আজকাল ওয়েবডেস্ক: গুজরাটে ফের বন্যা বিভ্রাট। সম্প্রতি বোতাদ জেলার গোধাওয়াটা গ্রামের কাছে ঘটে ভয়াবহ ঘটনা। খবর সুত্রে একটি উপচে পড়া কজওয়েতে গাড়ি ভেসে গিয়ে নিহত হন ২ জন। নিহতদের মধ্যে এক শিশু ও এক বৃদ্ধ ছিলেন। আরও একজন এখনও নিখোঁজ বলে জানা গিয়েছে। ঘটনার দিন রোববার। ঘটনায় ভীত সন্ত্রস্ত গোটা রাজ্য।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, রোববার মধ্যরাতে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। গাড়িটি বোচাসন থেকে সলাংপুরের দিকে যাচ্ছিল। সূত্র অনুযায়ী গাড়িতে মোট ৭ জন যাত্রী ছিলেন। প্রবল স্রোতের মধ্যে দিয়ে গাড়ি যখন কজওয়ে পার হচ্ছিল, তখন আচমকা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জলস্রোতে ভেসে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তৎক্ষণাৎ তারা উদ্ধারকাজ শুরু করে। স্থানীয় বাসিন্দা এবং বোতাদ দমকল বাহিনীর সহায়তায় চারজন কোনোভাবে সাঁতরে প্রাণে বাঁচেন।

সূত্রে জানা গিয়েছে, দুজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় ঘটনাস্থল থেলে। এরপর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় স্থানীয় হাসপাতালে। নিহতদের শনাক্ত করা গিয়েছে। ৬০ বছর বয়সী কৃষ্ণকান্ত পণ্ড্যা এবং ৯ বছর বয়সী প্রবুদ্ধ কাচ্ছিয়া। একজন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন বলে খবর। বর্তমানে তাঁকে খোঁজার জন্য তল্লাশি চালান হয়েছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (NDRF) একটি দল উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে।
এই ঘটনার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে, গান্ধীনগরে আরেকটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। সূত্র অনুযায়ী একটি ধর্মীয় আচার পালনের সময় খালে ডুবে এক জনৈকের মৃত্যু হয়েছে। তদন্তে জানা গিয়েছে, তিনি তাঁর সাত বছরের কন্যার জন্য গৌরি ব্রত পালন করতে গিয়েছিলেন। এর জেরে নদীতে জিনিসপত্র ভাসাতে গিয়ে জলে পড়ে যান। পরবর্তীতে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর সেখানেই মারা যান।

একই সময়ে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় জলের তোড়ে বিভিন্ন গাড়ি ও যাত্রীবাহী যানবাহন ভেসে যাওয়ার একাধিক ঘটনা ঘটেছে। সম্প্রতি ভাদোদারার গম্ভীরা সেতুর একটি অংশ ধসে পড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়৷ বহু মানুষ নদীতে পড়ে মারা যান। পরবর্তীতে উদ্ধারকাজে এক এক করে মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। একাধিক মানুষ গুরুতর আহত হন। এর রেশ এখনও চলছে। ঘটনায় প্রায় ১৪ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গিয়েছে। পাশাপাশি আরও একটি ঘটনা সাড়া ফেলে। গুজরাটের ভাবনগর জেলায় একদল তীর্থযাত্রীর বাস ভয়াবহভাবে আটকে পড়ে৷ নদীর উপচে আটকে পড়ে বাসটি । প্রায় আট ঘণ্টা ধরে উদ্ধারকাজ চলে। অবশেষে সকল যাত্রীকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়।
চলতি বছরে গান্ধীনগরের নবহই এলাকায় নর্মদা ক্যানালে একটি প্রাইভেট গাড়ি পড়ে গিয়ে দুই জন নিহত হন। ঘটনায় আরও দুজন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। তীব্র বর্ষায় গোটা গুজরাটের একাধিক জেলায় একই ধরনের প্রাণঘাতী ঘটনা ঘটছে বলে সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মেরামতহীন কজওয়ে, দুর্বল সেতু এবং পর্যাপ্ত সতর্কতা ছাড়া বর্ষায় এভাবে যান চলাচল দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। খবর অনুযায়ী, স্থানীয়দের সাবধানতা অবলম্বন করতে বারবার সতর্কতা জারি করা হলেও, অনেক ক্ষেত্রেই তা মানা হচ্ছে না।
এহেন পরিস্থিতিতে পরিকাঠামোগত দুর্বলতা, অপরিকল্পিত সেতু নির্মাণ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ধীর প্রতিক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নিয়মিত পর্যবেক্ষণ, প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং জনসচেতনতাই এই ধরনের দুর্ঘটনা কমাতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মত দিচ্ছেন। বর্তমানে উদ্ধারকাজ জারি রয়েছে৷
