আজকাল ওয়েবডেস্ক: জম্মু ও কাশ্মীরে সম্প্রতি ভয়াবহ দু্র্ঘটনা। সাম্বা জেলায় ঘটনাটি ঘটে। বৃহস্পতিবার এই মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় এক জন নিহত হন এবং ৩৯ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনাটি ঘটে জম্মু-পাঠানকোট জাতীয় সড়কের জাটওয়াল এলাকায়। খবর অনুযায়ী, একটি তীর্থযাত্রীবাহী বাস হাইওয়ে থেকে ছিটকে আচমকা একটি খাদে পড়ে যায়।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, বাসটি উত্তরপ্রদেশ থেকে কটরার উদ্দেশে যাত্রা করছিল, যেখানে মা বৈষ্ণো দেবীর গুহামন্দির অবস্থিত। মাঝপথে বাসের একটি চাকা আচমকা ফেটে যায়। এর জেরে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। ফলে বাসটি সেতুর কাছে রাস্তা থেকে সরে একটি গভীর খাদে গিয়ে পড়ে।
এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ৪৫ বছর বয়সী ইকবাল সিং নিহত হন। সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি উত্তরপ্রদেশের আমরোহা জেলার বাসিন্দা। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধার কাজ শুরু হয়। ঘটনায় যাঁরা আহত হয়েছিলেন তাঁদের সাম্বার স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে সাতজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সেখান থেকে এইমস বিজয়পুরে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
দুর্ঘটনাস্থলে পুলিশ ও উদ্ধারকারী দল দ্রুত পৌঁছানোর ফলে বড় ধরনের প্রাণহানি এড়ানো সম্ভব হয়েছে বলে জানা যায়। আহতদের চিকিৎসার জন্য সবরকম ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে প্রশাসন। বর্তমানে দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরেই জম্মু ও কাশ্মীরের রামবান জেলায় এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটে। খবর মারফত, জেলার উখরাল পোগল পারিস্তান এলাকার সেনাবাথির কাছে একটি যাত্রীবাহী প্রাইভেট গাড়ি রাস্তা থেকে পিছলে গভীর খাদে পড়ে যায়। দুর্ঘটনার জেরে গাড়িটি প্রায় ৬০০ ফুট গভীর এক পাহাড়ি খাদে ছিটকে পড়ে। ঘটনাস্থলেই ১ জন নিহত হন। পরে আহত অবস্থায় হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার পথে আরও ৪ জনের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় একজন এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার জেরে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় মাত্র বছর ২০ এর তরুণ তৌকির আহমেদের। বাকিরা- মহম্মদ রফিক (৪০),আব্দুল লতিফ (৪০), আজাজ আহমেদ (৪০)। গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করা হলেও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই তাঁদের মৃত্যু হয়। এছাড়াও ইয়াওয়ার আহমেদ ও শাকিল আহমেদ নামে আরও দুই ব্যক্তি গুরুতর আহত হন। বর্তমানে তাঁরা অনন্তনাগের সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় প্রশাসন ও উদ্ধারকারী দল রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। আহতদের উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যায় তারা। দুর্ঘটনাটি কেন ঘটল, তা নিয়ে এখনও তদন্ত চলছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, খারাপ রাস্তার অবস্থা এবং চালকের আচমকা নিয়ন্ত্রণ হারানোই দুর্ঘটনার মূল কারণ।
স্বাভাবিকভাবেই দুর্ঘটনার জেরে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তাঁদের দাবি, পাহাড়ি রাস্তায় নিয়মিত মেরামত, নিরাপত্তা ব্যারিকেড ও গার্ডরেল বসানো জরুরি। এমন দুর্ঘটনা বহুবার ঘটেছে, কিন্তু সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের উদ্যোগ এখনও যথেষ্ট নয়। একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন,'এই সড়কে একাধিকবার দুর্ঘটনা ঘটেছে। কেবল দুর্ঘটনার পর শোক প্রকাশ করা হয়, কিন্তু প্রকৃত নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।”
