আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্কুলে পৌঁছতে সামান্য দেরি হয়েছিল। এর জেরেই কড়া শাস্তি খুদে ছাত্রীকে। স্কুল প্রাঙ্গণে ১০০ বার ওঠবোস করানো হল তাক। নির্মম শাস্তির জেরে স্কুলেই জ্ঞান হারিয়ে লুটিয়ে পড়ে সে। কিছুক্ষণেই মর্মান্তিক পরিণতি ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীর। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে শিশু দিবসে। ভাসাইয়ের শ্রী হনুমন্ত বিদ্যা মন্দির হাই স্কুলে। শুক্রবার স্কুলে ১০ মিনিট দেরিতে পৌঁছনোর জন্য তাকে ১০০ বার ওঠবোস করানো এক শিক্ষক। ১০০ বার ওঠবোস করার পরেই কোমরে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হয় ষষ্ঠ শ্রেণির ওই ছাত্রীর। 

জানা গেছে, সেদিন শরীরে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে স্কুল থেকে বাড়িতে ফিরে আসে ১২ বছরের নাবালিকা। কিন্তু ক্রমেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। এরপর দ্রুত নালাসোপারার এক হাসপাতালে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হতেই মুম্বইয়ের জেজে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় ছাত্রীকে। সেখানে চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয় তার। 

মৃত ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, স্কুলে শিক্ষকের নির্মম শাস্তির জেরেই তার মৃত্যু হয়েছে। ১০০ বার ওঠবোস করার সময় কাঁধেই ছিল তার স্কুল ব্যাগ‌। যে কারণে আরও যন্ত্রণায় কাতরাতে শুরু করে সে। এ ঘটনার পরেই স্থানীয়রা ও অভিভাবকরা স্কুল কর্তৃপক্ষ ও অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। দ্য মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা হুঁশিয়ারি দিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ না করা পর্যন্ত স্কুল চালু করা যাবে না। 

গত অক্টোবরে আরও এক ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছিল। এক পড়ুয়ার শরীর জুড়ে একাধিক কালশিটে। নাবালক পড়ুয়াকে দেখেই আঁতকে উঠেছিল পরিবার। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চিকিৎসকরাও চমকে ওঠেন। এরপরই ফাঁস হয় বেসরকারি এক স্কুলের প্রিন্সিপালের নির্যাতনের কাহিনি। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুতে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ন'বছর বয়সি এক ছাত্রকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠেছে এক বেসরকারি স্কুলের প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে। স্কুলের মধ্যেই মারধরের চোটে গুরুতর আহত হয় ওই পড়ুয়া। গুরুতর আহত অবস্থায় সে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। 

পুলিশ সূত্রে আরও জানা গেছে, গত ১৪ অক্টোবর ঘটনাটি ঘটেছে। পড়ুয়ার মা জানিয়েছেন, স্কুলেই প্রিন্সিপাল রাকেশ কুমার পিভিসি পাইপ দিয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করেন। এর জেরে পড়ুয়ার শরীরের একাধিক জায়গায় রক্ত জমাট বেঁধে গেছে। কালশিটে পড়েছে শরীর জুড়ে। পড়ুয়ার সেই আঘাতের ছবি, ভিডিও থানায় জমা দিয়েছেন তার মা। 

এখানেই শেষ নয়। স্কুলে গিয়ে প্রিন্সিপালের এহেন আচরণ ঘিরে ক্ষোভ উগরে দেন পড়ুয়ার মা। এরপরই তাঁকেও হুমকি দেন ওই অভিযুক্ত প্রিন্সিপাল। পড়ুয়ার ট্রান্সফার সার্টিফিকেট নিয়ে শীঘ্রই স্কুলের প্রাঙ্গণ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য হুমকি দেন। 

বেসরকারি স্কুলের প্রিন্সিপাল রাকেশ কুমারের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই মামলা রুজু করেছে পুলিশ। পাশাপাশি স্কুলের প্রধান বিজয় কুমারের বিরুদ্ধেও মামলা রুজু করা হয়েছে। নাবালক ছাত্রকে হেনস্থার প্রতিবাদ না রোধ না করার জন্য। পাশাপাশি ওই স্কুলের এক শিক্ষিকা চন্দ্রিকার বিরুদ্ধেও মামলা রুজু করেছে পুলিশ। 

প্রসঙ্গত, কয়েক মাস আগে মাথায় তেল না দেওয়ার জন্য ভয়ঙ্কর শাস্তি দেওয়া হয়েছিল এক পড়ুয়াকে। চুলে তেল না দিয়ে স্কুলে আসার কড়া শাস্তি! রাগের মাথায় ছাত্রীর চুল কেটে নিলেন শিক্ষিকা। ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগের তরফে ওই শিক্ষিকাকে সাসপেন্ড করলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাটে। জামনগরের স্বামীনারায়ণ গুরুকুল স্কুলে ঘটনাটি ঘটেছে। মঙ্গলবার সকালেই ওই স্কুলের এক ছাত্রীর চুল ব্লেড দিয়ে কেটে দেন এক শিক্ষিকা। কারণ? ওই ছাত্রী চুলে তেল না দিয়ে স্কুলে এসেছিল। 

স্কুল থেকে বাড়ি ফিরেই শিক্ষিকার কীর্তির কথা পরিবারকে জানিয়েছিল ওই ছাত্রী। এরপর ওই পরিবার জেলা শিক্ষা আধিকারিকের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি খতিয়ে দেখার পরেই শিক্ষিকাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। 

ওই ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, অতীতে আরও একাধিক পড়ুয়াকে কড়া শাস্তি দেওয়া হয়েছে এই স্কুলে। ভুলবশত কোনও পড়ুয়া যদি বই আনতে ভুলে যেত, তাকে ১০০ বার কান ধরে উঠবস করানো হত।