আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভোর সাড়ে পাঁচটা। বাড়ি থেকে প্রায় ৩০০ মিটার দূরে, রেল লাইনের দিকে হাঁটতে গিয়েছিলেন তিনজন। এতদূর পর্যন্ত সব ঠিক থাকলেও, কিছুক্ষণ পরেই উদ্ধার হল তিনজনের দেহ। 

ঘটনাস্থল অসম। সে রাজ্যের বামুনিগাঁও রেলওয়ে স্টেশনের ধারে একসঙ্গে তিন মহিলার দেহ উদ্ধারের ঘটনায় প্রবল আতঙ্ক, চাঞ্চল্য এলাকায়। জানা গিয়েছে, ভোর ৫:২৫ মিনিটের দিকে, দুটি ট্রেন - উজানিমুখা পুরী এক্সপ্রেস এবং একটি এনএমজি পণ্যবাহী ট্রেন একসঙ্গে ওই এলাকায় পেরোচ্ছিল। জানা গিয়েছে, মহিলারা সকালে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন। একে অন্যের সঙ্গে কথোপকথনে ব্যস্ত থাকায় সম্ভবত ট্রেনের হর্ন শুনতে পাননি বলে মনে করা হচ্ছে প্রাথমিকভাবে। রেললাইন পেরোচ্ছিলেন তাঁরা। আর তখনই পুরী এক্সপ্রেসের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। 

উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জনসাধারণকে রেললাইনের কাছে না যাওয়ার বা অনুমোদিত স্থান ছাড়া রেললাইন পার না হওয়ার জন্য বারবার নির্দেশিকা দিয়েছে, অনুরোধও করেছে। তবে তার পরেও অনেকেই বার বার ট্রেন লাইনে নেমেই একদিক থেকে অন্যদিকে যাতায়াত করে থাকেন। যদিও স্থানীয়দের বক্তব্য, পুরী এক্সপ্রেস হর্ন বাজায়নি। তাই ওই তিনজনেই বুঝতে পারেননি ট্রেন আসছে। নিহতদের নাম রুমি দাস (৫৫), কোরাবি মালু (৬০) এবং উত্তরা দাস (৬০)।

আরও পড়ুন: মোদির এক ঘোষণাতেই কমে যাচ্ছে গাড়ি-মোবাইল-কম্পিউটারের দাম! কতটা সস্তা হতে পারে প্রিয় জিনিস? জানুন এখনই...

দিন কয়েক আগেই, উত্তরপ্রদেশে রেল লাইনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হন দুই বোন। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে ওই তথ্য সামনে আসে। জানা যায়,  সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে তাঁরা বাড়ি থেকে একসঙ্গে বেরোন। বেরোনোর সময় পরিবারের সদস্যদের জানান যে তাঁরা বাজারে যাচ্ছেন বই কিনতে। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই খবর আসে, তাঁরা ট্রেন লাইনের দিকে চলে গিয়েছেন। এরপর মাখনপুর রেল ইয়ার্ডের কাছাকাছি একটি স্থানে দুই বোন একসঙ্গে রেললাইনে দাঁড়িয়ে পড়েন।

জানা যায়, ঠিক সেই সময় হাওড়াগামী নেতাজি এক্সপ্রেস ট্রেনটি কালকা থেকে আসছিল। এমনকি ট্রেন চালক বারবার হর্ন বাজিয়ে সতর্ক করার চেষ্টা করলেও, তাঁরা লাইন ছাড়েননি। দুই বোন একে অপরের হাত ধরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই তাঁদের মৃত্যু হয়। ধাক্কার তীব্রতায় তাঁদের দেহ ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। দুর্ঘটনার পর ট্রেনটি প্রায় ১০ মিনিট থেমে থাকে। পরে রেল পুলিশ (GRP) ও রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স (RPF) দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তারা মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য স্থানীয় মেডিক্যাল কলেজে পাঠায়। 

পরবর্তীতে রেল পুলিশের টিম রাশ্মির ভাই মোহিত যাদবের মাধ্যমে তাঁদের পরিচয় নিশ্চিত করে। মোহিত জানান, তাঁরা শুধু বলেছিলেন বাজারে যাবেন, কিন্তু কীভাবে বা কেন তাঁরা রেললাইনের দিকে গেলেন, তা নিয়ে পরিবারের কেউ কিছু জানেন না। মোহিত দাবি করেন যে বাড়িতে কোনও ঝগড়া বা অশান্তির ঘটনা ঘটেনি। ঘটনার পর, স্থানীয়রা জানান, দুই তরুণী অত্যন্ত শান্ত প্রকৃতির ছিলেন। তাঁদের ব্যবহার খুবই শান্ত ও ভদ্র। এহেন চরম সিদ্ধান্ত তাঁরা কেন নিলেন, তা কেউই বুঝে উঠতে পারছেন না। কেউ কেউ মনে করছেন, হয়তো পারিবারিক বা ব্যক্তিগত কোনও চাপ ছিল, যা নিয়ে তাঁরা কাউকে কিছু বলেনি।