমিক ধারণা, মেঝেতেও রক্তের কোনও দাগ মেলেনি বলে জানা গিয়েছে। মনে করা হচ্ছে স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল তাঁর। বছরের পর বছর ঘরে থেকে, তাঁর দেহাবশেষ গলে পচে যায়। পড়ে থাকে কেবল কিছু হাড়।
ওই ঘর থেকে একটি পুরনো নোকিয়ার ফোন উদ্ধার করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে ওই ফোনটি বন্ধ হয়ে পড়েছিল। পুলিশ ফোনটি পুনরায় চালু করেছে। জানা গিয়েছে ২০১৫ সালে ওই ফোনে মোট ৮৪টি মিসড কল এসেছিল। এছাড়াও আমিরের ঘরে, বালিশের তলা থেকে কিছু টাকা উদ্ধার হয়েছে। যা নোট বাতিলের আগের টাকা। তা থেকে আরও ধারণা করা হচ্ছে, এই ঘটনা নোট বন্দির আগে ঘটেছে।
পুলিশের অনুমান, ওই ব্যক্তির ভাই-বোন, আত্মীয়রা কেউই দীর্ঘদিন তাঁর খোঁজ নেননি। সেই কারণেই তিনি বেঁচে আছেন, না মারা গিয়েছেন তা বুঝতে পারেননি কেউই। তবে পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যক্তির ছোট ভাই শাদাব, যিনি আশেপাশের দোকান থেকে ভাড়া আদায় করতেন, তিনি কঙ্কালের দেহাবশেষে পাওয়া একটি আঙুলের আংটি এবং হাফপ্যান্ট শনাক্ত করেন।
