আজকাল ওয়েবডেস্ক: সাধারণত ছোট শিশুরা বিভিন্ন কীটপতঙ্গ থেকে ভয়ে দূরে থাকে। কিন্তু সম্প্রতি এর উলটো একটি দৃশ্য দেখা গেল। বেশিরভাগ মানুষ যেখানে টিকটিকি দেখলেই ভয়ে দৌড়ে পালাতে চান, সেখানে মাত্র দুই বছর বয়সী একটি ছোট মেয়ে দেখিয়েছে যে এই ছোট ছোট প্রাণীগুলোর প্রতি সহানুভূতি ও ভালবাসাও শেখানো যায় ছোটবেলা থেকেই। এক ভাইরাল ভিডিওর মাধ্যমে প্রমাণ মিলেছে, ভয় পাওয়ার কিছু নেই টিকটিকির মতো সরীসৃপ প্রাণীদের নিয়ে।
ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, এক বাবা ও তাঁর ছোট মেয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামছিলেন। এমন সময়ে তাঁদের চোখে পড়ে একটি ছোট টিকটিকি। শিশুর বাবা প্রথমে সেটিকে সরিয়ে অন্য কোথাও রাখার চিন্তা করেন, যাতে কেউ ভুল করে সেটির ওপর পা না দেয়। কিন্তু তাঁর মেয়ে তখন জিজ্ঞেস করে, সে কি টিকটিকিটিকে হাতে নিতে পারে? এরপর যা ঘটে, তা দেখে অনেকেই চমকে গিয়েছেন। বাবা নির্ভয়ে সেই ছোট টিকটিটিকে তাঁর মেয়ের হাতে তুলে দেন এবং বলেন, সাবধানে ধরতে।
ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, শিশুটি একটুও ভয় পায়নি। এমনকী কোনওরকম চিৎকারও করেনি। বরং সে আদর করে টিকটিকির মাথায় হাত বুলিয়ে দেয় এবং বাবাকে জিজ্ঞেস করে, সে কি এটিকে বাড়ি নিয়ে যেতে পারে? তখন বাবা জানতে চান, সে বাড়ি নিয়ে গিয়ে কী করবে এটির সঙ্গে? শিশুটি মিষ্টি গলায় বলে, সে টিকটিকিটির পাশে ঘুমাবে। এরপর আবার সে খোঁজ করে টিকটিকির মায়ের। এরপরও শিশুর প্রশ্ন থামেনা। ফের সে তার বাবাকে জিজ্ঞেস করে, টিকটিকিটিকে কি সঙ্গে নেওয়া যাবে? তখন বাবা তাঁকে বোঝান, টিকটিকিকে ছেড়ে দিতে হবে যাতে ওর মা এসে ওকে খুঁজে পায় ।
সম্প্রতি এই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর, শিশুটির বাবা একটি পডকাস্টে এসে প্যারেন্টিং নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা বলেন। তিনি জানান, তাঁর মেয়ের এই ভয় একদিনে যায়নি। তিনি বলেন, 'আমি চাই আমার মেয়ে যেন বিভিন্ন প্রাণীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়, পশু-পাখি বা যেকোনও জীবের প্রতি যেন কোমল আচরণ করে। শিশুরা প্রকৃতিগতভাবে এমনই হয়। আমরা বড়রা তাঁদের শেখাই কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে। তাঁরা আমাদেরই অনুকরণ করে। অনুকরণ করে আমাদের আচরণ। তাই আমরা যেমন আচরণ করব, শিশুরাও তাই শিখবে।'
ভিডিওটি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই নানা প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। কেউ লিখেছেন, 'আমার সন্তান একটু কম সহানুভূতিশীল থাকলেই ভালো।' আরেকজন লিখেছেন, 'আপনি যেভাবে সাহস জুগিয়ে ভয়ের বিষয়টা কাটিয়েছেন, সেটা নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য, কিন্তু আমি তো ভিডিও দেখেই গা ছমছম করে উঠেছে। টিকটিকি আমার ফোবিয়ার লিস্টে।'
ভিডিও দেখে আরেকজন মন্তব্য করেছেন, 'ব্রাভো! এই রকম প্যারেন্টিং-ই আজকের দিনে দরকার। অনুপ্রেরণাদায়ক!' আর কেউ লিখেছেন, 'অসাধারণ চিন্তা। একইসঙ্গে এটা প্রমাণ করে যে বাবা-মায়ের ভালো শিক্ষা একজন শিশুকে কীভাবে মানবিক করে তোলে। আমাদের শেখাতে হবে সহানুভূতি, মমতা এবং ভালোবাসা-হোক তা মানুষ হোক কিংবা অন্য কোনও প্রাণী।' শিশুর এই ভিডিও জুলাই মাসে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ পাওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত ২১ মিলিয়নেরও বেশি বার দেখা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ঝগড়ায় হেরে যাবে ভেবে সিনিয়র দাদাকে ছুরি দিয়ে আঘাত পড়ুয়ার! মুহূর্তে স্কুলঘর রক্তাক্ত, রাজ্যে ফের হাড়হিম কাণ্ড ...
