আজকাল ওয়েবডেস্ক: ৮০ বছরের দোরগোরায় ভারতের স্বাধীনতা। কিন্তু, এতদিনেও যোগ্য প্রার্থীদের জন্য যথেষ্ট পরিমাণে সরকারি চাকরির বন্দোবস্ত করা সম্ভব হয়নি। এমনই পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের।

সরকারি চাকরির অভাব এবং সীমিত সুযোগের কারণে যোগ্য প্রার্থীরা যে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন, সম্প্রতি সেদিকেই আলোকপাত করেছে দেশের শীর্ষ আদালত। বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারপতি মনমোহনের বেঞ্চ জানিয়েছে, খুব কম সংখ্যক সুযোগ থাকার ফলে চাকরির যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও বহু প্রার্থী সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে তাঁরা কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন।

সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, "স্বাধীনতার ৮০ (আশি) বছরের কাছাকাছি পৌঁছালেও, সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করতে আগ্রহীদের নিয়োগের জন্য সরকারি ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত চাকরির সংস্থান এখনও সম্ভব হয়নি। দেশে যোগ্য প্রার্থীর অভাব নেই। সরকারি চাকরি পাওয়ার আশায় যোগ্য প্রার্থীরা লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। পর্যাপ্ত চাকরির সুযোগের অভাবের জন্য তাঁরা অপেক্ষার দিন গুনছেন।"

বিহারের নিয়ম ছিল সরকারি চাকরি চৌকিদার পদটি বংশানুক্রমিকভাবে চলবে। বিহার চৌকিদার (সংশোধনী) বিধি, ২০১৪-তে বলা রয়েছে, কোনও চৌকিদার অবসর নেওয়ার সময় তাঁর উপর নির্ভরশীল কোনও উত্তরাধিকারীকে মনোনীত করে যেতে পারেন। তিনি তাঁর জায়গায় সরকারি চাকরিটি পাবেন। কিন্তু, সেই প্রথাকে পাটনা হাইকোর্ট অসাংবিধানিক বলে জানিয়ে দেয়। পাটনা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, বিহার সরকারের সিদ্ধান্ত সংবিধানের ১৪ (সমতা) এবং ১৬ (সরকারি চাকরিতে সমান সুযোগ) ধারা লঙ্ঘনকারী। 

হাইকোর্টের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ আপিলকারী-বিহার রাজ্য দফাদার চৌকিদার পঞ্চায়েত (মগধ বিভাগ), যারা মূলত কোনও পক্ষ ছিল না, তারাই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন এবং যুক্তি দেন যে, হাইকোর্ট বংশাক্রমিক নিয়মের সাংবিধানিক বৈধতা আদালতে আনুষ্ঠানিকভাবে চ্যালেঞ্জ না করা সত্ত্বেও এই নিয়মকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে এক্ষেত্রে হাইকোর্ট এক্তিয়ার অতিক্রম করেছে।

হাইকোর্ট কি স্বতঃপ্রণোদিত ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে বংশানুক্রমিক চৌকিদান নিয়োগের নিয়মকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করতে পারে? সুপ্রিম কোর্টের বিবেচনার জন্য এই প্রশ্ন ওঠে। সেই মামলার শুনানিতেই সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত ও বিচারপতি মনমোহনের বেঞ্চ পাটনা হাইকোর্টের রায় বহাল রাখে। আদালতের বক্তব্য, স্বাধীনতা প্রাপ্তির পর প্রায় ৮০ বছরের কাছাকাছি পৌঁছেগেলেও আমরা যারা সরকারি চাকরি করতে চায়, তাদের জন্য পর্যাপ্ত সরকারি চাকরির সংস্থান করা যায়নি।