আজকাল ওয়েবডেস্ক: গুজরাটের আহমেদাবাদে এক স্কুলছাত্র খুন হওয়ার ঘটনার মাত্র কয়েকদিন পর, রাজ্যে আরও একটি  ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড! খবর অনুযায়ী রাজ্যের বলাসিনর থেকে একই ধরনের আরেকটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এসেছে। এবার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক অষ্টম শ্রেণির ছাত্র তাঁর সহপাঠীর ছুরির আঘাতে গুরুতর আহত হয়েছেন। এই ঘটনা জানাজানি হতে তোলপাড় গোটা দেশ। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুল ছুটির পর দুই ছাত্রের মধ্যে কোনও একটি বিষয় নিয়ে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। বিষয়টি দ্রুত মারাত্মক আকার ধারণ করে। এহেন ঝামেলার একপর্যায়ে এক ছাত্র তাঁর পকেট থেকে ছুরি বের করে অপর ছাত্রকে আচমকা আঘাত করে। হামলায় আহত ছাত্রের পেটে ও হাতে গভীরভাবে জখম হয়।

গুরুতর আহত অবস্থায় ছাত্রকে সঙ্গে সঙ্গে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় চিকিৎসার জন্য। ঘটনার জেরে আহত ছাত্রের পরিবারের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ মামলার তদন্ত শুরু করেছে। তবে কী কারণে এই হামলা হয়েছে, তা এখনও পরিষ্কার নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

প্রসঙ্গত, এই ঘটনার মাত্র তিন দিন আগে, গুজরাটের  আহমেদাবাদে নামকরা স্কুল সেভেন্থ ডে অ্যাডভেন্টিস্টে এক দশম শ্রেণির ছাত্রকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেন স্কুলেরই এক অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া। এই ঘটনায় জানা গিয়েছে, দুই ছাত্রের মধ্যে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে তীব্র বচসা হয়। এর জেরে একপর্যায়ে অভিযুক্ত ছাত্র ধারালো অস্ত্র দিয়ে অপর ছাত্রকে আঘাত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেদিন'ই রাতে ছাত্রের মৃত্যু হয়।

পড়ুয়ার মৃত্যুর পর ক্ষুব্ধ জনতা স্কুলে ভাঙচুর চালায়। তাঁদের অভিযোগ ছিল, স্কুলের শিক্ষক ও কর্তৃপক্ষ সময়মতো ব্যবস্থা নেননি। এর ফলে আহত ছাত্রকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। এছাড়াও, ঘটনার পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ইনস্টাগ্রাম চ্যাটের স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়। সেখানে দাবি করা হয় যে, ওই চ্যাটে জড়িত এক ছাত্রই হত্যাকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত। যদিও পুলিশ এখনও এই চ্যাট সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক কোনও বিবৃতি দেয়নি। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে গুজরাট রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন আহমেদাবাদের ওই বেসরকারি স্কুলের কাছে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন চেয়েছে।

আরও পড়ুনঃ মায়ের সঙ্গে স্কুল যাওয়ার পথেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন কিশোরী, মেয়ের মৃতদেহের পাশে মায়ের অসহায় গোঙানি,

ঘটনার প্রেক্ষিতে, বুধবারেই  গুজরাটের শিক্ষামন্ত্রী প্রফুল পাঁশেরিয়া জানান, অভিযুক্ত তরুণকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তিনি সবাইকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বানও জানিয়েছেন। এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, 'নবম শ্রেণির এক ছাত্র দশম শ্রেণির এক ছাত্রকে হত্যা করেছে। এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক এবং একইসঙ্গে সভ্য সমাজের জন্য একটি লাল সঙ্কেত।' তিনি আরও জানান, পুলিশ ঘটনার পূর্ণ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।

মূল ঘটনা ঘটেছে মঙ্গলবার। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেলে, স্কুলের ঘণ্টা বাজার পর, নয়ন তার ব্যাগ গুছিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দেন। তিনি সেভেন্থ-ডে অ্যাডভেন্টিস্ট উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবন থেকে বেরিয়ে আসার আগেই অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র এবং আরও কয়েকজন ছেলে তাঁকে ঘিরে ফেলে। বাকবিতণ্ডা শীঘ্রই মারামারিতে পরিণত হয়। অষ্টম শ্রেণির ওই পড়ুয়া নয়নকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যায় ঘটনাস্থল থেকে। 

আরও পড়ুনঃ পুলিশকর্মীকে লাঠি পেটা, চোখে মরিচের গুঁড়ো ছোড়া! দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছতেই ঘটল বিপত্তি ...

উল্লেখ্য, ঘটনার জেরে বুধবার থেকেই উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। স্কুল ঘিরে বিক্ষোভ দেখান বহু মানুষ। ঘটনায় ক্ষুব্ধ অভিভাবক ও স্থানীয় মানুষজন স্কুল চত্বরে প্রবেশ করে ফার্নিচার ও কাচ ভেঙে দেয়। এমনকী প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষকদের মারধরও করেন বলেও অভিযোগ। ইতিমধ্যেই ঘটনা ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে।